ঝুঁকিতে ব্যাংক বহির্ভুত ১৩ আর্থিক প্রতিষ্ঠান
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (এনবিএফআই) অনিয়ম-দুর্নীতি ও ব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারণে দুর্বল হয়ে পড়ছে। এ খাতের ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শেষে ৩০টিই সমস্যাগ্রস্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ সময়ে গ্রিন জোন বা নিরাপদ স্থানে রয়েছে মাত্র তিনটি প্রতিষ্ঠান। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৩টি রেড জোন বা নাজুক পরিস্থিতিতে এবং ১৭টি ইয়েলো জোনে অবস্থান করছে।
অথচ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ শেষে রেড জোনে পড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৭। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট ৩০ সেপ্টেম্বর-২০১৭-তে এ তথ্য উঠে এসেছে। আর ৩০ জুন ২০১৭ শেষে গ্রীন জোনে ছিল ৪টি এবং রেডজোনে ছিল ১২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
আর্থিকখাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমানত ও ঋণের সুদহারের ব্যবধান বা স্প্রেড কমে যাওয়া, কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম-দুর্নীতি বৃদ্ধি পাওয়া, প্রত্যাশা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করতে না পারা এবং শেয়ারবাজারে দুর্বল পারফরম্যান্সের কারণেই এনবিএফআই খাতে দুর্বলতা বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি তিন মাস পর দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে ফিন্যান্সিয়াল অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট তৈরি করে। ওই রিপোর্টের তথ্যমতে, ২০১৫ সাল শেষে ৩২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গ্রিন জোনে ছিল চারটি। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৮টি ইয়েলো ও ১০টি রেড জোনে ছিল।
এরপর ২০১৬ সাল শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সূচকে কিছুটা উন্নতি হয়। তখন গ্রিন জোনে ছিল পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ২১টি প্রতিষ্ঠান ইয়েলো ও সাতটি প্রতিষ্ঠান রেড জোনে ছিল। মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানেই ১২টি প্রতিষ্ঠান রেড জোনে চলে গেছে।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানগুলোর অভ্যন্তরীণ সুশাসন ও আর্থিক স্বাস্থ্য বিবেচনায় গ্রিন, ইয়েলো ও রেড— এ তিন শ্রেণীতে চিহ্নিত করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ঝুঁকি সহনশিলের সক্ষমতার (স্ট্রেস টেস্টিং) ভিত্তিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিন ভাগে চিহ্নিত করা হয়। যারা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে তাদের রেড জোনে রাখা হয়। এসব প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকে। তবে গাহকের স্বার্থে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঝুঁকি কাটিয়ে উঠার জন্য তাদের নাম প্রকাশ করা হয় না।
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ইকুইটির বিপরীতে গড় আয় (আরওই) হয়েছে ৪.৪০ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিকে অর্থাৎ জুন ২০১৭ শেষে আরওই ছিল ৩.৫০ শতাংশ। ইকুইটি থেকে আয় বেড়েছে। একইভাবে সেপ্টেম্বর ২০১৭ শেষে সম্পদের বিপরীতে আয় (আরওএ) হয়েছে ০.৬০ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিকে ৩০ জুন ২০১৭ শেষে আরওএ ছিল ০.৫০ শতাংশ।
এদিকে সেপ্টেম্বর ২০১৭ শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট বিতরণ করা ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণ হয়েছে ৯.৪০ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিকে ছিল ৮.৯০ শতাংশ। অর্থাৎ খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০.৫০ শতাংশ।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ