আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৩ জানুয়ারী ২০১৮, শনিবার |

kidarkar

যে কারণে সপ্তাহজুড়ে পতন

শেয়ারবাজার রিপোর্টঃ সপ্তাহিক ব্যবধানে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক নেতিবাচক প্রবণতা বিরাজ করছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ৪দিনই কমেছে সূচক। বাকি এক কার্যদিবস কমলেও এর মাত্রা ছিলো সামান্য। এরই ধারাবাহিকতায় ডিএসইতে সব ধরনের সূচক কমেছে। এদিকে সূচকের পাশাপাশি ৭১.১৮ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। তবে গত সপ্তাহে লেনদেনের পরিমান কিছুটা বেড়েছে। আলোচিত সপ্তাহটিতে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২৩১ কোটি টাকা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নির্ভর করে থাকে সাধারণত ব্যাংক খাতের ওপর। এ খাতের কোম্পানির শেয়ার দর কমা থাকায় অনেকেই এর প্রতি আগ্রহ থাকেন। কিন্তু ব্যাংকগুলো ডিসেম্বর ক্লোজিং হয়েছে সামনেই ব্যাংকগুলো তাদের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে লভ্যাংশ ঘোষণা করবে। তাই বিনিয়োগকারীরা যারা মুনাফায় আছে তারা অপেক্ষা করছে ব্যাংকগুলোর ডিভিডেন্ড ঘোষণার উপর। তাই এ খাতে অনেকটাই ধীর গতি দেখা গেছে। তাছাড়া দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণের লাগাম টানতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর এতে বাজারে সূচক ও লেনদেন কিছূটা কমেছে বলে তারা মনে করছেন।

জানা যায়, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণ-আমানত অনুপাত (এডি রেশিও) কমানোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথাগত ব্যাংকগুলোর এডি রেশিও ৮৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮০.৫০ শতাংশ করা হচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রে এ হার ২ শতাংশ কমিয়ে ৮৮ শতাংশ করা হচ্ছে। বিশেষত অনুৎপানশীল খাতে ঋণ কমাতে ব্যাংকগুলোকে চাপে রাখবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কারণে শেয়ারবাজারে তারল্য প্রবাহ কমবে বলে ধারণা করছেন শেয়ারবাজার-সংশ্নিষ্টরা।

তারা জানান, তারল্য প্রবাহ কমানোর অর্থই হলো শেয়ার চাহিদা কমবে। চাহিদা কমলে শেয়ার দরও কমবে। এ নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কিছুটা শঙ্কিত। নতুন বিনিয়োগ থেকে হাত গুটিয়ে রাখছেন অনেক প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিশ্রেণির বড় বিনিয়োগকারী। বিশেষত ব্যাংকগুলো শেয়ারবাজার খাতে ঋণ কমাবে। পাশাপাশি চাহিদার তুলনায় সব ধরনের ঋণের পরিমাণ কমবে বিধায় সুদ হারও বেড়ে যাবে। এ জন্য তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ঋণের খরচ বাড়বে। সার্বিকভাবে এসব নেতিবাচক প্রভাবের কারণে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা শঙ্কিত হয়ে থাকতে পারেন বলে তারা ধারণা করছেন।

সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স বা ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ বা ১২৩ দশমিক ৫২ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই৩০ সূচক কমেছে ১ দশমিক ৮২ শতাংশ বা ৪১ দশমিক ৭১ পয়েন্ট। অপরদিকে, শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক কমেছে ১ দশমিক ১৪ শতাংশ বা ১৬ দশমিক ০৫ পয়েন্টে। আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৪০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৮টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ২৪২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির। আর লেনদেন হয়নি ২টি কোম্পানির শেয়ার। এগুলোর ওপর ভর করে গত সপ্তাহে লেনদেন মোট ২ হাজার ২৩১ কোটি ৫০ লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। তবে এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ৭৬ কোটি ৫৪ লাখ ২৪ হাজার ৭৬ টাকার। সেই হিসাবে সমাপ্ত সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে ১৫৪ কোটি ৯৬ লাখ ৭০ হাজার ৬৯৭ টাকা বা ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

আর সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

সপ্তাহশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সেচঞ্জের (সিএসই)সার্বিক সূচক সিএসইএক্স ২৪৭ দশমিক ০৭ পয়েন্ট বা ২.০৯ শতাংশ কমে সপ্তাহ শেষে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৭৫৩৫ পয়েন্টে। আর সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে হাত বদল হওয়ার ২৭৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৯টির, কমেছে ১৯৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টির দর। এগুলোর ওপর ভর করে বিদায়ী সপ্তাহে ১৩৭ কোটি ৫০ লাখ ১৭ হাজার ৮০৫ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.