তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের ৭০ শতাংশ
শেয়ারবাজার ডেস্ক: আফগানিস্তানে তালেবানকে পরাজিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বধীন জোট শত শত কোটি ডলার খরচ করেছে। কিন্তু এক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে দেশটির ৭০ শতাংশ জায়গাতেই তালেবান প্রকাশ্যে তৎপর।
গত কয়েক মাস ধরে আফগানিস্তানে এক সমীক্ষায়, দেখা যাচ্ছে ২০১৪ সালে বিদেশি সৈন্যরা চলে যাওয়ার সময় আফগানিস্তানের যতখানি জায়গা তালেবানের নিয়ন্ত্রণে ছিল, এখন তার চাইতে অনেক বেশি জায়গা তারা নিয়ন্ত্রণ করে।
তবে আফগান সরকার ওই রিপোর্টকে অতটা গুরুত্ব না দিয়ে বলেছে, সরকারই বেশিরভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আফগানিস্তানে সম্প্রতি তালেবান এবং ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠী হামলা বেড়ে গেছে। রাজধানী কাবুল এবং অন্যান্য শহরে সম্প্রতি বেশ কিছু হামলায় বহু মানুষ নিহত হয়েছে।
আফগান সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তালেবানের সঙ্গে কোন শান্তি আলোচনার কথা নাকচ করে দিয়েছেন। গত বছর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন যে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনারা অনির্দিষ্টকাল ধরে থাকবে।
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, আফগানিস্তানে এখন ইসলামিক স্টেটও আগের চেয়ে অনেক বেশি তৎপর। যদিও তারা তালেবানের তুলনায় অনেক বেশি দুর্বল। আফগানিস্তানের ১৪টি জেলা বা পুরো দেশের প্রায় চার শতাংশ পুরোপুরি তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। আরও ২৬৩ টি জেলায় (পুরো দেশের ৬৬ শতাংশ) তাদের সক্রিয় প্রকাশ্য উপস্থিতি আছে।
তালেবানের শক্তি সম্পর্কে আগে যা ধারণা করা হতো, এটি তার চেয়ে অনেক বেশি। আফগানিস্তানের প্রায় দেড় কোটি মানুষ বা জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক হয় তালেবানের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় বা তালেবান প্রকাশ্যে সক্রিয় এমন এলাকায় বাস করে। এসব এলাকায় তালেবান নিয়মিত হামলা চালায়।
আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় ওেজলা শিনাদান্দের এক লোক বলেন, ‘প্রতিদিন আমি যখন বাড়ির বাইরে যাই, আমি আবার বাড়ি ফিরে আসতে পারবো কীনা, সে সম্পর্কে নিশ্চিত নই। বিস্ফোরণ, সন্ত্রাস এবং তালেবান- এসব তো আমাদের নিত্যদিনের জীবনের অংশ।’
আফগানিস্তারে দক্ষিণাঞ্চলকেই তালেবানের শক্ত ঘাঁটি বলে মনে করা হতো। কিন্তু সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে দেশের পূর্ব, পশ্চিম এবং উত্তরাঞ্চলেও তালেবানের প্রভাব বিস্তৃত হয়েছে।
২০১৪ সালের পর যেসব এলাকা আবার তালেবানের দখলে চলে গেছে তার একটি হেলমান্দ প্রদেশ। এটি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনতে বিদেশি সৈন্যরা লড়াই করেছিল। হেলমান্দে যুদ্ধ করতে গিয়ে সাড়ে চারশোর বেশি ব্রিটিশ সৈন্য মারা যায়।
যেসব এলাকাকে তালেবানের প্রকাশ্য উপস্থিতি আছে বলে চিহ্ণিত করা হচ্ছে, সেসব এলাকায় তালেবান জঙ্গীরা নিয়মিত আফগান সরকারের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালায়। আফগান সামরিক ঘাঁটির ওপর সুসংগঠিত হামলা থেকে শুরু করে সামরিক কনভয়ের ওপর একক বা চোরাগোপ্তা হামলা–সব ধরণের আক্রমণই তারা চালিয়ে থাকে।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু