জিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিএসইসিতে এনবিআরের চিঠি
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: দেশের শীর্ষ সেলফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের কর ফাঁকির অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষে নিম্ন আদালতের রায় দেয়ার পরও জিপি এনবিআরের দাবীকৃত অর্থের বিপরীতে কোনো প্রভিশন রাখছে না।
যেহেতু আইনী লড়াইয়ে হেরে গেলে বিশাল অঙ্কের টাকা জিপিকে ভ্যাট দিতে হবে তাই এখন থেকে কোম্পানিটিকে তাদের অ্যাকাউন্টে ২০.১৫ বিলিয়ন টাকা প্রভিশন রাখতে হবে। আর এ বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) চিঠি পাঠিয়েছে এনবিআর।
বুধবার ১৫ নভেম্বর এনবিআর এর বৃহৎ করদাতা ইউনিট (ভ্যাট) এর কমিশনার মো: মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.এম খায়রুল হোসেনের বরাবর পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, গ্রামীনফোন ২০১২-১৩ করবর্ষে আয় কম দেখিয়ে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছে বলে মনে করছে কর বিভাগ। অনুসন্ধানে কোম্পানিটির নেট বিক্রয়ে ভ্যাট রিটার্নের সঙ্গে আয়কর রিটার্নের অমিল পাওয়ায় রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি বেরিয়ে আসে।
গ্রামীণফোনের কর ফাঁকিসংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১২-১৩ করবর্ষে বৃহৎ করদাতা ইউনিটে (ভ্যাট) দাখিল করা রিটার্নের সঙ্গে কর বিভাগের কাছে দেয়া রিটার্নে ১ হাজার ৪১২ কোটি ৯৬ লাখ ৫০ হাজার ৫১২ টাকার আয় গোপন করা হয়। মূলত সিম বিক্রি, টকটাইম ও স্ক্র্যাচ কার্ড বিক্রি থেকে আয় কম দেখিয়ে কর কম দিয়েছে গ্রামীণফোন। এ তথ্য জালিয়াতির মধ্য দিয়ে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩৯৪ কোটি ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা।
এলটিইউ ভ্যাটের করদাতা গ্রামীণফোনের রিটার্নে দেয়া তথ্যানুযায়ী, গ্রামীণফোন একই বছরে ভ্যাট রিটার্নের চেয়ে আয়কর রিটার্নে বিক্রির ক্ষেত্রে নেট বিক্রি অনেক কম দেখায়। কোম্পানিটি কর বিভাগে জমা দেয়া হিসাব বিবরণী নোট নং ৩৪-এ নেট বিক্রি যা দেখায়, তা এলটিইউ ভ্যাট কার্যালয়ে দেয়া রিটার্নের সঙ্গে মিল নেই। ভ্যাট রিটার্নের চেয়ে আয়কর রিটার্নে নেট বিক্রি ১ হাজার ৪১২ কোটি ৯৬ লাখ ৫০ হাজার ৫১২ টাকা কম দেখায় গ্রামীণফোন। আয়কর রিটার্নে কম বিক্রয়লব্ধ আয় দেখানোর কারণে কোম্পানিটি আয়কর অধ্যাদেশের ধারা ৩৩(ই) অনুযায়ী জিপি রেশিওর ৫৭ দশমিক ৫১ শতাংশ মোট আয়ের সঙ্গে যোগ না করায় আয়কর ও সরল সুদ বাবদ ৩৯৪ কোটি ১৫ লাখ ৯২ হাজার ৯৪৭ টাকা কম ধার্য করা হয়।
আয়কর বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সিম বিক্রি, টকটাইম ও স্ক্র্যাচ কার্ড বিক্রিতে গ্রামীণফোন আয় কম দেখিয়েছে। এজন্য এনবিআর তাদের সব কাগজপত্র আবার যাচাই-বাছাই করে দেখা শুরু করেছে।
এ কারণে জিপি ও এনবিআর এর মধ্যে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট ও আপিলাট ডিভিশনে প্রায় ৮টি মামলা চলছে। ইতিমধ্যে নিম্ন আদালতের মামলার রায় এনবিআরের পক্ষে এসেছে। আর চলমান মামলাগুলো এনবিআরের পক্ষে আসলে জিপিকে বিপুল পরিমান রাজস্ব সরকারকে দিতে হবে।
তাই গ্রামীনফোনকে ২০.১৫ বিলিয়ন টাকা প্রভিশন রাখতে হবে। যেহেতু কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তাই এ বিষয়ে বিএসইসিকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে এনবিআর।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা