আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৫ মে ২০১৫, মঙ্গলবার |

kidarkar

প্রাক বাজেট আলোচনায় ইআরএফ: দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় পদক্ষেপের দাবি

NBR_ERFশেয়ারবাজার রিপোর্ট: বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করে দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরাম (ইআরএফ)। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে এমন দাবি জানানো হয়।

ইআরএফের সভাপতি সুলতান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশে বিনিয়োগের পর্যাপ্ত সুযোগ ও পরিবেশ না থাকায় টাকা পাচার হচ্ছে। এ টাকায় ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ অনেক দেশে বাড়ি নির্মাণের প্রবণতা অনেক আগ থেকেই রয়েছে। তবে এখন সেসব দেশে বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগের প্রবণতা বেড়েছে। তাদের কীভাবে দেশের ভেতরে বিনিয়োগে আগ্রহী করা যায় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া দরকার।

তিনি বলেন, বিদেশি অনেক পণ্য রয়েছে যার মূল্য কর ও ভ্যাট দিয়ে উৎপাদন করা দেশীয় পণ্যের তুলনায় কম। ফলে বিদেশি পণ্যে দেশের বাজার সহজলভ্য হচ্ছে। তাই বাজেটে দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, বিদেশি পণ্যের ডাম্পিংয়ে দেশি শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। পরিবেশের সুরক্ষায় সরাসরি ডাম্পিং বন্ধ না করে এমন ব্যবস্থা নেওয়া দরকার যেন বাংলাদেশ ডাম্পিং স্টেশন না হয়।

ইআরএফের সদস্য সচিব সাজ্জাদুর রহমান বলেন, দেশের মানুষের তুলনায় সরাসরি কর প্রদানকারীর হার অনেক কম। বর্তমানে কর প্রদানকারীর যে হার রয়েছে, তা তিনগুণ বাড়ানো সম্ভব। শহরে যারা ২২শ’ বর্গফুটের বাসায় থাকে, এসি ব্যবহার করেন ও অভিজাত ক্লাবের সদস্য তাদের সবাই করের আওতায় আসতে পারেন।

করফাঁকি রোধ করার বিষয়ে তিনি বলেন, অনেক কোম্পানিরই একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকে। তবে তারা একটি অ্যাকাউন্টেই কর দেন। বাকি অ্যাকাউন্ট হিসাবের বাইরে থাকে। আবার আন্ডার ও ওভার ইন ভয়েসিংয়ের মাধ্যমে কর ফাঁকি দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে অনেক সময়ই এনবিআরের কর্মকর্তাদের সহায়তায় তা সংগঠিত হয়। এর মাধ্যমে বিদেশেও পাচার হচ্ছে অনেক টাকা।

ইআরএফের সহ-সভাপতি সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম বলেন, রাজস্ব আয় কমার অন্যতম কারণ রপ্তানি খাতে আয় কমে যাওয়া। মিথ্যে ঘোষণা দিয়ে অনেকে পণ্য আমদানি করেন, ফলে সরকার অনেক রাজস্ব হারায় । তিনি আরো বলেন, ব্যক্তিগত আয়ে করমুক্ত আয়সীমা ২ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা ও হাইব্রিড গাড়ি আমদানি না করে সাইকেল আমদানি ও তৈরিতে বিশেষ সুবিধা দেওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।

ইআরএফের প্রাক্তন সভাপতি জাকারিয়া কাজল বলেন, কর সর্ম্পকে মানুষের ভয় দূর করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা দরকার। বছরে একটি কর মেলা না করে কমিউনিটি বেজ সচেতনতা তৈরি করা দরকার। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ভ্যাট প্রত্যাহার ও সিগারেটের ওপর কর বাড়ানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিড়ির ওপর কর বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

সিনিয়র সাংবাদিক এরশাদ মজুমদার বলেন, ইটিআইএন’র মাধ্যমে যে কর দিতে হয় তা ব্যাংকের মাধ্যমে দিতে পারলে করদাতাদের জন্য সহজতর হয়। অডিটের হয়রানি কমানোর ব্যবস্থা করা দরকার। সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য কর প্রদানে বিশেষ সুবিধা রাখা দরকার।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বিশেষ প্রতিবেদক আশিক চৌধুরি বলেন, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে বর্তমানে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা করছে। এখানে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট গ্রহণযোগ্য নয়। এটা প্রত্যাহার দরকার।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বিভিন্ন গণমাধ্যমের অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, সিনিয়র সাংবাদিক, রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন বিভাগের সদস্য ও বাজেট প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ারবাজারনিউজ/রু/ও/তু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.