আজ: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৮ নভেম্বর ২০১৭, শনিবার |

kidarkar

ইপিএসের পরিবর্তনে কোম্পানিগুলোর ব্যাখ্যা নেই: বিএসইসির শক্ত ভূমিকা জরুরি

Editorialপুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর প্রান্তিক প্রতিবেদনে ইপিএস,এনএভিপিএস এবং এনওসিএফপিএসে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসলে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এরকম নির্দেশনা দিলেও আমলে নিচ্ছে বেশিরভাগ কোম্পানি। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রান্তিক প্রতিবেদনে কোনো কোনো কোম্পানির ২০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু এর কোনো ব্যাখ্যা কোম্পানিগুলো উপস্থাপন করেনি। কেন কোম্পানির ইপিএস কমে গেলো,কেন ক্যাশ ফ্লোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়লো,কেনইবা সম্পদ মূ‌ল্যে পরিবর্তন হলো এ প্রশ্নের উত্তর বিনিয়োগকারীদের জানার আগ্রহ থাকলেও কোম্পানিগুলোর দায়সারা আচরণ কাম্য নয়। কারণ একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার পূর্বে বা বিদ্যমান বিনিয়োগের ভবিষ্যত সম্পর্কে চিন্তা করতে উল্লেখিত বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যদিও প্রান্তিক প্রতিবেদনে কি পরিমান পরিবর্তন হলে বা কত শতাংশ পরিবর্তন হলে কোম্পানিগুলোকে ব্যাখ্যা দিতে হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা।  তবে ১০ শতাংশ বা তার বেশি পরিবর্তন হলেই কোম্পানিগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

হাইডেলবার্গ সিমেন্ট জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০১৭ প্রান্তিকে ইপিএস দেখিয়েছে ১.৭২ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময় ইপিএস ছিলো ৪.৪৭ টাকা। গত অর্থবছরের তুলনায় কোম্পানিটির ইপিএস ৬১.৫২ শতাংশ কমে গেছে। বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের জন্য উদ্বেগজনক হলেও কোম্পানিটি কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।

এই প্রান্তিকে ইসলামী ব্যাংকের ইপিএস কমেছে ৩৩ শতাংশ। এছাড়া ফার্ষ্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ইপিএস ৪৪ শতাংশ কমার পাশাপাশি শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ৭.১৪ টাকা নেগেটিভ থেকে ২২.৪৯ টাকা নেগেটিভ দেখানো হয়েছে। লাফার্জ সুরমার ইপিএস ৪৪ শতাংশ এবং বিডিকম অনলাইনের ইপিএস ৩৮.৪৬ শতাংশ কমে গেলেও কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। এরকম আরো বহু কোম্পানির উদাহরণ রয়েছে যারা প্রান্তিক প্রতিবেদনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের কোনো ব্যাখ্যা উপস্থাপন করছে না।

যদিও আন্তজার্তিকভাবে কোম্পানিগুলো আর্নিং কল করার মাধ্যমে তাদের প্রান্তিক প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক নিয়ে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে সেই প্রাকটিসটি নেই বললেই চলে। মাত্র ৪টি তালিকাভুক্ত কোম্পানি (আইডিএলসি ফাইন্যান্স, গ্রামীনফোন, ব্রাক ব্যাংক এবং ইউনাইটেড পাওয়ার) বাদে কেউই এখন পর্যন্ত আর্নিং কল করেনি। পুঁজিবাজারে এতো বাঘা বাঘা কোম্পানি থাকা স্বত্বেও প্রান্তিক প্রতিবেদনে  তাদের ব্যাখ্যা উপস্থাপন করতে কাপর্ণ্য দেখানোটা বিনিয়োগকারীদের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়।

তাই কোম্পানিগুলোর ইপিএস বা আর্থিক প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসলে যেনো ব্যাখ্যা প্রদান করা হয় সেজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার শক্ত ভূমিকা পালন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিবেদনে ঠিক কত শতাংশ পরিবর্তন হলে ব্যাখ্যা বাধ্যতামূলক সে বিষয়ে বিএসইসির সুস্পষ্ট নির্দেশনা জারি করা দরকার। এছাড়া করপোরেট গর্ভন্যান্স যেভাবে স্টেপ বাই স্টেপ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে,একইভাবে আর্নিং কলকেও বাধ্যতামূলক করা সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।

শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.