শর্ত সাপেক্ষে চীনকে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সুযোগ: প্রস্তুতি নিচ্ছে ডিএসই
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনা কনসোর্টিয়ামকে বেশকিছু শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন দেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। চীনের শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম এমন কিছু শর্ত দিয়েছে যা পরিপালন করা বাংলাদেশ শেয়ারবাজারের স্বার্থ পরিপন্থি। যে কারণে বিএসইসি এ মুহূর্ত্বে চীনা কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অনুমোদন দিতে পারছে না।
তবে এসব শর্ত উঠিয়ে যদি ডিএসই পুনরায় সংশোধন করে আবেদন করতে পারে সেক্ষেত্রে কমিশন সে বিষয়ে বিবেচনা করবে। এদিকে বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহন করছে ডিএসই। শিগগিরই ডিএসইর পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত সংশোধনী বিএসইসিতে জমা দেয়া হবে বলে ডিএসই সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, বিএসইসি যেসব শর্ত দিয়েছে সেগুলো হলো:
০১। শেয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্টে এমন কোনো শর্ত থাকা যাবে না যা আইন, ডিএসই’র সাধারণ শেয়ারহোল্ডার এবং বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট উন্নয়নে কোনো সাংঘর্ষিকতা তৈরি হয়।
০২। তাদের পক্ষ থেকে এমন কোনো প্রস্তাব যা পরিপালন করতে ডিএসই’র বিদ্যমান মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন এবং আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশন সংশোধন করতে হয় তা রাখা যাবে না।
০৩। শেয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্টসহ কৌশলগত বিনিয়োগকারীর প্রস্তাব কমিশনের চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে ডিএসই’র শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে হবে।
০৪। চীনা কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী সংক্রান্ত বিএসইসির গঠিত কমিটি কর্তৃক প্রতিবেদন ডিএসই জেনারেল মিটিংয়ে উপস্থাপন করবে।
০৫। ডিএসই তাদের জেনারেল মিটিংয়ের মিনিটসসহ, সংশোধিত শেয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্টসহ অন্যান্যা দলিলাদি নিয়ে কমিশনে চীনা কনসোর্টিয়ামের বিষয়ে চূড়ান্ত আবেদন করবে।
উল্লেখ্য, চীনের কনসোর্টিয়ামের অন্য শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- পরিচালকদের সংখ্যা পরিবর্তনের আগে চীনের কৌশলগত বিনিয়োগকারীর লিখিত অনুমোদন লাগবে। এছাড়া ১৫ শতাংশের অধিক যে কোন স্থায়ী সম্পদের বিষয়ে, একক বা যৌথভাবে ১০ কোটি টাকার অধিক ঋণ গ্রহণ, যেকোন ১০ কোটি টাকার উপরে চুক্তি, একক বা যৌথভাবে ১০ কোটি টাকার উপরে বিনিয়োগ, কৌশলগত বিনিয়োগকারীর স্বার্থ জড়িত যে কোন ইস্যু, যেকোন ধরনের ইনটেলেকচ্যুয়াল সম্পত্তি অর্জন, চীনের কৌশলগত বিনিয়োগকারী তার ইচ্ছা অনুযায়ি যে কাউকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগদানের প্রস্তাব, সেটেলম্যান্ট গ্যারান্টি ফান্ড কন্টিবিউশন বাদ বা স্থগিত করতে হবে এবং ডিএসইর আইপিও সংক্রান্ত যে কোন ইস্যু যেমন, শেয়ারের মূল্য নির্ধারন, স্পন্সর নির্ধারন, অবলেখক নিয়োগ, প্রসপেক্টাস অনুমোদন ও ইস্যু মূল্য নির্ধারনের আগে লিখিত অনুমোদন নেওয়ার শর্ত দিয়েছে চীনের কনসোর্টিয়াম। এছাড়া আর্টিকেল ১৩৫ অনুযায়ি ২৫ শতাংশ শেয়ার ধারনকারীর সঙ্গে ডিএসই চুক্তি করতে না পারার আইনটি থেকে চীনের কৌশলগত বিনিয়োগকারীকে অব্যাহতি দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছে। আর এইসব শর্তগুলোকে ডিএসইর আর্টিকেল পরিবর্তন করে সংযোজন করতে হবে।
এছাড়া চীনের কনসোর্টিয়াম যে ৩০০ কোটি টাকার কারিগরি সহায়তা দেবে বলে ডিএসই দাবি করছে, তা নির্ধারণে কোন নিরপেক্ষ মূল্যায়ন নেই বলে বিএসইসির পর্যালোচনা কমিটির তদন্তে উঠে এসেছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা