আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮, শনিবার |

kidarkar

বজ্রপাত থেকে রক্ষা করে যে গাছ!

শেয়ারবাজার ডেস্ক: হাত পাখার শীতল বাতাস থেকে শুরু করে বজ্রপাত জনিত মৃত্যুর হার কমানোর প্রধান সহায়ক হল তালগাছ। থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেও ৬৪ জেলায় তাল গাছ রোপন করে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। দুই দশক আগে বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জের আনাচে কানাচে শোভা পেত অসংখ্য তালগাছ। জনশ্রুতি আছে তালগাছে বজ্রপাত হয় বলে নিধন হতে হতে এখন বিলুপ্তপ্রায়।

২০১৬ সালে বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তালগাছের উপকারিতা উপলব্ধি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। চৈত্রের প্রচন্ড খরতাপে তালের কচিশাস, তালগাছের পাতায় ঝুলে থাকা কারিগর পাখি বাবুইয়ের বাসা, তালপাতার হাত পাকার শীতল বাতাস, ভাদ্রমাসের তালের পিঠা এখন প্রায় অতীত।

তালের শাঁসের টুপি প্রচুর পরিমানে তাপ শোষণ করে ও মাথা ঠান্ডা রাখে। শুধু তাই নয় তাল গাছের কোন কিছুই ফেলনা নয়। তালগাছ অনেক দিন বাঁচে, অন্য ফসলের কোন ক্ষতি করে না, মাটির ক্ষয়রোধ করে, তালগাছ ঘর তৈরির উত্তম কাঠ, গাছের ডালের গোড়ার অংশ সেদ্ধ করে যে আঁশ পাওয়া যায় তা অত্যন্ত উন্নতমানের তন্তু, জ্বালানি হিসাবে এর চাহিদা অনেক, স্ত্রী ও পুরুষ জাতীয় তালগাছ একটানা ৯০ থেকে ১২০ দিন পর্যন্ত ২৪ঘন্টায় ১২ থেকে ১৫কেজি রস দেয়, যার পাঁচ কেজি রস থেকে এক কেজি উন্নতমানের গুড় তৈরি হয়। তালের রসের কাথ উচ্চমানের মাছ ও গরুর খাবার। তালের আটির উপরি অংশে সুতা খোসা মোজাইক পাথরের বিকল্প হিসাবে ব্যবহৃত হয়, তা ছাড়া তালের রস উচ্চ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ সু-স্বাদু খাবার।

বসতভিটা থেকে নিরাপদ দুরত্বে প্রতি বিঘা জমিতে ৪টি করে তালগাছ রোপন করলে বজ্রপাতসহ নানা দুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব। বাংলাদেশের সীমান্ত অঞ্চলে কাঁটাতারের বেড়া না দিয়ে ছয় ফুট দুরত্বে আড়াআড়ি তিনসারি করে তালগাছ রোপন করলে যেমন সীমানা প্রাচীর হবে অপর দিকে যুদ্ধগাড়ি ট্যাংকসহ ভারী যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। তাছাড়া বন্যহাতির অনুপ্রবেশ ঠেকানো সম্ভব। যেহেতু তালগাছ লবনাক্ত পানিতে মরেনা, তাই সমুদ্র তীরবর্তী ভুমিতে ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস ও মাটিক্ষয় রোধে সহায়ক ভুমিকা রাখতে পারে।

বজ্রপাতে মানুষের মুত্যু কমানোর তাগিদে সরকার দেশব্যাপী ১০লাখ তালগাছ লাগিয়ে মৃত্যু ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর স্থানীয় প্রযুক্তি ব্যবহারের পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আসাদুল হকের মতে, বজ্রপাত যেহেতু উচু যায়গায় আঘাত করে, সে হিসাবে তাল গাছ মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে সহায়ক হবে। চাষা আব্দুল আজিজ মনে করেন, সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে কাজটি সহজ হবে এবং অতি তাড়াতাড়ি সফলতা আসবে।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.