আজ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ইং, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৪ ডিসেম্বর ২০১৭, রবিবার |

kidarkar

৫০৫ কোটি টাকায় হোলসিম কিনছে লাফার্জ

শেয়ারবাজার রিপোর্ট: বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারণ করে দেওয়া ৫০৫ কোটি টাকায় হোলসিম বাংলাদেশের শতভাগ শেয়ার কিনছে লাফার্জ সুরমা। গতকাল লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের পর্ষদ সভায় কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) সংশোধিত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি বাস্তবায়নের অনুমোদন দেয়া হয়।

সভা শেষে লাফার্জ হোলসিম জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন করা ৫০৪ কোটি ৭৮ লাখ ১৯ হাজার ৯৪০ টাকায় হোলসিম বাংলাদেশের সব শেয়ার লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের কাছে বিক্রির সংশোধিত চুক্তি কার্যকরের ম্যান্ডেট পেয়েছে তাদের সিইও। পরবর্তী ধাপে নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় সব আপডেট শেয়ারহোল্ডারদের জানাবে কোম্পানি।

উল্লেখ্য, পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের পর বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) ১১ কোটি ৭০ লাখ ডলারে ( ডলারের মান ৮০ টাকা ধরে ৯০০ কোটি টাকার বেশি) হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের শতভাগ সম্পদ কিনে তা একীভূত করে দেয়ার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছিলেন লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডাররা। দুই কোম্পানির বৈশ্বিক হেডকোয়ার্টার একীভূত হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে এ অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াটি সামনে রেখে লাফার্জ সুরমা তাদের কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে রাখে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। যদিও স্টক এক্সচেঞ্জে এখনো কোম্পানিটির পুরনো নামই ব্যবহার হচ্ছে।

তবে সমস্যা বাধে হোলসিম বাংলাদেশের শেয়ার বিক্রির অর্থ তার হেডকোয়ার্টারে পাঠানোর সময়। বিধি মোতাবেক, তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির শেয়ার বিক্রির এ অর্থ বিদেশে বিক্রেতা কোম্পানির হেডকোয়ার্টারে পাঠাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি চেয়েছিল কোম্পানি। ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের এ অধিগ্রহণ বাবদ ৫০৪ কোটি ৭৮ লাখ ১৯ হাজার ৯৪০ টাকা বিদেশে পাঠানোর অনুমোদন দেয়।

এরপর স্টক এক্সচেঞ্জ মারফত লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ জানিয়েছিল, এ বিষয়ে তাদের অথরাইজড ডিলার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে দেয়া এক চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ৬ কোটি ২৫ লাখ ২৭ হাজার ১৮৮ ডলারে (১৭ সেপ্টেম্বরের বিনিময় হারের ভিত্তিতে) হোলসিম বাংলাদেশের সব শেয়ার অধিগ্রহণের এবং সে অর্থ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান হোল্ডারফিন বি ভির নামে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে।

তবে ক্রেতা ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের ঐকমত্যের চেয়ে প্রায় ৪৬ শতাংশ কম দামে হোল্ডারফিন বি ভি লাফার্জ সুরমার কাছে হোলসিম বাংলাদেশের সব শেয়ার বিক্রি করতে সম্মত হবে কিনা, এ বিষয়টি নিয়েও দ্বিধা ছিল। তিন মাসের বেশি সময় পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া দামেই ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিল কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে গ্রুপপর্যায়ে ফরাসি সিমেন্ট জায়ান্ট লাফার্জ ও সুইস হোলসিম একত্র হয়। এরপর ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী দুই গ্রুপের ব্যবসা একীভূত হয়ে আসে। বাংলাদেশের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের মুখ্য শেয়ারহোল্ডার ছিল লাফার্জ গ্রুপ। অন্যদিকে শেয়ারবাজারের বাইরে থাকা হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের ৭৪ শতাংশ শেয়ার ছিল হোলসিম গ্রুপ তথা হোল্ডারফিন বি ভির হাতে। ২১ শতাংশ সিয়াম সিটি ও সিয়াম সিমেন্ট এবং বাকি ৫ শতাংশ ছিল স্থানীয় ট্রান্সকম গ্রুপের হাতে। একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সহজ করতে হোল্ডারফিন বি ভি দুই গ্রুপের হাতে থাকা ২৬ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, তখন হোলসিম বাংলাদেশের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

একাধিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের ইকুইটি রিসার্চ টিমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত আমলে নিয়ে হোলসিম শেয়ারের ভ্যালুয়েশন করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সিমেন্ট খাতের মুনাফায় নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। হোলসিম বাংলাদেশের পূর্ববর্তী ভ্যালুয়েশনগুলোর সময় সিমেন্ট খাতের চিত্রটি আরো ভালো ছিল। এ কারণেই অংশীদারদের মধ্যে শেয়ার হস্তান্তরে কোম্পানির ভ্যালুয়েশন হয় ১৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার, পরবর্তীতে আন্তগ্রুপ অধিগ্রহণে তা নেমে আসে ১১ কোটি ৭০ লাখ ডলারে এবং সবশেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিবেচনায় তা সাড়ে ৬ কোটি ডলারেরও নিচে নেমে আসে।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/আ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.