ওটিসি থেকে বাদ পড়বে ৩৪ কোম্পানি
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: অস্তিত্ব নেই বা স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখে না ওভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসিভুক্ত এমনসব কোম্পানিকে বাদ দিয়ে এই বাজারকে পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
ওটিসিকে পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে গত রোববার একটি কমিটি করেছে। কমিটিকে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে বিদ্যমান নিয়ম-কানুনের প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিবর্তনসহ পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বর্তমানে ডিএসইর ওটিসিতে ৬৬ কোম্পানি তালিকাভুক্ত আছে। স্টক এক্সচেঞ্জের একটি সূত্র জানিয়েছে, এর মধ্যে মাত্র ৩২টি বিদ্যমান আইন অনুসরণ করে। এই ৩২ টিকেই শুধু ওটিসিতে রেখে বাজার পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অর্থাৎ ওটিসি থেকে ৩৪ কোম্পানি বাদ পড়ে যাবে, যেগুলোর বড় অংশেরই কোনো অস্তিত্ব নেই।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসি বাজারকে কার্যকর করতে বিদ্যমান আইনের সংশোধনের জন্য ‘ডেভেলপমেন্ট ওটিসি মার্কেট অব বাংলাদেশ’ নামে একটি কমিটি করা হয়েছে। তিন সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক বিএসইসির পরিচালক মো. মনসুর রহমান। অপর দুই সদস্য হলেন উপপরিচালক শেখ মো. লুৎফর কবীর ও মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
গত মার্চে ওটিসি বাজারকে কার্যকর করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে বিদ্যমান আইনের সংশোধন প্রস্তাব দিয়েছিল ডিএসই। এর পর কমিশনও ওটিসিকে পুনর্গঠনে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। কমিশন সূত্র জানিয়েছে, নতুন রূপে ওটিসি বাজারকে সাজানো হবে। এতে মূল শেয়ারবাজারের মতো ওয়েববেজড ইলেট্রনিক ব্যবস্থায় লেনদেনের সুযোগ দেওয়া হবে। এই বাজারে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া ও বিধিবিধান তুলনামূলক সহজ হবে।
সূত্র আরও জানায়, বাজারকে কার্যকর করতে ওপেন এন্ড বা বেমেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডও এ প্লাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে কেনাবেচার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। বর্তমানে এ ধরনের ২৬ ফান্ডের আকার অন্তত নয় হাজার কোটি টাকা। এখন ফান্ডগুলোর সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি বা এদের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় থেকে সরাসরি কেনাবেচা করতে হয়, যা বেশ জটিল। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিনিয়োগকারীরা এ ফান্ডে বিনিয়োগের সুযোগ পান না। নতুন ব্যবস্থা বেমেয়াদি ফান্ডকে জনপ্রিয় করবে।
এ ছাড়া তালিকাভুক্ত নয়, এমন কোম্পানির উদ্যোক্তা, পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডাররা ১১৭ ফরম পূরণ করে যে প্রক্রিয়ায় শেয়ার বিক্রি বা হস্তান্তর করেন, সেটিও ওটিসিতে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এসব কোম্পানিকেও শেয়ারবাজারমুখী করতে এ ধরনের শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ ওটিসিতে রাখার প্রস্তাব করেছে ডিএসই।
ডিএসইর কর্মকর্তারা জানান, এ ধরনের কোম্পানির মালিকানা বা শেয়ার কেনাবেচায় স্ট্যাম্প ফি বাবদ (দেড় শতাংশ) যে অর্থ খরচ হয়, ওটিসির মাধ্যমে লেনদেন হলে তা এক-তৃতীয়াংশে নেমে আসবে। শুধু ব্রোকারেজ কমিশন (প্রতি ১০০ টাকায় সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা) দিয়েই শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন তারা। তবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে ওটিসিতে তালিকাভুক্ত হতে হবে। এ জন্য আনুষঙ্গিক খরচ কম রাখা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিবন্ধিত যেসব কোম্পানি এখনই মূল শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চায় না, তবে
বিশেষ প্রয়োজনে শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহ করতে চায় বা কেউ নিজের শেয়ার বেচে দিতে চায়, তাদেরও শেয়ারবাজার ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ