আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৯ অক্টোবর ২০১৭, সোমবার |

kidarkar

ব্লু হোয়েল গেমসের মাধ্যমে আত্মহত্যার খবর ভুয়া: প্রচারণার জন্যই এই কৌশল

Blue-750x422শেয়ারবাজার রিপোর্ট: গোটা বিশ্বজুড়েই ব্লু হোয়েল এখন এক আতঙ্কিত নাম। বাংলাদেশেও এর প্রভাব বিস্তার করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে নানা ট্রলও বানানো শুরু হয়েছে। বিশেষ করে রাজধানীর সেন্ট্রাল রোডের একটি ফ্ল্যাটে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুব্রত বর্ধনের মেয়ে অপূর্বা বর্ধনের আত্মহত্যার পরপরই বাংলাদেশে ব্লু হোয়েল গেম নিয়ে আলোচনা তীব্র হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, অপূর্বা বর্ধন ব্লু হোয়েল গেমে আসক্ত হয়েই আত্মহত্যা করেছে। ভারতেও এই ব্লু হোয়েল নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে।

কিন্তু ব্লু হোয়েল গেমের আসল রহস্যই বা কি। বলা হয় যে,  এই গেমে ৫০তম স্টেজে উপনীত হলে আত্মহত্যা করতে হয়। তার আগে ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কেটে তিমির ছবি অঙ্কন করতে হয়। কিন্তু অপূর্বা বর্ধনের সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেলেও এরকম কোন কিছুই তার শরীরে পাওয়া যায়নি। এমনকি মায়ের যে ফোনটি সে ব্যবহার করতো সেটিও খতিয়ে দেখে কিছু পায়নি পুলিশ।  এছাড়া মেয়েটির ফুফু স্পষ্ট জানিয়েছেন যে তিনি নিজের হাতে মেয়েটাকে শেষ স্নান করিয়েছে। ওর গায়ে সামান্য কোন কাঁটা-ছেঁড়ার দাগও ছিল না, ছিল না কোন ট্যাটু। ওর ফোন ঘেঁটেও পাই নি এমন কোন প্রমাণ যার জের ধরে বলা যায় ও ব্লু হোয়েল খেলতে শুরু করেছিল। যে কথাটা আজ ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে, সে কথাটা নিতান্তই অবান্তর। ওর আত্মহত্যার পেছনের কারণটা আর যাই হোক, ব্লু হোয়েল নয়।

এদিকে ভারতের ইন্ডিয়া টাইমসে সম্প্রতি ব্লু হোয়েলের সত্যতা প্রকাশ করেছে। কোচির এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার বেশ জোর গলাতেই জানিয়ে দিয়েছেন ‘ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ’ বলে আদতে কোনও গেমের অস্তিত্বই নেই। ইন্টারনেটে যথেষ্ট খোঁজাখুঁজি করেও এরকম গেম পাওয়া যায়নি বলে শুক্রবার জানিয়েছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ এবং সাইবার সিকিউরিটির নোডাল অফিসার মনোজ আব্রাহাম। সাইবার বিশেষজ্ঞরা ১৫ দিনেরও সময় ধরে তল্লাশি চালিয়েও এরকম কোনও অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের খোঁজ পাননি, যে বা যারা গেমারদের উল্টোপাল্টা টাস্কের নির্দেশ দেয়।

যে সব তরুণ-তরুণী ব্লু হোয়েল গেমের শিকার হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, তারা এমনিতে কোনও কারণ অবসাদে ভুগছিল এবং আত্মহত্যা করে বলে দাবি মনোজের। তাদের মোবাইল, ল্যাপটপ ঘেঁটেও এরকম কোনও গেমের সন্ধান পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। ‘Cyber Safety India. Org’-এর সিকিউরিটি লইয়ার প্যারি আফতাবের দাবি যে ব্লু হোয়েল গেমের নির্দেশে আত্মহত্যার যে খবর ছড়িয়েছে তার পুরোটাই ভুয়া।

এদিকে গুগলের প্লে স্টোরে ব্লু হোয়েল নাম দিয়ে সার্চ দিয়ে নীল তিমির ছবির আকৃতিতে একটি গেমস রয়েছে। সেটি নামিয়ে দেখা গেলো, সমুদ্রে তিমির নানা বিচরণ যেটি অন্যান্য গেমসের মতোই। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ব্লু হোয়েল গেমের মাধ্যমে আত্মহত্যার খবর ছড়ালে এটি দ্রুত প্রসার ঘটবে। সবাই আগ্রহী হয়ে গেমসটি খেলার চেষ্টা করবে। অর্থাৎ প্রচারণার জন্যই এই আত্মহত্যার নাটক সাজানো হচ্ছে।

শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.