আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮, বুধবার |

kidarkar

দুর্নীতি ও সন্ত্রাস যারা করবে, তাদের বিচার হবেই: প্রধানমন্ত্রী

শেয়ারবাজার ডেস্ক: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন আদালত। আদালতের দেয়া এ রায়ের বিরুদ্ধে তার দলের আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, তার বিরুদ্ধে আদালত রায় দিয়েছেন। এখানে তো আমাদের সরকারের করার কিছু নেই। যদি আমরা এখানে কিছু করতামই তাহলে তো মামলা ১০ বছর চলতে দিতাম না। গত ২০০৮ সালে যখন আমরা ক্ষমতায় এসেছি তখনই তো করতে পারতাম। কিন্তু আমরা তো তা করিনি। আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন। তিনি আরো বলেন, এখানে আমাকে গালি দেয়া কিংবা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার কি যুক্তি থাকতে পারে আমরা তো সেটি বুঝি না।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ইতালির রোমের প্রিনচিপি গ্র্যান্ড হোটেলে ইতালি আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার স্বামী বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমান, দুই ছেলে তারেক রহমান এবং প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

খালেদার দুর্নীতির মামলা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যে মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার শাস্তি হয়েছে, সে মামলা কে দিয়েছে? খালেদা জিয়ার প্রিয় ব্যক্তিত্ব। সেনাবাহিনীর ৯ জেনারেলকে ডিঙিয়ে মইন উদ্দিনকে তিনি সেনাপ্রধান করেছিলেন। আর বিশ্বব্যাংকে চাকরি করতেন ফখরুদ্দীন, তাকে নিয়ে এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর করেছিলেন। তাদের দলীয় লোক ইয়াজউদ্দীনকে বানালেন রাষ্ট্রপতি। ফখরুদ্দীন, মইন উদ্দিন আর ইয়াজউদ্দীন তারাই তো তার বিরুদ্ধে এ মামলা দিলেন। এ মামলা তো আর আওয়ামী লীগ দেয়নি।

প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিচার চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমি এটুকু বলতে চাই- দুর্নীতি যারা করবে, সন্ত্রাস যারা করবে, জঙ্গিবাদের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিচার হতেই হবে। কারণ বাংলাদেশটাকে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আমরা আনতে চাই। বাংলাদেশের উন্নয়ন আমরা চাই। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নত হোক সেটিই আমরা চাই। সেটি সম্ভব যখন দেশে দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, স্বজনপ্রীতি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে নির্বাচন প্রতিরোধ এবং সরকার পতনের নামে এই বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। ২০১৩ সালে ঠিক একইভাবে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে দেয়। এ সময় তারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। প্রায় ৩ হাজারের ওপরে মানুষকে তারা আগুন দিয়ে ঝলসে দিয়েছে। তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে ওই তিন বছরে প্রায় ৫০০’র কাছাকাছি মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে।

এমনকি দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য- পুলিশ, বিজিবি, সেনাসদস্যকে পুড়িয়ে মেরেছে। এছাড়াও সারা বাংলাদেশে তারা কত অন্যায় করেছে একবার চিন্তা করুন।

পাশাপাশি শেখ হাসিনা তার সরকারের আমলে দেশের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, দুর্নীতি করতে আসিনি, বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য গড়তে এসেছি- নিজেদের ভাগ্য নয়।

শেখ হাসিনা এও বলেন, এ সময় তার বিরুদ্ধে বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বেশ কয়েকটি মামলা করা হলেও কোনো অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা মামলা তদন্ত হয়েছিল এবং সেই মামলায় কিছু পায়নি।

এ সময় ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি ইদ্রিস ফারাজির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যাগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্টর (ইফাদ) পরিচালনা পর্ষদের বার্ষিক অধিবেশনে যোগ দিতে ইতালিতে চার দিনের সরকারি সফরে রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দেশটিতে যান। জানা গেছে, ইফাদের ৪১তম পরিচালনা পর্ষদের বার্ষিক অধিবেশনে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) যোগদান করেন।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.