তামিম-সাকিবের ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহ ছুড়ে দিলো
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচের শুরুটা তেমন ভালো কিছু দেখা পারেনি। শুরুটা ভালো না হলেও তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমানের দারুণ ব্যাটিংয়ে ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু হঠাৎ টানা দুই ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপের মুখে পড়ে মাশরাফি বাহিনী। সাব্বিরের পর সাজঘরে ফিরেন মুশফিকুর রহিমও। এরপর তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটে বিপর্যয় কাটিয়ে উঠছে বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে জুটিতে এই দুজন ১৪৪ রানের এক অসাধারণ জুটি গড়ে তুলেন। এই দুজনের ব্যাটে বড় সংগ্রহ এনেদিয়েছে মাশরাফির দলে। ৫০ ওভার খেলে বাংলাদেশ ৫ উ্টকেট হারিয়ে ৩২৪ রান সংগ্রহ করেন।
এর আগে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমেছে মাশরাফি বাহিনী। আর শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। পঞ্চম ওভারেই টাইগাররা হারিয়েছে সৌম্য সরকারের উইকেট। সুরঙ্গা লাকমলের বলে উইকেটরক্ষক দীনেশ চান্দিমালকে ক্যাচ দেন সৌম্য। দলের রান তখন ২৯। ১৩ বলে দুই চারে ১০ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন সৌম্য।
সৌম্য আউট হওয়ার পর শ্রীলঙ্কান বোলারদের ওপর পাল্টা আক্রমণ চালান তামিম-সাব্বির। প্রথম ২৪ রান করতে ছয়টি চার হাঁকান সাব্বির। তামিমও খেলেন নিজের নামের প্রতি সুনাম রেখে। আক্রমণাত্মক খেলে ৪৮ বলেই অর্ধশতকে পৌঁছান সাব্বির। তবে এরপরই গুনারত্নের বলে থারাঙ্গাকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান হার্ডহিটার এই ব্যাটসম্যান। ৫৬ বলে ৫৪ রান করেন সাব্বির। তামিম-সাব্বির জুটিতে থেকে আসে ৯০ রান। পরের ওভারে মুশফিকের উইকেটটি নিয়েছেন লক্ষ্মণ সান্দাকান।
সাব্বিরের বিদায়ের ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগেই আউট বড় ভরসা মুশফিকুর রহিম। ক্যাচ আউটের সিদ্ধান্তও অবশ্য নিতে হলো তৃতীয় আম্পায়ারকে।
লাকশান সান্দাকানের বলে ড্রাইভ করেছিলেন মুশফিক। ফিরতি বল হাতে জমান এই চায়নাম্যান বোলার। টিভি রিপ্লে দেখে আম্পায়ার নিশ্চিত হন, বল মাটি ছুঁয়ে আসেনি। ফলে ১ রানে মাঠ ছেড়ে সাজঘরে ফিরেন মুশফিক। এরপরই নামে সাকিব আল-হাসান।
জোড়া ধাক্কা বাংলাদেশ কাটিয়ে উঠেছে অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যানের ব্যাটে। সাব্বির ও মুশফিককে দ্রুত হারানোর পর এই জুটির শুরুটা ছিল সাবধানী। তারা ধীরে ধীরে এগিয়ে নিয়ে গেছেন দলকে। এর মধ্যে তামিম তুলে নিয়েছেন নি জের সেঞ্চুরী। ১২৭ বলে তামিম ছুঁলেন সেঞ্চুরি। টেস্টের মতো ওয়ানডেতেও তামিমের সেঞ্চুরি এখন আটটি। তামিমের সেঞ্চুরির পরপর সাকিব ছুঁয়ে ফেললেন তার পঞ্চাশ। ৬১ বলে ছুঁলেন ৩৩তম ওয়ানডে অর্ধশতক।
জুটির সেঞ্চুরি হয়েছে এর আগেই। বিস্ময়কর হলেও সত্যি, ওয়ানডেতে ২৪ ইনিংস এক সঙ্গে ব্যাট করে সাকিব ও তামিমের প্রথম সেঞ্চুরি জুটি এটিই! এর আগে অর্ধশত জুটি ছিল মাত্র চারটি। সবশেষটি ২০১২ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭৬। যেটি ছিল জুটিতে দুজনের সর্বোচ্চ।
মাইলফলক ছোঁয়ার পর দুই ব্যাটসমানই বাড়িয়েছেন রানের গতি। কুমারাকে টানা তিনটি চার মেরেছেন সাকিব। কিন্তু ঝড়ের কিছুক্ষণ পরেই সাজঘরে ফিরে গেলেন সাকিব। আগের বলেই অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল টেনে উড়িয়েছেন লং অনের ওপর দিয়ে। ম্যাচের যেটি প্রথম ছক্কা। পরের বলেই আবার অফ স্টাম্পের বাইরের বল ওড়াতে গেলেন সাকিব। এবার লাকমল দিলেন স্লোয়ার ডেলিভারি। টাইমিং ঠিক মতো হলো না। ধরা পড়লেন সান্দাকানের হাতে। ৭১ বলে ৭২ রানে ফিরলেন সাকিব। এর কিছুক্ষণ পরে ফিরলেন তামিমও। ছক্কা বানানোর জন্য উড়িয়ে মেরতে গিয়ে লংঅনে ধরা পড়লেন তামিম ইকবাল। ফিরলেন ১২৭ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে।
এরপর মোসাদ্দেক ও মাহমুদুললা দুজনে মিলে ম্যাচের ইতি টানেন। শ্রীলঙ্কাকে ৩২৫ রানের টার্গেট দেন বাংলাদেশ।
শেয়ারবাজারনিউজ/এম.আর