শীতকালে যে কারনে হার্টঅ্যাটাক বেশি হয়
শেয়ারবাজার ডেস্ক: শীতকালে এটা জানা প্রয়োজন যে, কিভাবে ঠান্ডা আবহাওয়া আপনার স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে- বিশেষ করে আপনার হার্টকে। । ঠান্ডা তাপমাত্রা বা আচরণ পরিবর্তনের কারণে হতে পারে এমনটা। শরীর উষ্ণ রাখা’ আপনার হার্ট রক্ষায় সাহায্য করতে পারে। ঠান্ডা আবহাওয়া শরীরের তাপকে সরিয়ে দেয়। শরীর মূল তাপমাত্রাকে যথেষ্ট উষ্ণ রাখতে কঠিনতর লড়াই করে। বৃদ্ধ, যাদের শরীরে চর্বি কম থাকে ও তাপমাত্রা অনুভব করার ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্তদের জন্য এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।ঠান্ডা আবহাওয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং তা থেকে হার্টকে রক্ষা করার বিষয়ে আলোচনা করা হলো-
***১. অল্প ব্যায়াম বা অনুশীলন
ঠান্ডা পড়ার মানে এই নয় যে, আপনি গতিশীল বা চলনশীল থাকবেন না অথবা নড়াচড়া করবেন না। সেই সঙ্গে তাপমাত্রা কমে গেলেও নিজেকে চলনশীল রাখা প্রয়োজন। ব্যায়াম বা অনুশীলন আপনার হার্টকে শক্তিশালী করে, বসে না থেকে বা দাঁড়িয়ে না থেকে আপনার শরীরকে চলনশীল রাখার জন্য প্রতিটি সুযোগকে কাজে লাগানোর দিকে আপনার লক্ষ্য থাকা উচিত। তাদের পরামর্শ হচ্ছে- ফোনে কথা বলা কিংবা টিভি দেখার সময় হাঁটুন, আপনার অফিস বা স্টোর থেকে দূরে গাড়ি পার্কিং করে হেঁটে কর্মস্থলে আসুন এবং প্রতিঘন্টায় অন্তত একবার আপনার ডেস্ক থেকে ওঠে কমপক্ষে একমিনিট আপনার পা-কে সোজা রাখুন।
***২. অত্যধিক ঘুম হৃদরোগের উচ্চ ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
আপনার ভালো থাকার জন্য রাতে ভালো ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে আপনার হার্ট স্বাস্থ্যের জন্য। ঘুম আপনার হার্ট এবং রক্তনালীকে আরোগ্য ও মেরামত করে। নিয়মিত ভিত্তিতে অপর্যাপ্ত ঘুমের সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধির সম্পর্ক আছে। অতিরিক্ত ঘুম না যাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। গবেষণায় পাওয়া যায়, অত্যধিক ঘুম হৃদরোগের উচ্চ ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
***৩. উচ্চ মানসিক চাপ
স্ট্রেস বা উচ্চ মানসিক চাপ আপনার হার্ট ও রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। স্ট্রেস হরমোন, যেমন- করটিসল ও অ্যাড্রিনালাইন এবং প্রদাহমূলক প্রোটিন সাইটোকিন ধমনীকে শক্ত করে এবং স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। আপনার মানসিক চাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের প্রথম ধাপ হল- কি কারণে স্ট্রেস বৃদ্ধি পাচ্ছে তা শণাক্ত করা। তারপর মানসিক চাপ কমানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
***৪. ফুলের ঝুঁকি
শরৎকাল ও শীতকালে ফুলের ভাইরাস সর্বাধিক কমন। ফ্লু অত্যন্ত সংক্রামক এবং হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধির সঙ্গে এটি জড়িত। আপনার হৃদরোগ থাকলে কিংবা কোনো স্ট্রোক হয়ে থাকলে সিজনাল ভ্যাকসিন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।। আপনার কাশি বা হাঁচির সময় টিস্যুপেপার দিয়ে নাক ও মুখ ঢাকার মাধ্যমে আপনি অন্যদের রক্ষা করতে পারেন- ব্যবহারের পর টিস্যুপেপার ফেলে দিন এবং মেডিক্যাল সেবার প্রয়োজন ব্যতীত অসুস্থ থাকাকালীন সময় ঘরে অবস্থান করুন।
***৫. সকালে রক্তজমাটের সম্ভাবনা বেশি থাকে ।
আপনার ইতোমধ্যে একবার হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকলে কিংবা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি থাকলে, আপনার ঝুঁকি ও শারীরিক সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। ঠান্ডা আবহাওয়ার সময় কিছু কার্যকলাপ পরিহার করুন, যেমন- বেলচা দিয়ে উত্তোলন বা কাজ করা, বরফে হাঁটা এবং ঝড়ো বা শৈত্যময় আবহাওয়ায় ড্রাইভিং করা- এসব কাজ হার্টে স্ট্রেস বাড়াতে পারে। কারণ সকালে রক্তজমাটের সম্ভাবনা বেশি থাকে । শোভেলিংয়ের আগে ওয়ার্মআপ করুন, হাত-মাথা-মুখ ঢাকার জন্য উপযুক্ত পোশাকে সজ্জিত হোন, স্থান পরিবর্তন করে শোভেলিং করুন এবং হার্টের বোঝা হ্রাস করতে প্রতি ১৫ মিনিট পর বিরতি নিন।
***৬. পানীয় নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন
পানীয় নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন এবং ঠান্ডা রাতে বাইরে বের হওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন। লেয়ারে ড্রেসিং করে উষ্ণ ও শুষ্ক থাকুন, লাইটওয়েট ও ইনসুলেটিং বেইস লেয়ার দিয়ে শুরু করুন। ত্বক কতটুকু অনাবৃত আছে তার ওপর নির্ভর করে শরীর কতটুকু তাপমাত্রা হারাবে, তাই হ্যাট, স্কার্ফ ও গ্লাভস পরিধান করতে ভুলবেন না যেন। সামিট পোস্ট ডট ওআরজির মতে, শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখার জন্য পানিও চমৎকার। তাই হাইড্রেটেড থাকুন।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা