রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ড, ৭ সেনা সদস্যকে কারাদণ্ড
শেয়ারবাজার ডেস্ক: মিয়ানমারে রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ৭ সেনা সদস্যকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেনা সূত্রকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে রাখাইন প্রদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ১০ রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যার দায়ে তাদের প্রত্যেককে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে রাখাইনের উত্তরাঞ্চলীয় গ্রাম ইনদিনে সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীরা ১০ রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা করে। তাদের রাখা হয় গণকবরে। ঘটনার সরেজমিন অনুসন্ধানে নেমেছিলেন রয়টার্সের দুই সাংবাদিক। ডিসেম্বরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এরপর অভিযোগ আনা হয় দাফতরিক গোপনীয়তা ভঙ্গের আইনে। ফেব্রুয়ারিতে কর্তৃপক্ষ রয়টার্সকে জানায়, ঘটনার অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তবে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে রয়টার্সের সাংবাদিকদের দাফতরিক গোপনীয়তা ভঙ্গের সঙ্গে ওই তদন্ত সম্পর্কহীন বলে দাবি করা হয়। সেই তদন্তের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত ৭ সেনাকে কারাদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১০ তারিখে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দাবি করেছিল, ২০০ জঙ্গির একটি দলে ছিল হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া ১০ রোহিঙ্গা। তারা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালালে বৌদ্ধ গ্রামবাসী তাদের তলোয়ার দিয়ে আক্রমণ করে। আর সেনারা গুলি চালায়। সেনাপ্রধান প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের ফেইসবুক পাতায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ১০ রোহিঙ্গার হত্যাতাণ্ডে সহযোগিতা ও জড়িত থাকার অভিযোগে ওই সেনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, হত্যাকাণ্ডের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৪ সেনাকে সেনাবাহিনী থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কারাগারে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও কঠোর পরিশ্রমের আদেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩ সেনাকে বাহিনী থেকে প্রত্যাহারের পাশাপাশি তাদের পদের অবনয়ন ঘটানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে একই পরিমাণ সাজা এবং শ্রমের আদেশ। বিবৃতিতে জানানো হয়, ঘটনায় জড়িত পুলিশ ও বেসামরিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া এখনও চলমান রয়েছে।
সেনা সদস্যদের সাজা ঘোষিত হলেও রয়টার্সের সেই দুই সাংবাদিক দাফতরিক গোপনীয়তার আইন লঙ্ঘনের দায়ে এখনও আটক রয়েছেন। জানুয়ারি থেকে ব্রিটিশ উপনিবেশের যুগে প্রণীত ওই আইনের আওতায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হবে কি না, তা নিয়ে শুনানি চলছে। অভিযুক্ত হয়ে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সাজা ঘোষিত হতে পারে।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু