গেজেট প্রকাশ: বিকল্প বিনিয়োগ বিধিমালায় শেয়ারবাজারে ২৫ শতাংশ
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (অল্টারনেটিভ ইনভেষ্টমেন্ট) রুলস,২০১৫ এর গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত গেজেট অনুসারে, যারা বিকল্প বিনিয়োগ ফান্ড বা অল্টারনেটিভ ইনভেষ্টমেন্ট ফান্ড গঠন করবে তাদের ফান্ডের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ অর্থ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা যাবে। এছাড়া নূন্যতম ৭৫ শতাংশ অর্থ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা যাবে। এদিকে মানি মার্কেট ইন্সট্রুমেন্টেও ফান্ডের ১০ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগের বিধান রেখে অল্টারনেটিভ ইনভেষ্টমেন্ট ফান্ড বিধিমালা তৈরি করা হয়েছে।
তবে তালিকাভুক্ত কোনো একক কোম্পানিতে ফান্ডের ৫ শতাংশের বেশি অর্থ বিনিয়োগ করা যাবে না। এছাড়া তালিকাভুক্ত নয় এমন একক কোম্পানিতে ফান্ডের বিনিয়োগ ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না।
প্রকাশিত গেজেটে আরো জানা যায়, অল্টারনেটিভ ইনভেষ্টমেন্ট ফান্ডের পরিমাণ নূন্যতম ১০ কোটি টাকা হতে হবে। এর মধ্যে ফান্ডের স্পন্সরদের ভূমিকা ১০ শতাংশের নিচে হতে পারবে না। ফান্ড ম্যানেজার ইলিজিবল ইনভেষ্টরদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। প্রত্যেক ইনভেষ্টরদের কাছ থেকে ইউনিট বিক্রির মাধ্যমে নূন্যতম ৫০ লাখ টাকা সংগ্রহ করতে হবে। তবে ২০০ জনের অধিক বিনিয়োগকারীর কাছে ইউনিট বিক্রি করা যাবে না। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের সবসময় ক্যাশ ডিভিডেন্ড প্রদান করতে হবে।
প্রসঙ্গত: ইলিজিবল ইনভেষ্টর বলতে নিবন্ধিত কোনো দেশি বা বিদেশি ফান্ড ম্যানেজার, নিবন্ধিত কোনো কোম্পানি, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানি, মার্চেন্ট ব্যাংকার, স্টক ডিলার, অ্যাসেট ম্যানেজার, অন্য অল্টারনেটিভ ফান্ডের ম্যানেজার, রেজিষ্টার্ড পেনসন ফান্ড, প্রভিডেন্ট ফান্ড, ট্রাস্ট ফান্ড, সুপার অ্যানুয়েশন ফান্ড, বিদেশি ফান্ড, বিদেশি ব্যক্তি বিনিয়োগকারী, স্থানীয় বা প্রবাসী উচ্চবিত্ত বিনিয়োগকারীকে বুঝানো হয়েছে।
এদিকে ব্যক্তিখাতের সম্ভাবনাময় বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যেই বিকল্প এসব তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এগুলোর নাম হবে ‘অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড’। ফান্ড গঠনের জন্য এক বা একাধিক উদ্যোক্তা থাকতে হবে। তহবিলের ন্যূনতম আকার হবে ১০ কোটি টাকা। এতে প্রাথমিকভাবে উদ্যোক্তার অংশ ফান্ডের মোট আকারের ১০ শতাংশের কম হতে পারবে না। এছাড়া রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করার সময়ই এর অন্তত ২০ শতাংশ বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। উদ্যোক্তার বিনিয়োগ কমপক্ষে তিন বছরের জন্য লক-ইন (বিনিয়োগ প্রত্যাহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা) থাকবে। ব্যক্তি বিনিয়োগকারীও এ ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে তাদের কমপক্ষে ৫ কোটি টাকার সম্পদ থাকতে হবে। প্রবাসী বাংলাদেশি, বিদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোনো বিনিয়োগ ব্যবস্থাপক এ ধরনের ফান্ডে বিনিয়োগ করার সুযোগ পাবে। তবে কোনোক্রমেই কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ এককভাবে ৫০ লাখ টাকার কম হতে পারবে না। উদ্যোক্তারা শুধু প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে বিনিয়োগ গ্রহণ করতে পারবেন। তহবিলগুলোর মূল উদ্দেশ্য হবে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রাইভেট কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখা। এ ফান্ড শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারবে না। মেয়াদ সর্বনিম্ন পাঁচ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে সংশ্লিষ্টরা চাইলে তা আরো দুই বছরের জন্য বাড়ানো যাবে। আর এ ফান্ড থেকে যে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে মূলধনী বিনিয়োগ করা হবে, সে কোম্পানি বিনিয়োগ গ্রহণের পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির আবেদন করতে পারবে না।
শেয়ারবাজারনিউজ/সা