যে কারণে চাঙ্গা ব্যাংক খাত
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: দেশের শেয়ারবাজার গত কয়েক কার্যদিবস ধরে বেশ চাঙ্গা ভাব দেখা দিয়েছে। আর এ চাঙ্গা বাজারে বিনিয়োগকারীরদের নজর সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা গেছে ব্যাংক খাতের উপর। আজ লেনদেন শুরু থেকেই ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার ক্রয় করা নিয়ে হুলস্থুল পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। যার প্রভাবে ডিএসইর প্রধান সূচক ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৯২১ পয়েন্টে অবস্থান করে নতুন রেকর্ড গড়ে। ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি সূচকটি চালু হওয়ার পর এটিই সর্বোচ্চ অবস্থান। যা অর্জনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল ব্যাংক খাতের।
জানা যায়, সম্প্রতি ব্যাংকগুলোর হাফ ইয়ালিং বা অর্ধবার্ষিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার প্রতি আয় বেড়েছে। আর বেশিরভাগ ব্যাংকের ইপিএস বৃদ্ধিকে বাজারের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলো ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। এই সেক্টরের ভালো বা মন্দের ওপর পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা অনেকাংশে নির্ভরশীল।
আরো একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে অনেক ব্যাংকের পরিচালকদের এককভাবে দুই শতাংশ শেয়ার নেই। তারা শেয়ার কিনছেন। এছাড়া অনেক পরিচালক অধিক মুনাফার আশায় নামে-বেনামে কম দরে শেয়ার কিনে নিচ্ছেন। যে কারণে ব্যাংক সেক্টরের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
তারা আরো বলেন, ব্যাংকের আমানতের সুদ হার কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। আর সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মূলধন বাড়িয়ে নতুন বিনিয়োগের সুযোগ পাচ্ছে ব্যাংকগুলো। তাছাড়া ব্যাংক খাতের শেয়ারের দাম কম থাকায় দেশি বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার ক্রয় অংশগ্রহণ করছেন। এছাড়া গত বছরের তুলনায় ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রবৃদ্ধি ও খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল বেশি হওয়ার কারণে মুনাফা বেড়েছে। আর এর ফলে ভালো লাভের প্রত্যাশায় বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকের শেয়ারে ঝুঁকছেন।
ডিএসই তথ্যানুযায়ী, ব্যাংক খাতে থাকা ৩০ কোম্পানির মধ্যে আজ রোববার সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের। এদিন ব্যাংকটির শেয়ার দর ১২ টাকা বেড়েছে। এরপরেই রয়েছে রূপালী ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির শেয়ার দর যথাক্রমে ৪.২০ টাকা টাকা বেড়ে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে।
দর বাড়া অন্যান্য ব্যাংকের মধ্যে এবি ব্যাংকের ০.৫০ টাকা, আল-আরাফাহ ব্যাংকের ০.৬০ টাকা, ব্যাংক এশিয়ার ০.৩০ টাকা, ব্রাক ব্যাংকের ০.৭০ টাকা, সিটি ব্যাংকের ০.৫০ টাকা, ঢাকা ব্যাংকের ০.৬০ টাকা, ইর্স্টাণ ব্যাংকের ১.৪০ টাকা, এক্সিম ব্যাংকের ০.৩০ টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটজ ইসলামী ব্যাংকের ০.৩০ টাকা, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ০.১০ টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকের ০.৮০ টাকা, ইসলামী ব্যাংকের ০.৫০ টাকা, যমুনা ব্যাংকের ০.৭০ টাকা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ০.৩০ টাকা, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ০.৪০ টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের ০.১০ টাকা, এনসিসি ব্যাংকের ০.৩০ টাকা, ওয়ান ব্যাংকের ০.৪০ টাকা, প্রিমিয়াম ব্যাংকের ০.৩০ টাকা, প্রাইম ব্যাংকের ০.৬০ টাকা, পূবালী ব্যাংকের ২.৪০ টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ০.৯০ টাকা, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ০.৩০ টাকা, সাউথইস্ট ব্যাংকের ০.২০ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ০.১০ টাকা, ট্রাস্ট ব্যাংকের ১.১০ টাকা, ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংকের ০.৪০ টাকা এবং উত্তরা ব্যাংকের ২.৮০ টাকা দর বেড়েছে।
শেয়ারবাজরনিউজ/এম.আর