আজ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ইং, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৩ নভেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

পুঁজিবাজারের চার ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা

Bangladesh Bank

শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ব্যাংকিং খাতের ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) সংরক্ষণের পরিমাণও বেড়েছে। তবে  চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারেনি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৪ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ ব্যাংকগুলো হলো, রূপালী, ন্যাশনাল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। এ চার ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, রূপালী ব্যাংকের ১ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা; ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৮৬২ কোটি টাকা; প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১৬০ কোটি টাকা ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৮৯ কোটি টাকা প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের যে পরিমাণ ঋণ বিতরণ করে, তার বেশিরভাগই আমানতকারীদের অর্থ। এ কারণে ঋণ যেন ঝুঁকির মুখে না পড়ে, সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে। এর একটি হল প্রভিশন সংরক্ষণ।

নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের অশ্রেণিকৃত বা নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ থেকে ৫ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হয়। নিম্নমান বা সাব স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা কু-ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। ব্যাংকের আয় খাত থেকে অর্থ এনে এ প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয়। খেলাপি ঋণ বাড়লে আর সে অনুযায়ী ব্যাংকের আয় না হলে প্রভিশন ঘাটতি দেখা দেয়।

ব্যাংক কোম্পানি আইনানুযায়ী, প্রভিশন ঘাটতি থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কোনও লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার কারণেই ব্যংকিং খাতে প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ বেড়েছে। আর এ সময়ে যেসব ব্যাংক প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের মূলধন ঘাটতিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণ বিতরণের ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এর সঙ্গে ৪৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ অবলোপন যোগ করলে প্রকৃত খেলাপির পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা।

গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ ছিল ৬৫ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকারও বেশি। এই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত তিন মাসেই খেলাপির পরিমাণ বেড়েছে ৬ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে প্রভিশন সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল ৪৬ হাজার ৩১২ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলো প্রভিশন সংরক্ষণ করেছে ৩৯ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। ফলে ব্যাংক খাতের সামগ্রিক প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। আগের প্রান্তিক জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতের সামগ্রিক প্রভিশন ঘাটতি ছিল ৬ হাজার ১৯২ কোটি টাকা।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.