ধারাবাহিক ভাবে আর্থিক অবস্থার অবনতি
আজিজ পাইপ, জুট স্পিনার্স, সেন্ট্রাল ফার্মা ও আরএসআরএমের ব্যবসার কৌশল-কর্ম পরিকল্পনা চেয়ে চিঠি
আতাউর রহমান: ব্যবসা ও উৎপাদন বন্ধ এবং আর্থিক অবস্থার ধরাবাহিক অবনতির কারণে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত চার কোম্পানির ব্যবসার কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা জানতে চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিগুলো হচ্ছে:- জুট স্পিনার্স, আজিজ পাইপস, সেন্ট্রাল ফার্মা এবং আরএসআরএম।
কোম্পানিগুলো তাদের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কমিশনের সঙ্গে গত বছরের শেষের দিকে সাক্ষাত করে। সাক্ষাতে তাদের সকল ব্যাখ্যা শুনে এবং পরবর্তীতে সেগুলো পর্যালোচনা করে কোম্পানিগুলোকে কিছু নির্দেশনা দিয়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর একটি চিঠি পাঠায় কমিশন। সেই নির্দেশনাগুলোর মধ্যে উল্লেখ্য কোম্পানিগুলোকে তাদের ব্যবসার কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা জানতে চাওয়া হয়।
তথ্য মতে, জুট স্পিনার্সকে একটি কৌশলগত পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়। সেখানে কোম্পানিটি কিভাবে চলতি বছরের মধ্যে তার উৎপাদন পুনরায় শুরু করবে সে বিষয়ে উল্লেখ করবে। কোম্পানিটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জুট স্পিনার্স ১৯৮৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। তালিকাভুক্তীর পর থেকে কোম্পানিটি এখন পর্যন্ত কোনো লভ্যাংশ প্রদান করেনি। সেই সাথে গত চার বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে কোম্পানিটি বড় লোকসানে রয়েছে।
এদিকে আজিজ পাইপকে জানুয়ারির ১ম সপ্তাহের মধ্যে সিআইবি রিপোর্ট এবং কোম্পানির সুনির্দিষ্ট ও দৃশ্যমান অগ্রগতি এবং কাজের পরিকল্পনার বিষয়ে কমিশনের কাছে ব্যাখ্যা জমা দিতে বলা হয়েছে। কোম্পানিটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বর্তমানে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কোম্পানিটি ১৯৮৬ সালে তালিকাভুক্ত হলেও ব্যবসার কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি করতে পারেনি। সেই সাথে মাত্র দুটি হিসাব বছরে নগদে লভ্যাংশ দিয়েছে। এরমধ্যে ১% নগদ লভ্যাংশও রয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে।
অপরদিকে সেন্ট্রাল ফার্মাকে কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের ১ মাসের মধ্যে কমিশনের কাছে একটি ৫ বছরের কৌশলগত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে। এবং সেই পরিকল্পনায় কীভাবে ১ বছরের মধ্যে কোম্পানিটির খরচ এবং মুনাফা সমান হবে সে বিষয়ে উল্লেখ করতে হবে। কোম্পানিটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কোম্পানিটি ২০১৩ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কিন্তু ধারাবাহিক ভাবে কোম্পানির ব্যবসা ও মুনাফা কমতে থাকে। সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে। তালিকাভুক্তীর পর থেকে এ পর্যন্ত কোম্পানিটি মাত্র একবার নাম মাত্র ১% নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।
এছাড়া আরএসআরএমকে বিএমআরই প্রকল্প দুই মাসের মধ্যে পুনরায় চালু ও একটি বড় কর্ম পরিকল্পনার রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। কোম্পানিটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কোম্পানিটি ২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। গত চার বছরে কোম্পানিটির ব্যবসা ও মুনাফা ধারাবাহিক ভাবে সাড়ে ৭গুনের বেশি কমেছে। সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ প্রদান করেনি।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছিক বিএসইসি’র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। এসব কোম্পানির এক একটির অবস্থা একেক রকম। এর মধ্যে কোনো কোম্পানির ব্যবসা ও উৎপাদন বন্ধ রয়েছে, আবার কোনোটির আর্থিক অবস্থার ধরাবাহিক অবনতি ঘটছে। আর কোম্পানিগুলো বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রদান করেনি। তাই এসব বিষয়ে কোম্পানিগুলোর কাছে ব্যাখা চাওয়া হয়েছে। তাদের ব্যাখা শুনে এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কোম্পানিগুলোকে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালের কোম্পানি সচিব বলেন, ‘আমরা এখনও ব্যাবসায়িক কর্ম পরিকল্পনা বিএসইসিতে জমা দেইন। আশা করছি শিগগিরই ব্যাবসায়িক কর্ম পরিকল্পনা বিএসইসিতে জমা দেব।’
এদিকে রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলসের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন শেয়ারবাজার নিউজকে বলেন, ‘বিএসইসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবসায়িক কর্ম পরিকল্পনা তৈরির কাজ চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর্ম পরিকল্পনা বিএসইসিতে জমা দেব।’
বিএসইিসি এ দরনের তদারকি কাজ খুবই প্রশংসনীয়।
এ তদারকি চলমান যেন থাকে; সে জন্য একটি বিভাগ রাখা এবং দক্ষ জনবল নিয়োগ করা দরকার।
এ বিষয়ে পরিকল্পনার একটি খসড়া দিতে পারি।
Excellence work of BSEC thanks
খুবই ভালো পদক্ষেপ। সামনের দিনগুলো যেন এভাবেই অব্যাহত থাকে।