আইপিও’র মাধ্যমে ৭ কোম্পানির ২১৯ কোটি টাকা উত্তোলন
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: চলতি বছরজুড়ে পুঁজিবাজার থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ২১৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা অর্থ সংগ্রহ করেছে ছয় কোম্পানি ও এক মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে ছয় কোম্পানি সংগ্রহ করেছে ১৬৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আর একটি মাত্র মিউচ্যুয়াল ফান্ড সংগ্রহ করেছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে আইপিও মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা কোম্পানিগুলো হল- শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার, বিবিএস ক্যাবলস, আমরা নেটওয়ার্কস, ওয়াইম্যাক্স ইলেক্ট্রোড এবং নাহি অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল লিমিটেড। এর মধ্যে একমাত্র আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেড বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে বাজার থেকে টাকা উত্তোলন করেন।
এছাড়া চলতি বছরে অর্থ সংগ্রহ করা মিউচুয়াল ফান্ডটি হলো আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রণী ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড।
শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ: গত বছর আইপিও অনুমোদন পাওয়া বস্ত্র খাতের কোম্পানি শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের উত্তোলন করেছে চলতি বছরের শুরুতে। কোম্পানটি কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়াই আইপিওর মাধ্যমে ১০ টাকা দরে ২ কোটি সাধারণ শেয়ার ছেড়ে ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত টাকায় ওয়াশিং প্লান্ট ভবন নির্মাণ, সম্প্রসারণ, মেশিন ও সরঞ্জামদি ক্রয়, ইটিপি সম্প্রসারণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং আইপিও খাতে ব্যয় করে কোম্পানিটি।
নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার: চলতি বছরেই আইপিও অনুমোদন পাওয়া বস্ত্র খাতের এ কোম্পানি কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়াই টাকা উত্তোলন করেন। কোম্পানিটি ১০ টাকা দরে ৪ কোটি ৩০ লাখ সাধারণ শেয়ার ছেড়ে ৪৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত টাকায় কোম্পানিটি ব্যবসা সম্প্রসারণ, মেশিন ও সরঞ্জামদি ক্রয়, ঋণ পরিশোধ এবং এবং আইপিও খাতে ব্যয় করে।
বিবিএস ক্যাবলস: চলতি বছরেই আইপিও অনুমোদন পাওয়া প্রকৌশল খাতের এ কোম্পানি কোন প্রিমিয়াম ছাড়াই টাকা উত্তোলন করেন। কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ২ কোটি শেয়ার ইস্যু করে পুঁজিবাজার থেকে ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত টাকায় ব্যবসা সম্প্রসারণ, নতুন ম্যাশিনারিজ আমদানি, বিল্ডিং নির্মাণ, ঋণ পরিশোধ এবং আইপিওর খরচ বাবদ এই টাকা ব্যয় করবে কোম্পানিটি।
আমরা নেটওয়ার্কস: চলতি বছরেই আইপিও অনুমোদন পাওয়া আইটি খাতের একমাত্র কোম্পানি যে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে টাকা উত্তোলন করেন। কোম্পানিটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ১ কোটি ৫০ লাখ ৪১ হাজার ২০৯টি সাধারণ শেয়ার প্রাথমিক গণ প্রস্তাব (আইপিও) এর মাধ্যমে ইস্যু করে ৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত টাকায় কোম্পানিটি বিএমআরই, ডাটা সেন্টার প্রতিষ্ঠা, দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়াই-ফাই হটস্পট প্রতিষ্ঠা করা, আইপিওর কাজ ও ঋণ পরিশোধ করবে।
উল্লেখ্য, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ইলেকট্রনিক বিডিং এর মাধ্যমে কোম্পানির প্রতিটি ১০ টাকা ফেসভ্যালুর সাধারণ শেয়ারের কাট অফ প্রাইস ৩৯ টাকায় নির্ধারণ করা হয়। মোট ইস্যুকৃত শেয়ারের ৬০ শতাংশ অর্থাৎ ৯০ লাখ ১৪ হাজার ৪২৩টি সাধারণ শেয়ার যোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অনুকূলে প্রতিটি শেয়ার ৩৯ টাকায় ইস্যু করা হয়। সাধারন বিনিয়োগকারীদের অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ৬০ লাখ ২৬ হাজার ৭৮৬টি সাধারণ শেয়ার ১০ শতাংশ ডিসকাউন্টে অর্থাৎ ৩৫ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
ওয়াইম্যাক্স ইলেক্ট্রোড: চলতি বছরেই আইপিও অনুমোদন পাওয়া প্রকৌশল খাতের এ কোম্পানি কোন প্রিমিয়াম ছাড়াই টাকা উত্তোলন করেন। কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি ৫০ লাখ সাধারণ শেয়ার ছেড়ে ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত টাকায় মূলধনী যন্ত্রপাতি, কাচামাল ক্রয় এবং আইপিও খাতে ব্যয় করবে কোম্পানিটি।
নাহি অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল: চলতি বছরেই আইপিও অনুমোদন পাওয়া প্রকৌশল খাতের এ কোম্পানি কোন প্রিমিয়াম ছাড়াই টাকা উত্তোলন করেন। কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি ৫০ লাখ সাধারণ শেয়ার ছেড়ে ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত টাকায় ব্যবসা সম্প্রসারণ, নতুন ম্যাশিনারিজ আমদানি, বিল্ডিং নির্মাণ, ঋণ পরিশোধ এবং আইপিও খাতে ব্যয় করবে কোম্পানিটি।
আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রণী ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড: মিউচ্যুয়াল ফান্ডটির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে উদ্যোক্তার অংশ ৫০ কোটি টাকা। সব বিনিয়োগকারীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। যা আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়। ফান্ডের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য ছিল ১০ টাকা।
শেয়ারবাজারনিউজ/এম.আর