নির্বাচনে পর্যবেক্ষক সংস্থা কমাবে ইসি
শেয়ারবাজার ডেস্ক: একাদশ সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষণের জন্য অর্ধশত পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এ লক্ষ্যে পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর আবেদন যাচাই-বাছাইয় করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
নির্বাচন কশিনের কর্মকর্তারা জানান, ১৯৯টি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল ইসিতে। কিন্তু যাচাই-বাছাইয়ের পর অর্ধশত সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে ইসি। এসব সংস্থাকে এপ্রিলেই নিবন্ধন দিতে চায় কমিশন।
সূত্র জানায়, সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য শুধু বাংলাদেশি সংস্থাকে নিবন্ধন দেয়া হবে। এবার কোন বিদেশি সংস্থাকে নিবন্ধন দেবে না ইসি। সংসদ নির্বাচনে কোন বিদেশি সংস্থা পর্যবেক্ষণ করতে চাইলে কমিশন তখন তাদের বিষয়ে তৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেবে।
নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন তালিকা থেকে ভোট পর্যবেক্ষক সংস্থার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ১৩৮ সংস্থাকে নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন, দশম সংসদের আগে নিবন্ধন পায় ১২০ সংস্থা। আর এবারে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ভোট পর্যবেক্ষক সংস্থার সংখ্যা আরও কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইসির কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, যারা শর্ত পূরণ করতে পারবে তারাই নিবন্ধন পাবে। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চালু হয়। ২০০৮ সালে ১৩৮টি সংস্থাকে নিবন্ধন দেয় ইসি। তখন নিবন্ধনের মেয়াদ ছিল এক বছর। পরে এ মেয়াদ পাঁচ বছর করে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এরপর ২০১১ সালে ১২০টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দেয় ইসি। পাঁচ বছর নিবন্ধনের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। পরবর্তীতে কমিশন তা আরও এক বছর বাড়ানোর পর সেই মেয়াদ শেষ হয় ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে। এরপর ওই বছর আবারও ছয় মাস মেয়াদ বাড়ানো হয় তাদের।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, উল্লেখ সংখ্যক সংস্থা ভোট পর্যবেক্ষণে যায় না। যেসব সংস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাদের মধ্যে কিছু সংস্থা নিয়মিত ইসিতে প্রতিবেদন জমা দেয় না। এ জন্য এবার সংস্থার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং বিগত নির্বাচনের সময় তাদের কার্যক্রম খতিয়ে দেখা হবে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই যোগ্যদের পাঁচ বছরের জন্য নিবন্ধন দেওয়া হবে। নবম সংসদ নির্বাচনে দেশিয় ৭৫টি সংস্থা ভোট পর্যবেক্ষণে থাকলেও দশম সংসদে তা কমে ৩৫টিতে দাঁড়ায়। স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার সংখ্যা আরও কমে আসে।
বিগত নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে ১৬টি সংস্থা মাঠে ছিল। তাই এবারে ভুঁইফোড় সংস্থাকে নিবন্ধন না দেওয়ার চিন্তা করছে কমিশন। আর ভুঁইফোড় সংস্থাকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে ইসির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে অনেক নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা।
চলতি মাসে ভোটের কেনাকাটা: এদিকে পাঁচ সিটি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মুদ্রণ কাজ সারতেই ৩৫ কোটি টাকা দ্রুত বরাদ্দের জন্য কমিশনকে জানিয়েছে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তর। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শুধুমাত্র কাগজ কেনার জন্যে এ বরাদ্দর কথা জানো হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা বলেন, ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এসব নির্বাচন হলেও তিন ভোটকে (সংসদ, সিটি ও উপজেলা) সামনে রেখে এ বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে সব কাগজ সংগ্রহ করে রাখতে হবে। মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তর অর্থ পেলে চলতি মাস থেকে কার্য়ক্রম শুরু করবে।
সূত্র জানায়, পাঁচ সিটি নির্বাচনের জন্য ৮৫২ রিম গোলাপি মুদ্রণ কাগজের প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে ৩৩৩ রিম কাগজ মজুদ রয়েছে, বাকি ৫১৯ রিম সংগ্রহ করতে হবে। এক্ষেত্রে গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য সময় ৮ মার্চ থেকে ২৩ অক্টোবর। এক্ষেত্রে এপ্রিল মাসের মধ্যে কাগজ সংগ্রহ করতে হবে বলে জানিয়েছে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদফতর।
আর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি; তথা আগামী ৮ থেকে ১১ মাসের মধ্যে সংসদ নির্বাচন হবে। এ নির্বাচনের জন্য প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার রিম কাগজ প্রয়োজন হবে। যা জুন মাসের মধ্যে সংগ্রহ করতে হবে। আর পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে আগামী বছরের মার্চ থেকে জুলাইয়ের মধ্যে। এ বছরের ডিসেম্বর থেকে মুদ্রণ কাজ শুরুর সম্ভাব্য সময় দিয়েছে ইসি। এ নির্বাচনে ১ লাখ ২০ হাজার রিম কাগজ দরকার পড়বে। সেক্ষেত্রে নভেম্বরের মধ্যে মজুদ নিশ্চিত করতে চায় অধিদফতর।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু