আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

এসএসসি-এইচএসসিতে সব বোর্ডে অভিন্ন প্রশ্নপত্র

HSCশেয়ারবাজার ডেস্ক: আগামী বছর থেকে সবগুলো সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা অভিন্ন প্রশ্নপত্রে নেওয়া হবে। বোর্ডগুলোর শিক্ষার্থীদের ফলাফলের তারতম্য দূর করা এবং উচ্চশিক্ষায় ভর্তিতে পরীক্ষার্থীদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গত মঙ্গলবার আন্তবোর্ড সমন্বয় উপকমিটির সভাপতি হিসেবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডর চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। চিঠিতে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো বিবেচনায় নিয়ে তা কমানোর ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান গতকাল বুধবার চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিলে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে ভারসাম্য আসবে। ফলে উচ্চশিক্ষায় ভর্তিতে শিক্ষার্থীরা সুফল পাবে।

অবশ্য এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে ভিন্নমতও রয়েছে। রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলেন, বইয়ের সিলেবাস তো সারা দেশে একই। যদি শিক্ষার্থীরা সিলেবাস অনুযায়ী পড়াশোনা শেষ করে, তাহলে যেভাবেই প্রশ্ন করা হোক, তা পারার কথা। আর উত্তরপত্র আলাদা শিক্ষকেরা মূল্যায়ন করেন। এতে একই মান বজায় থাকবে কি না, তা বলা কঠিন।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, সৃজনশীল প্রশ্নপত্র চালুর পর সৃজনশীলের বিষয়গুলোর পরীক্ষা অভিন্ন প্রশ্নপত্রেই নেওয়া হতো। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে ২০১৪ সালের পর থেকে বোর্ডগুলো আলাদা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিচ্ছে। এতে শিক্ষা বোর্ডগুলোর ফলাফলে বিস্তর ফারাক হচ্ছে। যেমন এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে ৩৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়েছেন। এ কারণে ওই বোর্ডে পাসের হার ৫০ শতাংশের নিচে আসে। কমবেশি প্রতিবছর এমন ঘটনা ঘটছে। এতে উচ্চশিক্ষায় ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি হচ্ছে। কারণ ভর্তিতে এসএসসি ও এইচএসসির ফল বড় ভূমিকা রাখে।

অবশ্য অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হলে দেশের কোনো এক জায়গায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে তা সারা দেশেই ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন কোনো কোনো শিক্ষক। আলাদা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হওয়ায় কোনো বোর্ডের প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে তার ব্যবস্থা নেওয়া সহজ।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ বলেন, সবকিছু বিবেচনা করেই অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে মূল্যায়নে ভারসাম্য আসাসহ আরও কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে।

নতুন হওয়া ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডসহ বর্তমানে দেশে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড রয়েছে। তবে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে লোকবল নিয়োগ না হওয়াসহ প্রস্তুতির অভাবে আগামী এসএসসি পরীক্ষা এই বোর্ডের অধীনে নেওয়া অনিশ্চিত।

স্থানীয়ভাবে প্রশ্ন ছাপিয়ে পরীক্ষা অনিশ্চিত

প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে আগামী বছর থেকে স্থানীয় পর্যায়ে তা ছাপিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বোর্ডের দুজন কর্মকর্তা বলেন, এ জন্য যে প্রস্তুতির প্রয়োজন, তা এখনো নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাঁরা বলেছেন, পরীক্ষামূলকভাবে চলতি বছর যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীন বিদ্যালয়গুলোর নির্বাচনী পরীক্ষা এই প্রক্রিয়ায় নেওয়া হবে। এর ফলাফল দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.