এমডি’র স্বেচ্ছাচারিতায় মুখ থুবড়ে পড়েছে অ্যালায়েন্স সিকিউরিটিজ
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: মার্জিন ঋণ অনিয়ম, কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের দায়ে অভিযুক্ত মাধব চন্দ্র দাশ ও পার্থ প্রতিম দাশ ব্যাপক দুনীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় বন্ধ হওয়ার পথে অ্যালায়েন্স সিকিউরিটিজ এন্ড ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড (ডিএসই ট্রেক নং: ১৩৭)। মাধব চন্দ্র দাশ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও পার্থ প্রতিম দাশ পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন।
আর এ দুইজনকে পেছন থেকে উৎসাহ যোগাচ্ছে আদালতের রায়ে অবৈধ হওয়া প্রতিষ্ঠানটির সাবেক পরিচালক তপন কৃষ্ণ পোদ্দার।
জানা যায়, মাধব চন্দ্র দাশ ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে যাচ্ছে। পরিচালনা পর্ষদকে না জানিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মুনাফা থেকে লোকসানে পড়েছে কোম্পানিটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিয়মিত মুনাফা করলেও নতুন এমডি হিসাবে মাধব চন্দ্র দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই লোকসান গোনা শুরু হয়। তার স্বেচ্ছাচারিতায় বিনিয়োগকারীমূখর অ্যালায়েন্সের আঙ্গিনা এখন শূণ্য। এমনকি প্রতিষ্ঠানটির এমডি কারসাজি করে চেয়ারম্যানের অ্যাকাউন্টের লেনদেন বন্ধ করে দেয়ায়, এরই মধ্যে হাউজটির বড় কিছু বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ সরিয়ে নিয়েছে। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২৫ কোটি। পাশাপাশি আরও প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ অন্যত্র সরে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
অন্যদিকে, অবৈধভাবে কোম্পানি দখল করার জন্য একজন পরিচালক ও অবৈধ হওয়া আরেক পরিচালক তপন কৃষ্ণ পোদ্দারকে নিয়ে পর্ষদের চেয়ারম্যানকে চাপ প্রয়োগ করছেন এই এমডি। সম্প্রতি পর্ষদ চেয়ারম্যানকে জোরপূর্বক শেয়ার বিক্রি করার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির স্পর্শকাতর নথিপত্র অন্যত্র সরিয়ে চেয়ারম্যানকে অপদস্ত করছেন তিনি। এছাড়া চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করে অবৈধ সুবিধা নেয়ারও চেষ্টা এই এমডি করছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে জানার জন্য মাধব চন্দ্র দাশের সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি’র আইনে সিকিউরিটিজ হাউজের এমডিকে জবাবদীহীতার মধ্যে আনা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে বিএসইসি মুখপাত্র মো: সাইফুর রহমান বলেন, এটা প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব বিষয়। এখানে বিএসইসি’র কিছু করার নেই।
অপরদিকে, অ্যালায়েন্সের চেয়ারম্যান প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচাতে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বারবার বিএসইসি এবং ডিএসই-কে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু বিএসইসি এবং ডিএসই কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় তিনি আদালতের স্মরণাপন্ন হন। পাশাপাশি বিএসইসি-কে শোকজ নোটিশ পাঠান। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান থেকে যাতে আর কোনো টাকা পাচার না হয় সেজন্য প্রতিষ্ঠানটির এমডি কিংবা পরিচালকের একক এখতিয়ারে সবধরনের লেনদেনের উপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন উচ্চআদালত। এর বিপরীতে এমডি ও ওই পরিচালক আপিল বিভাগে রিট করলে আদালত তা খারিজ করে দেন এবং এ বিষয়টি নির্ধারণের ভার উচ্চ আদালতের ওপর ন্যস্ত করেন।
উল্লেখ্য, ৫ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি এবং এ টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে মাধব ও পার্থর বিরুদ্ধে এনবিআর ও দুদকের তদন্ত চলছে। পাশাপাশি মার্জিন ঋণে ১০ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি’র কাছে জমা রয়েছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/আ.হা