আগ্রহ হারাচ্ছে সরকারি কোম্পানি
শেয়ারবাজার রিপোর্ট : রাজনৈতিক সংকট, অব্যবস্থাপনা, পেশাদারিত্বের অভাবে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রয়াত্ব কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় দেখা দিয়েছে চরম সংকট। ২০১৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ি মুনাফা কমেছে ৭২ শতাংশ কোম্পানির। আর এর প্রভাবে গত ছয়মাসে প্রায় শতভাগ কোম্পানিরই দর পতন হয়েছে।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রাষ্ট্রয়াত্ব ১৮ কোম্পানির ১৩টিরই আগের বছরের তুলনায় হয় মুনাফা কমেছে অথবা লোকসানের অঙ্ক বাড়িয়েছে।
এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রয়াত্ব কোম্পানির ডিভিডেন্ড দেয়ার পরিমান কমেছে। আর এর প্রভাবে বাজারে সরকারি শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহেও ভাটা পড়েছে।
একদিকে ২টি কোম্পানি যেমন কোনো ধরনের ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি আর ব্যবসা বন্ধ থাকার কারনে বিডি সার্ভিসেসও কোনো ধরনের ডিভিডেন্ড না দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে ৪টি কোম্পানির ডিভিডেন্ডের পরিমান কমেছে।আগের বছরের তুলনায় সমান ডিভিডেন্ড দিতে পেরেছে ৬টি কোম্পানি। যেগুলোর মধ্যে আবার তিনটিরই মুনাফা কমেছে। আগের বছরের তুলনায় বেশি ডিভিডেন্ড দিতে পেরেছে মাত্র ৪টি কোম্পানি। এর মধ্যেও একটি কোম্পানির মুনাফা আগের বছরের তুলনায় কমেছে।
অন্যদিকে রুপালী ব্যাংকের তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’১৪-সেপ্টেম্বর’১৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মুনাফা কমেছে। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে কোম্পানির ডিভিডেন্ডের পরিমান আগের বছরের তুলনায় কমবে।
রাষ্ট্রয়াত্ব কোম্পানিগুলোর এমন ভগ্নদশার মধ্যে ভিন্ন পথে হেঁটেছে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এ খাতের ৫ কোম্পানির মধ্যে ৪টি অর্থাৎ প্রায় ৮০ শতাংশ কোম্পানিই এসময় মুনাফা বাড়িয়েছে। আর খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের চিনি কর্পোরেশনের অধিনে পরিচালিত রাষ্ট্রয়াত্ব দুই চিনি কোম্পানি লোকসান বাড়িয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ করে।
রাষ্ট্রয়াত্ব কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২০১৪ অর্থবছরের জন্য বরাবরের মতোই কোনো ধরনের ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি শ্যামপুর সুগার মিলস্ লিমিটেড এবং জিল বাংলা সুগার মিলস্ লিমিটেড।দুটি কোম্পানিরই আগের বছরের তুলনায় লোকসান বেড়েছে।
আগের বছরের তুলনায় কম ডিভিডেন্ড দিয়েছে ডেসকো, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড, এটলাস বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল টি। সব কয়টি কোম্পানিরই আগের বছরের তুলনায় মুনাফা কমেছে। এর মধ্যে ন্যাশনাল টি চলতি বছরের শুরুতেই লোকসানের মুখে পড়েছে।
২০১৩ অর্থবছরের সমান ডিভিডেন্ড দিয়েছে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস্, যমুনা অয়েল, পদ্মা অয়েল, ইস্টার্ন কেবলস্, রেনউইক যঞ্জেস্বর এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন। এর মধ্যে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস্, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন এবং ইস্টার্ন কেবলস্ এর মুনাফা আগের বছরের তুলনায় কমেছে।
অন্যদিকে আগের অর্থবছরের তুলনায় বেশি ডিভিডেন্ড দিতে পেরেছে ন্যাশনাল টিউবস্, আইসিবি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম এবং তিতাস গ্যাস। এর মধ্যে আইসিবি’র মুনাফা আগের বছরের তুলনায় কমলেও সাধারন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ডিভিডেন্ডে কোনো ধরণের পরিবর্তন আনেনি আর্থিক খাতের আইসিবি লিমিটেড।
শেয়ারবাজারনিউজ/ও/সা