বিদেশি কোম্পানির তালিকাভুক্তিতে যে প্রস্তাব দিয়েছে আইসিবি
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারের গভীরতা ও ভাল শেয়ারের যোগান বাড়াতে বহুজাতিক কোম্পানির তালিকাভুক্তিকে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।
বহুজাতিক কোম্পানির তালিকাভুক্তিতে করণীয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডারদের মতামত জানতে চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি চিঠির মাধ্যম নিজেদের মতামত জানিয়েছে আইসিবি।
আইসিবি জানায়, বহুজাতিক কোম্পানির তালিকাভুক্তিতে প্রথমেই আইনি বাধ্যবাধকতা জরুরি। অর্থাৎ বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে হবে। এছাড়া এসব কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেয়া প্রয়োজন। পুঁজিবাজারে ডিরেক্ট লিস্টিং এবং প্রাথমিক গণ প্রস্তাব (আইপিও) উভয় পদ্ধতিতেই তালিকাভুক্ত করার সুযোগ দেয়া যায়।
আইসিবি’র চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, দেশে ব্যবসারত ৪০০টি বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১৩টি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে। ডিএসই’র মোট বাজার মূলধনের ২৫ শতাংশ এ ১৩ কোম্পানির দখলে রয়েছে। পাশাপাশি মাত্র ৮টি সরকারি কোম্পানি পুঁজিবাজারে রয়েছে। সরকারি কোম্পানিগুলোকেও বাজারে আনলে ভাল শেয়ারের সংখ্যা বাড়বে।
চিঠিতে বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে শেভরন, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লি:, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, এইচএসবিসি, সিআইটিআই ব্যাংক এনএ, সিমেনস, এরকিসন, মোবিল, নেসলে, এভারি ডেনিসন, ইয়নগং করপোরেশন, নোভার্টিস বাংলাদেশ, কোটস বাংলাদেশ লি:, গ্রে অ্যাডভার্টাইজিং লি:, এশিয়ান পেইন্টস, এসিএস টেক্সটাইলস, এমসিসি ট্রান্সপোর্ট, হোটেল আমারি, নিউভিশন সলিউশন লি:, আরএকে পেইন্টস এবং সিপি বাংলাদেশ সহ অন্যগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আইসিবি জানায়, বহুজাতিক কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে বর্তমানে কোন আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। তাই এক্ষেত্রে আইন প্রণোয়ন করা জরুরি।
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ভাল ব্যবসা করছে। বিশেষ করে তালিকাভুক্ত বিদেশি কোম্পানিগুলো প্রতি বছর ভাল ব্যবসার পাশাপাশি শেয়ারহোল্ডারদের ভাল ডিভিডেন্ড দিচ্ছে। তাই এসব কোম্পানিরন শেয়ারে বিনিয়োগকারীর আগ্রহ বেশি।
তাদের মতে, বর্তমান বাজারে ভাল শেয়ারের সংখ্যা কম। তাই বিনিয়োগকারীরা চাইলেও অনেকে ভাল শেয়ারের অভাবে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে পারেন না। পরিণতিতে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা তৈরি হচ্ছে না। তাই ভাল কোম্পানি বিশেষ করে বিদেশি কোম্পানির তালিকাভুক্তি সম্ভব হলে এমন অবস্থা অনেকাংশে কেটে যাবে। পাশাপাশি সরকারি কোম্পানিগুলোকেও তালিকাভুক্ত করা হলে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা বাড়বে।
এর আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত একাধিক বৈঠকে সরকারি ও বহুজাতিক কোম্পানির তালিকাভুক্তিতে জোর দেন। গত জুলাই মাসে এ বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা তৈরির জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। তারই অংশ হিসেবে মন্ত্রণালয় সহ স্টেকহোল্ডাররা সরকারি ও বহুজাতিক কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তালিকাভুক্তির বিষয়ে একাধিক বৈঠক করেন।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ