আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৩ জানুয়ারী ২০১৮, বুধবার |

kidarkar

অর্ধযুগ পর রাজত্বে ফিরেছে ব্যাংক খাত

শেয়ারবাজার রিপোর্ট: অর্ধযুগ পর শেয়ারবাজারে রাজত্বে ফিরেছে ব্যাংক খাত। বিদায়ী বছরে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে ছিল খাতটি। ফলে ২০১২ সালের পর ফের ব্যাংকিং খাতটি টার্নওভারের শীর্ষে উঠে এসেছে। বাজারে সূচক ও লেনদেন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এ খাতের অবদান রেখেছে সবচেয়ে বেশি।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যানুযায়ী, ২০১৭ সালে সবখাতের তুলনায় সবচেয়ে বেশি ব্যাংক খাতে ট্রানওর্ভার বেড়েছে। গত বছরের অর্থাৎ ২০১৬ সালের তুলনায় এ বছর ব্যাংক খাতে টার্নওভার বেড়েছে ১৩.৩১ শতাংশ। ২০১৬ সাল শেষে ব্যাংক খাতের টার্নওভার যেখানে ছিল ৮.৮৭ শতাংশ। ২০১৭ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ২২.৬৮ শতাংশে। সে হিসেবে দেখা যায় বিদায়ী বছরে ব্যাংক খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল বেশি।

এ বিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছর ব্যাংক খাতটি ছিল সবচেয়ে বেশি আলোচনার তুঙ্গে। মূলত আর্থিক খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আচরণ বিধি জারি করায় ব্যাংকের প্রতি বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বেশি দেখা গেছে। নতুন বছরে অর্থাৎ চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট আচরণ বিধি মেনে চলতে হবে। এছাড়াও সংসদে ব্যাংক আইন সংশোধনের প্রতিবেদন উঠেছে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একসঙ্গে এক পরিবারে চার সদস্য থাকার সুযোগ রেখে আইন সংশোধনের প্রস্তাবটি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদন সংসদে উঠেছে। তাছাড়া অনেক দিন ধরেই ব্যাংকিং খাতের পিই রেশিও ৯ এর নিচে ছিল। এর অর্থ হচ্ছে, ব্যাংকিং খাতের কোম্পানিগুলো যে পরিমাণ লভ্যাংশ দিচ্ছে শেয়ারের দাম সে তুলনায় অনেক কম। বর্তমানে ১৯টি খাতের মধ্যে সবচেয়ে কম পিই রেশিও ব্যাংকিং খাতের। পিই রেশিও যত কম ওই খাতের কোম্পানিতে বিনিয়োগও তত কম ঝুঁকিপূর্ণ। সেই হিসেবে বর্তমানে ব্যাংকিং খাতের কোম্পানিগুলোই সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকের শেয়ারের দিকে গত বছর বেশি ঝুঁকেছেন বলে তারা মনে করছেন।

এদিকে বছর জুড়ে কয়েকটি শিল্প গ্রুপ ব্যাংক কেনার প্রতিযোগীতায় ছিল। বেশ কয়েকটি ব্যাংক দখলও হয়েছে।

ডিএসই তথ্যানুযায়ী দেখা যায়, ২০১২ সালে সর্বশেষ ব্যাংকিং খাতটি লেনদেন বা টার্নওভারের শীর্ষে ছিল। এরপর ব্যাংক খাতের প্রতি অনেকটাই অনাস্থা দেখা গিয়েছিল। দেখা যায়, ২০১২ সালে ব্যাংক খাতে ছিল মোট লেনদেনের ১৫.৫৭ শতাংশে। যা ২০১৩ সালে নেমে অবস্থান করে ৮.৩৪ শতাংশে। এরপর ২০১৪ সালে তা কিছুটা বেড়ে অবস্থান করে ৯.১৭ শতােশে। ২০১৫ সালে ট্রানওর্ভার ফের কমে অবস্থান করে ৭.৭৭ শতাংশে। এরপর ২০১৬ সালে আবার কিছুটা উন্নতি হয়ে অবস্থান করে ৮.৮৭ শতাংশে। তবে এবারে অর্থাৎ ২০১৭ সালে তা ১৩.৩১ শতাংশ উন্নতি হয়ে অবস্থান করছে ২২.৬৮ শতাংশে।

দেখা যায়, বিদায় বছরে ডিএসইতে মোট ৬ হাজার ৫৬০ কোটি ৪৭ লাখ ৭৫ হাজার ৩৭০টি শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে ২ লাখ ১৬ হাজার ৯৫৯ কোটি ৭১ লাখ ২৩ হাজার ৮৪৬ টাকার লেনেদেন হয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংক খাতের অবদান ছিলো ২২.৬৮ শতাংশ।  গত বছরে এ খাতে ২ হাজার ৭২ কোটি ৬৪ লাখ ৮৬ হাজার ৯১১টি শেয়ার লেনদেন হয়। যার বাজার দর ৪৯ হাজার ১৯৯ কোটি ১৫ লাখ ৮২ হাজার ৬৯১ টাকা। ফলে খাত অনুযায়ী ডিএসইর টার্নওভারের বা লেনদেনের শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছে ব্যাংক খাত।

বিদায়ী বছরে ব্যাংক খাতের পরেই টার্নওভারের দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে প্রকৌশল খাত। গত বছরে এ খাতে ৪৭৯ কোটি ৯৭ লাখ ১২৭টি শেয়ার লেনদেন হয়। যার বাজার দর ২৭ হাজার ৫৮০ কোটি ৩৩ লাখ ৭৬ হাজার ৯৪৫ টাকা।

টার্নওভারের তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে টেক্সটাইল খাত। গত বছরে এ খাতে ১ হাজার ১৬৮ কোটি ৯৬ লাখ ১৩ হাজার ৭২০টি শেয়ার লেনদেন হয়। যার বাজার দর ২৫ হাজার ৭৬৮ কোটি ৪৫ লাখ ১৩ হাজার ৭৩৭ টাকা।

এছাড়া ২৩ হাজার ৭৭৯ কোটি ২ লাখ ৪৯ হাজার ৫৫০ টাকার শেয়ার লেনদেন করে টার্নওভারের চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। আর ২২ হাজার ৫৫৪ কোটি ৫ লাখ ৬৬ হাজার ২১১ টাকার শেয়ার লেনদেন করে টার্নওভারের পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে নন-ব্যাংকিং আর্থিক খাত।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/এম.আর

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.