দুর্বল ব্যাংক চেনাতে নীতিমালা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি, নিয়ম-নীতি পরিপালন, বেপরোয়া ব্যাংকিং এবং আমানত রাখা নিরাপদ কিনা এমন প্রশ্নের উত্তর আগামীতে পাওয়া যাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ওয়েবসাইটে। এজন্য মার্কেট ডিসিপ্লিন নীতিমালা নামে একটি গাইডলাইন তৈরি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, মার্কেট ডিসিপ্লিন নীতিমালা তৈরি ও কার্যকর হলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে আর্থিক ভিত্তির প্রায় ৩৫ ধরনের তথ্য নিজেদের ওয়েবসাইটে দিতে হবে।
মার্কেট ডিসিপ্লিন নীতিমালা তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকতা বলেন, এ নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে সাধারণ আমানতকারীসহ জনসাধারণরাও জানতে পারবেন, ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে কোন ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা কী রকম, তারা কতটুকু ঝুঁকি মোকাবেলা করতে সক্ষম ইত্যাদি তথ্য। এতে আমানতকারীরা সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন আমানত কোন ব্যাংকে রাখা নিরাপদ।
জানা গেছে, ব্যাসেল-৩ এর আওতায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে তাদের আর্থিক ভিত্তির ৩৫ ধরনের তথ্য নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। প্রতি ত্রৈমাসিক, অর্ধবার্ষিক ও বাৎসরিক ভিত্তিতে এসব তথ্য প্রকাশ করতে হবে। এর মধ্যে আর্থিক অবস্থা, ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা, মূলধন, ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ, খেলাপি ঋণ, রাইট অফ, রাইট অফ লোন রিকোভারি, মার্কেট রিস্ক, ক্রেডিট রিস্ক, অপারেশনাল রিস্ক, লাভ-ক্ষতি, আমানতকারীর সংখ্যা, আমানতের পরিমাণ, শেয়ারহোল্ডারের সংখ্যা, শেয়ারের পরিমাণ, ঋণ গ্রহীতা, ঋণের পরিমাণ, ব্যাংকের আয়-ব্যয়ের তথ্য থাকবে। ফলে আমানতকারীরা ব্যাংক সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাবেন এবং তারা প্রকৃত ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিত হয়ে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
ব্যাসেল-৩ এর তিনটি পিলার রয়েছে; প্রথম দু’টি পিলার মিনিমাম ক্যাপিটাল রিকয়ারমেন্ট ও সুপারভাইজারি রিভিউ প্রসেস বাস্তবায়ন সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ পিলারের নাম হচ্ছে মার্কেট ডিসিপ্লিন। ব্যাসেল-৩ এর লক্ষ্য হলো ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্য কার্যকরভাবে প্রকাশের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি ব্যাংকের পুঁজির গুণগত মান রক্ষা করা এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। এছাড়া ঝুঁকিভিত্তিক পুঁজির সুরক্ষা, স্বল্পমেয়াদি তহবিলের ওপর ব্যাংকগুলোর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনাও ব্যাসেল-৩ এর লক্ষ্য।
ব্যাংকের ঝুঁকি মোকাবেলায় কী পরিমাণ মূলধন দরকার তা পিলার-১ এর আওতা ঠিক করে। চিহ্নিত ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যাংকের মূলধন সংরক্ষণ যথাযথ হয়েছে কিনা তা পিলার-২ এর আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিভিউ করবে। আর পিলার-৩ এর আওতায় ব্যাংকগুলো তাদের ঝুঁকি মোকাবিলায় মূলধনের ভিত্তি বাড়ানোসহ যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলো জনগণকে জানানোর ব্যবস্থা করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ সার্কুলারে ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়নের সময়সীমা একবছর বাড়িয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংক কর্মকর্তাদের ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে দক্ষতা বাড়াতে হবে। ২০২০ সালের জানুয়ারির মধ্যে ব্যাসেল-৩ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ