আজ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৭ জানুয়ারী ২০১৯, সোমবার |

kidarkar

ব্রেইন স্ট্রোকের আদ্যোপান্ত

শেয়ারবাজার ডেস্ক: পৃথিবীতে প্রতি দুই সেকেন্ডে কোথাও না কোথাও একজন মানুষ স্ট্রোকের স্বীকার হচ্ছেন। এছাড়া, প্রতি ছয় জনে একজনের কোনো না কোনো পর্যায়ে স্ট্রোকের স্বীকার হন। স্ট্রোক করলে মস্তিষ্কের নিউরনে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

মানুষের মৃত্যুর জন্য যে ক’টি কারণ দায়ী হতে পারে, তাদের মধ্যে স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি! মৃত্যু না হলেও বরণ করতে হয় পঙ্গুত্ব। কেউ স্ট্রোক করলে তাকে তড়িৎ গতিতে চিকিৎসা না দেয়া হলে তার মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি প্রায় অবধারিত!

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে বা রক্তনালি সরু হয়ে যাওয়ায় মস্তিষ্কের টিস্যু বা কোষগুলোর ক্ষতিসাধন হওয়াকে ব্রেইন স্ট্রোক বলা হয়।

আসুন জেনে নেই ব্রেইন স্ট্রোকের আদ্যোপান্ত:

মস্তিষ্কের রক্তনালীর ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটার কারণে মস্তিষ্কের কোষে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। একারণে মস্তিষ্কের কোষগুলো মারা গিয়ে ব্রেইন স্ট্রোক হয়ে থাকে।এছাড়া, মস্তিষ্কের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে, ধমনীতে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েও ব্রেইন স্ট্রোক হয়ে থাকে।

ব্রেইন স্ট্রোকের উপসর্গ:

স্ট্রোক করার কয়েক মিনিটের মধ্যে মস্তিষ্কের কোষগুলো মারা যেতে থাকে এবং উপসর্গগুলো দেখা দিতে থাকে। যেমন:

১। স্মরণশক্তি কমে যেতে পারে।

২। শরীরের যেকোনো একপাশ অবশ হয়ে যেতে পারে।

ব্রেইন স্ট্রোকের প্রভাব

রোগী কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারেন। মুখ যেকোনো দিকে বাঁকা হয়ে যেতে পারে। দুই হাত বা একহাত অবশ হয়ে যেতে পারে।

ব্রেইন স্ট্রোকের আদ্যোপান্ত

এছাড়াও ঘুম ঘুম ভাব হবে, ঝিমুনি আসবে। চোখে ঝাপসা দেখা যাবে। প্রচুর মাথাব্যথা শুরু হবে।

করণীয়

ব্রেইন স্ট্রোকের উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। মস্তিষ্কের রক্তনালীতে রক্ত প্রবাহের ব্যাঘাত ঘটার কারণে ব্রেইন স্ট্রোক হয়ে থাকে। সাধারণত রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে, উচ্চ রক্তচাপের কারণে বা কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে ইচকেমিক স্ট্রোক হয়ে থাকে। প্রায় ৮০ ভাগ ব্রেইন স্ট্রোকই হচ্ছে ইচকেমিক (Ischaemic) স্ট্রোক। আর মস্তিষ্কের দুর্বল রক্তনালীর ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহের সময় রক্তনালী ফেটে গিয়ে ব্রেইন স্ট্রোক হওয়াকে হ্যামরেজিক স্ট্রোক বলে।

ব্রেইন স্ট্রোকের কারণ:

১। শরীরে অতিরিক্ত ওজন

২। শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের অভাব

৩। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ না করা

৪। কোনোভাবে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হলে যেমন উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে কিংবা হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনের সমস্যা হলে

৫। ডায়াবেটিসের মাত্রা অনেকদিন ধরে বেশি থাকলে

৬। জন্ম নিয়ন্ত্রণ ওষুধ বা কোনো হরমোনাল ওষুধ সেবনের কারণে

৭। নিয়মিত মাদক (হিরোইন, কোকেইন জাতীয়) সেবন করলে

৮। রক্তে অ্যামাইনো এসিড অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে

৯। নিয়মিত ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন করলে

১০। মানসিক হতাশা বেড়ে গেলে।

ব্রেইন স্ট্রোক প্রতিরোধে:

১। স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে

২। নিয়মিত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে

৩। মাদক সেবন বন্ধ করতে হবে

৪। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

নিয়মতান্ত্রিক ধারায় স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করে মরণব্যাধি স্ট্রোকের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করা সম্ভব।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.