আজ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ইং, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৯ অগাস্ট ২০১৮, বুধবার |

kidarkar

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর করা হচ্ছে

শেয়ারবাজার ডেস্ক: বর্তমান সরকারের মেয়াদের শেষ পর্যায়ে এসে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। এ জন্য সারসংক্ষেপ চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে আপাতত চাকরিতে অবসরের বয়স বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সাধারণ বয়স ৩০ বছর। আর অবসরের বয়স ৫৯ বছর। জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তাঁরা ৩২ বছর করার প্রস্তাব করলেও সরকার ইচ্ছা করলে সেটা আরও বাড়াতে পারে। কারণ এটা সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয়। তাঁরা বিভিন্ন দিক চিন্তা করে ৩২ করার প্রস্তাব করছেন। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে এখনো কিছু বলতে পারেননি তাঁরা। বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ বছর।

তবে চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর উদ্যোগকে সমর্থন করেন না সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার। তিনি গতকাল মঙ্গলবার বলেন, বেশি বয়সে চাকরি হলে ভালো হয় না। এ ছাড়া এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজটও নেই।

অবশ্য চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে আসা শিক্ষার্থীরা বলছেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছরই করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির দাবিতে গড়ে ওঠা সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাস গতকাল বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ করলেও তাঁদের আন্দোলন চলবে। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা সঠিক হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করছেন না। ২০১১ সালে চাকরিতে অবসরের বয়স বৃদ্ধির সময় প্রবেশের বয়স ৩২ করলে তখন ঠিক ছিল। এখন ৩৫ বছর করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বা তার বেশি। এ ছাড়া বাংলাদেশেও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ৩৫ করা হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালের আগে দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ছিল ২৭ বছর। ১৯৯১ সালের জুলাই মাসে সেটা বাড়িয়ে করা হয় ৩০ বছর। এরপর ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সরকারি চাকরিতে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স এক বছর বাড়িয়ে ৬০ বছর করা হয়।

অবসরের বয়স বাড়ানোর কারণে সরকারি চাকরিতে শূন্য পদের সংখ্যা কমে যায়। ফলে চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি পাওয়ার পথ সংকুচিত হয়। পাশাপাশি একদিকে চাকরিতে তীব্র প্রতিযোগিতা, আরেক দিকে শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরি পেতেও অনেকের দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এ জন্য অবসরের বয়স বাড়ানোর পর থেকেই চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে নামেন একদল শিক্ষার্থী। তাঁরা মানববন্ধন, অনশনসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছেন। দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই দাবি আরও জোরালো হয়। জাতীয় সংসদেও বিষয়টি আলোচনা হয়। কিন্তু সরকার তাতে সাড়া দিচ্ছিল না। এর মধ্যে গত জুনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২৯ তম সভায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার সুপারিশ করা হয়। এর আগে কমিটির ২১ তম সভায় ৩২ বছর করার সুপারিশ করা হয়েছিল।

এখন মেয়াদের শেষ পর্যায়ে এসে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ বছর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রবেশের বয়স বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও অবসরের বয়স বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই। কারণ অবসরের বয়স বাড়ানো হলে শূন্য পদের সংখ্যা বাড়বে না। এ জন্য এখন কেবল চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.