আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ মার্চ ২০১৮, শুক্রবার |

kidarkar

এক নজরে দেখে নিন ক্যান্সারের লক্ষণ

শেয়ারবাজার ডেস্ক: ঘাতকব্যাধি ক্যান্সার। প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগ সহজে ধরা পড়ে না। ফলে সঠিক চিকিৎসা নেওয়াও সম্ভব হয় না। আবার এখন পর্যন্ত ক্যান্সারের চিকিৎসায় পুরোপুরি কার্যকর কোনো ওষুধও আবিষ্কার হয়নি। তাই বর্তমান বিশ্বে এই রোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এক নজরে দেখে নিন ক্যান্সারের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো-

ক্যান্সার হলো বিভিন্ন রোগের একটি গ্রুপ যেটি যে কোন চিহ্ন বা উপসর্গ প্রকাশ করে। আসলে শরীরের যে অংশে ক্যান্সার হয় এর লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো তার উপর নির্ভর করে। ক্যান্সার যদি শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে তবে শরীরের বিভিন্ন অংশে এর উপসর্গগুলো প্রকাশ পায়। অনেক উপসর্গের মধ্যে কেবল একটি প্রকাশ পেলেই যে আপনার ক্যান্সার হয়েছে এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। তবে অনেকেদিন ধরে যদি এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় এবং ভবিষ্যতে খারাপের দিকে যাচ্ছে বুঝতে পারেন তাহলে ডাক্তারের কাছে যাওয়াই শ্রেয়।

১) হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া: ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষের ওজন হঠাৎ করে কমে যায়। আপনি যদি বুঝতে পারেন, কোনো কারণ ছাড়াই আপনার ওজন কমে যাচ্ছে তাহলে বুঝবেন এটি ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ। অগ্নাশয়, পাকস্থলী এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সাধারণত এমনটি হয়ে থাকে।

২) জ্বর: ক্যান্সার হলে জ্বর খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার। যখন ক্যান্সারের কোষগুলো শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে তখন এটা বেশি ঘটে থাকে। বেশিরভাগ ক্যান্সার রোগীদের সবসময় জ্বর থাকে। ক্যান্সারের চিকিৎসা চলার সময় ইমিউন সিস্টেমে এর প্রভাব পড়ার কারণেই এমনটি হয়। সাধারণত ব্লাডক্যান্সার হলে বার বার জ্বর আসে।

৩) ক্লান্তি: অনেক ক্লান্ত বোধ করছেন? বিশ্রাম নিলেও ক্লান্তি যাচ্ছে না। এমনটি হলেও বুঝবেন ক্যান্সারের লক্ষণ। ক্যান্সার বড় হতে থাকার উপসর্গ এটি। লিউকোমিয়ার ক্যান্সারে এমনটি হতে পারে। এ ছাড়া কোলন ক্যান্সার কিংবা পাকস্থলীর ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটতে পারে।

৪) ব্যথা: হাড়ের ক্যান্সার বা টেস্টিকুলার ক্যান্সারের প্রাথমিক উপসর্গ হতে পারে ব্যথা। চিকিৎসা করানোর পরও যদি আপনার মাথাব্যথা না সারে তবে তা মস্তিষ্কের টিউমারের উপসর্গ হতে পারে। এ ছাড়া পিঠে ব্যথা কোলন, মলদ্বার বা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের উপসর্গ হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার কারণেই সাধারণত ব্যথা বেড়ে যায়।

৫) ত্বকের পরিবর্তন: ত্বকের ক্যান্সার হলে ত্বকের নানা পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। এগুলো মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- চামড়া কালো হয়ে যাওয়া, ত্বক ও চোখে হলুদাভ, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, অত্যধিক চুল বড় হওয়া প্রভৃতি।

নির্দিষ্ট কিছু ক্যান্সারের লক্ষণ এবং উপসর্গ-

সাধারণ কিছু উপসর্গের পাশাপাশি এমন কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ আছে যেগুলো ক্যান্সারের দিকে নির্দেশ করে। তবে প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা কারণ থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের কাছে যান। নতুবা দীর্ঘদিন ধরে সমস্যাগুলো থাকলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি হবে আরও ভয়াবহ।

মূত্রাশয়ের ক্রিয়াকর্মে পরিবর্তন: দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া থাকলে তা কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ। এক্ষেত্রে যে সমস্যাগুলো হতে পারে তা হলো- প্রসাব করার সময় যন্ত্রণা, প্রসাবে রক্ত আসা, কখনও কখনও প্রসাব কম কিংবা অনেক বেশি হয়। প্রসাব কম-বেশি হওয়ার প্রোটেস্ট ক্যান্সারের সঙ্গে সম্পর্কিত। কাজেই এ রকম কোনো সমস্যা হলেই ডাক্তারের কাছে যান।

ক্ষত সারে না: ক্যান্সার হলে ত্বকের কোন ক্ষত সহজেই নিরাময় হতে চায় না। মুখে এ রকম কোনো সমস্যা হলে তা ওরাল ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। সাধারণত ধুমপান, তামাক এবং অ্যালকোহল পানে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। আবার লিঙ্গ বা যোনিতে ফুসকোড়ার সংক্রমণও ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

জিহবা বা মুখে সাদা দাগ: জিহরা বা মুখের সাদা সাদা দাগ লিউকোপ্লাকিয়ার (এটি ক্যান্সার হওয়ার আগের অবস্থা নির্দেশ করে) জন্য দায়ী। ধুমপান এবং তামাক সেবক কারীরা এর ঝুঁকিতে বেশি থাকেন। এর ফলে মুখের ক্যান্সার হতে পারে।

অস্বাভাবিক রক্তপাত: অস্বাভাবিক রক্তপাতও ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণ। আবার কাশের সঙ্গে রক্ত আসলে ফুসফুসের ক্যান্সার হতে পারে। প্রসাবে রক্ত আসলে কিডনির ক্যান্সার এবং মলের সঙ্গে রক্ত আসলে তা কোলন ক্যান্সারের চিহ্ন। আর স্তন থেকে রক্তপাত হলে তা স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

হজমে সমস্যা: খাবার গিলতে সমস্যা কিংবা হজমে সমস্যা হলে পাকস্থলীর ক্যান্সার হতে পারে। তবে শুধু যে ক্যান্সার হলেই এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয় এমনটি নয়, বরং অন্য কারণেও হজমে সমস্যা হতে পারে।

ত্বকে পরিবর্তন: ত্বকে যে কোনো পরিবর্তন দেখতে পেলেই ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। নতুবা ত্বকের ক্যান্সারে আক্রান্তের আশঙ্কা।

বার বার কাশি: বার বার কাশি হলে এবং তা সহজে থামতে না চাইলে এটি ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। আবার থাইরয়েড গ্রন্থির ক্যান্সারের জন্য দায়ী এই কাশি।
অন্যান্য উপসর্গ

শুধু উপরোক্ত চিহ্নগুলোই যে ক্যান্সারের লক্ষণ এমনটি নয়। বরং আরও কিছু লক্ষণ আছে। যদি দেখেন আপনার শরীরের কোন অঙ্গের বড় পরিবর্তন ঘটেছে এবং দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা হচ্ছে। তাহলে আর দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সবসময় মনে রাখবেন, প্রাথমিক চিকিৎসায় ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.