এবার কোটি টাকার পুরষ্কার
শেয়ারবাজার রিপোর্টঃ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের পর পরই দেশের মাটিতে পাকিস্থানের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় সিরিজ জয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের স্মরণকালের সেরা সময় চলছে এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। আর এমন বিধ্বংসী পারফর্মেন্সের যথাযথ পুরষ্কারও এবার পেতে যাচ্ছে মাশরাফি বাহিনী। আর এবারের পুরষ্কারের অংকটা প্রায় ৮ কোটি টাকা।
বিজয়ী বীরদের গতকাল গণভবনে সংবর্ধনা দেয়ার সময় এমনই আশ্বাষ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে খেলোয়াড়দের জন্য প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকার আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি গাড়ি-বাড়িরও আশ্বাস দেন শেখ হাসিনা।
বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সে পুরস্কার হিসেবে খেলোয়াড়রা সমর্থকদের ভালবাসায় সিক্ত হয়েছেন দেশে ফিরেই। চোখ ধাঁধানো পারফর্ম্যান্সে ওয়ানডে সিরিজ এবং একমাত্র টি-টোয়েন্টিতেও পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা ক্রিকেট দলকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবর্ধনা দেবেন- এমন সিদ্ধান্ত ছিল আগেই। গতকাল দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সে সংবর্ধনায় বাড়তি রঙ ছড়িয়েছে পাকিস্তানের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় সাফল্য। শুক্রবার রাতে টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দেয়ার পর মাঠে মাশরাফিকে ট্রফি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল দিলেন সংবর্ধনা। সেখানে খেলোয়াড়দের অনুপ্রেরণা, উপদেশ, খেলার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ আগামী সিরিজগুলোতে পারফর্ম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার তাগিদও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ধন্যবাদ দিয়েছেন টিমের সবাইকে। খেলোয়াড়, কোচ, অফিসিয়াল, বিসিবি কর্মকর্তা-এমনকি নির্বাচকদের আলাদাভাবে ধন্যবাদ দিতেও ভুলেননি প্রধানমন্ত্রী।
এর পরপরই ক্রিকেটারদের জন্য ঘোষণা করলেন মোটা অঙ্কের পুরস্কার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বকাপে আমাদের সোনার ছেলেরা প্রকৃত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতোই খেলেছে। আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। তারা আমাদের দেশের গৌরব বাড়িয়েছে। আমার হাতে একটি তালিকা দেয়া হয়েছে যেখানে আছে বিশ্বকাপে উইনিং বোনাস হিসেবে খেলোয়াড়দের দেয়া হবে ১ কোটি, আইসিসি থেকে পাওয়া যাবে ৩ কোটি, বিসিবি থেকে দেবে ১ কোটি ৩০ লাখ। বিশ্বকাপে ভাল খেলার জন্য ১ কোটি এবং পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশ আর টি-টোয়েন্টি জয়ের জন্য আরও ১ কোটি টাকা দেবো আমি। বেক্সিমকো থেকেও দেয়া হবে ১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকার মতো খেলোয়াড়দের দেয়া হবে।’
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগে খেলোয়াড়দের গাড়ি দেয়া হয়েছিল। তখন যারা পাননি এবং যারা দলে নতুন এসেছেন, তাদের জন্যও গাড়ির ব্যবস্থা করা হবে। খেলোয়াড়দের আবাসন নিয়েও ভাবছি। জায়গা বরাদ্দ দিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি। জাতীয় দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে অন্তত দুটো করে ফ্ল্যাট দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। শুধু তাই নয়, অবসরে যাওয়ার পরও খেলোয়াড়দের আর্থিক সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে একটি কল্যাণ ফান্ড গঠনের পরিকল্পনাও আছে আমাদের।
ক্রিকেটের জন্য আরও স্টেডিয়াম তৈরিসহ দেশে ক্রীড়া অবকাঠামো বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা পূর্বাচলে বহুমুখী ব্যবহারের জন্য একটি অত্যাধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। দেশের প্রতিটি উপজেলায় স্টেডিয়াম হবে। মানিকগঞ্জে ক্রিকেট স্টেডিয়াম হবে। মাওয়ায় পদ্মাপাড়ে আধুনিক অলিম্পিক কমপ্লেক্স তৈরি করবো আমরা। এছাড়া প্রতিটি বিভাগে বিকেএসপির শাখা করা হবে। খেলাধুলার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা আমরা খেলোয়াড়দের করে দেবো’।
অনুষ্ঠানের শেষে ক্রিকেটারদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীতে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ আসছে। জয়-পরাজেয় বড় কথা নয়, তোমাদের ভাল খেলতে হবে। বিশ্বকাপ এবং পাকিস্তান সিরিজে আমি দেখেছি ক্রিকেটারদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস অটুট। এভাবেই খেলতে হবে। অনেকে বলেছিল আমরা টি-টোয়েন্টি ভাল খেলতে পারি না। কিন্তু পাকিস্তানকে হারিয়ে প্রমাণ করেছো আমরাও পারি। আশা করি টেস্টেও তোমরা ভাল খেলবে। ’
শেয়ারবাজারনিউজ/ও