আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৭ ডিসেম্বর ২০১৭, রবিবার |

kidarkar

পরিবর্তন হচ্ছে বিডিং পদ্ধতি: নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত বিডিংয়ের অনুমতি বন্ধ

BSECশেয়ারবাজার রিপোর্ট: আইপিও’র বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক চলছে। এবার বিডিংয়ে দর প্রস্তাব পদ্ধতি নিয়ে চলছে সমালোচনা। এমন পরিস্থিতিতে আবারও আইনটি পরিবর্তন করবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এতে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা আর বিডিংয়ে ইচ্ছামতো দর প্রস্তাব করার সুযোগ পাবেনা।

বিএসইসির কর্মকর্তারা শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানান, বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ায় দর প্রস্তাবের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা জারি করা হবে। নীতিমালা করার আগে আর কোনো কোম্পানিকে বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ায় শেয়ারদর নির্ধারণের অনুমতি দেওয়া হবে না। তবে নতুন নীতিমালা করতে আইপিও বিধিমালার কোনো সংশোধন করার প্রয়োজন হবে না বলেও জানান কমিশন কর্মকর্তারা। নীতিমালায় কী থাকবে- এমন প্রশ্নে তারা বলেন, কারা দর প্রস্তাব প্রক্রিয়ায় যোগ্য হবে এবং কীভাবে শেয়ারদর নির্ধারণের যৌক্তিকতা উল্লেখ করতে হবে, তার জন্যই এ নীতিমালা।

তারা আরো বলেন, দর নির্ধারণ প্রক্রিয়া ইলেকট্রনিকই থাকবে। তবে চূড়ান্ত দর প্রস্তাবের পর সংশ্নিষ্ট প্রতিষ্ঠান লিখিতভাবে তার যৌক্তিকতা পাঠাবে। অবশ্য দর নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়ার সময়ও যোগ্যতা প্রমাণে কিছু তথ্য নেওয়া হবে। যারা যোগ্য হবে না, তারা এ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না।

কমিশন কর্মকর্তারা বলেন, বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ায় দর প্রস্তাব একটা যোগ্যতার বিষয়। এখানে মনগড়া দর প্রস্তাবের সুযোগ নেই। অতীতে আইনে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানগুলো (যেমন ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকার ডিলার, সম্পদ ব্যবস্থাপক, মিউচুয়াল ফান্ড বা আইনে বর্ণিত প্রতিষ্ঠান) কেবল নিবন্ধন করেই দর প্রস্তাব করতে পারত। এখানে যোগ্যতার বিষয় ছিল না। ভবিষ্যতে এ সুযোগ থাকবে না।

তারা জানান, যেসব প্রতিষ্ঠান দর প্রস্তাব করতে চাইবে, তাদের অবশ্যই এর জন্য দক্ষ ও যোগ্য জনবল থাকতে হবে। এটা শুধু কাগজে-কলমেই নয়, কোনো কোম্পানির বিদ্যমান সম্পদ, অতীত আর্থিক হিসাব পর্যালোচনার পাশাপাশি কোম্পানির ভবিষ্যৎ আর্থিক সাফল্য ও ব্যর্থতার প্রক্ষেপণ করার সক্ষমতা থাকতে হবে। শেয়ারদর নির্ধারণের নানা পদ্ধতি বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে।

বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়া হলো বিশ্বব্যাপী কোনো কোম্পানির যৌক্তিক শেয়ারদর খুঁজে পাওয়ার সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি। তবে বাংলাদেশে এর অপব্যবহার হয়েছে। এমনটা জানিয়ে বিএসইসির কর্মকর্তারা বলেন, কিছু ক্ষেত্রে মূলধন উত্তোলনে আগ্রহী কোম্পানি, সংশ্নিষ্ট ইস্যু ম্যানেজার এবং কতিপয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী পারস্পরিক যোগসাজশে আইপিও দর নির্ধারণ করেছে বলে বিশ্বাসযোগ্য কারণ রয়েছে।

গত অক্টোবরে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সরাসরি দর প্রস্তাবে বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ায় বসুন্ধরা পেপার মিলস কোম্পানির শেয়ারদর ৮০ টাকা নির্ধারিত হয়। যা কোম্পানি সংশ্নিষ্ট ও ইস্যু ম্যানেজারের কাছেও কিছুটা অপ্রত্যাশিত ছিল। যদিও এ দর নির্ধারণেও পারস্পরিক যোগসাজশের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ ওঠার পর বিএসইসির ইচ্ছা অনুযায়ী দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে তাদের প্রস্তাব করা দরের যৌক্তিকতা জানতে চেয়ে চিঠি দেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। ৮০ টাকা বা তার বেশি দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ চিঠি দেওয়া হয়।

গত ফেব্রুয়ারিতে আমরা নেটওয়ার্কসের শেয়ারদর ৩৯ টাকা নির্ধারণ নিয়েও পারস্পরিক যোগসাজশের অভিযোগ ওঠে। কারণ তৎকালীন আইন অনুযায়ী কোম্পানির শেয়ারদর ৩৯ টাকার বেশি হওয়ার সুযোগ ছিল না। হলে আইপিও বাতিল হতো। এ অবস্থায় ওই দর নির্ধারণ কি কাকতালীয় ছিল, নাকি পারস্পরিক যোগসাজশ ছিল, তা নিয়ে তদন্ত হয়। তবে এ বিষয়ে যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত আমরা নেটওয়ার্কসকে আইপিও অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে তা দর নির্ধারণ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার প্রায় চার মাস পর।

বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়া প্রচলনের পর এখন পর্যন্ত ১১ কোম্পানি এ প্রক্রিয়ায় তাদের শেয়ারদর নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে আরএকে সিরামিক, খুলনা পাওয়ার, এমআই সিমেন্ট, মবিল যুমনা বাংলাদেশ, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, এক্‌মি ল্যাবরেটরিজ, আমরা নেটওয়ার্কস এখন শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আছে। আইপিও প্রক্রিয়ায় শেয়ার বিক্রির অপেক্ষায় আছে বসুন্ধরা পেপার মিলস এবং আমান কটন ফাইব্রাস।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.