৪ খাতের দাপটে চাঙ্গা বাজার: বড় খেলোয়াড় ব্যাংক
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের উভয় শেয়ারবাজারে সূচকের উর্ধ্বমুখী প্রবণতায় শেষ হয়েছে লেনদেন। এদিন শুরু থেকেই ৪ খাতের ক্রয় প্রেসারে টানা বাড়তে থাকে সূচক। খাতগুলো হলোঃ ব্যাংক, সিরামিক, খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক এবং চামড়া। রোববার সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। আর টাকার অংকে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। আজ দিন শেষে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯৩০ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আজ লেনদেনের শুরু থেকেই ব্যাংক খাতে বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক আগ্রহ দেখা যায়। দীর্ঘ দিনের অবহেলিত ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলো নড়াচড়ার কারণেই বাজারে উত্থান ঘটছে। কেননা অনেক দিন ধরেই এ খাতের পিই রেশিও ৯ এর নিচে ছিল। যার কারণ হচ্ছে ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো যে পরিমাণ ডিভিডেন্ড দিচ্ছে শেয়ারের দাম সে তুলনায় অনেক কম। বর্তমানে ১৯টি খাতের মধ্যে সবচেয়ে কম পিই রেশিও ব্যাংকিং খাতের। পিই রেশিও যত কম ওই খাতের কোম্পানিতে বিনিয়োগও তত কম ঝুঁকিপূর্ণ। সেই হিসেবে বর্তমানে এ খাতের কোম্পানিগুলোই সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকের শেয়ারের দিকে ঝুঁকছেন। তাছাড়া কোম্পানি হিসেবে ব্যাংকিং খাতের কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনের উপর বিনিয়োগকারীদের আস্থাও অন্য কোম্পানিগুলোর তুলনায় বেশি।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে সবগুলো খাতের মধ্যে সবচেয়ে কম পিই রেশিও ব্যাংকিং খাতে। ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো শেয়ারের দাম সে তুলনায় অনেক কম। আর এ কারণেই ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। এছাড়াও ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসির) বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণেও থাকে। এতে ব্যাংকগুলোর পক্ষে অনিয়ম করা বেশ কঠিন। তবে ব্যাংকিং খাতের গড় লভ্যাংশ বা গড় পিই রেশিও দেখে এ খাতের শেয়ারে বিনিয়োগ করা ঠিক হবে না। বরং নির্দিষ্ট কোম্পানির লভ্যাংশ ও পিই রেশিও দেখে বিনিয়োগ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।
দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫৯১৫ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৩০৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ২১১৮ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৩০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫১টির, কমেছে ১৪৪টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টি কোম্পানির শেয়ার দর। যা টাকায় লেনদেন হয়েছে ৯৩০ কোটি ২২ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
এর আগে বৃহস্পতিবার ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৫৮৮৫ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৩০৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ২১১১ পয়েন্টে। ওইদিন লেনদেন হয় ৭৮২ কোটি ১০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১৪৮ কোটি ১১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
এদিকে দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্রড ইনডেক্স ৫২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১১ হাজার ৮৮ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৫০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৫টির কমেছে ১০৬টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির। যা টাকায় লেনদেন হয়েছে ৫২ কোটি ৬২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু