যে কারণে বাড়ছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের শেয়ার দর : তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশে আইন লঙ্ঘন

শেয়ারবাজার রিপোর্ট : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ইউনাইটেড এয়ারওজের শেয়ার দর গত ৩০ এপ্রিল থেকে ২৫ মে পর্যন্ত ৪৪.৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে জুন ক্লোজিং এ কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিক ( জুলাই’১৪-মার্চ’১৫) আর্থিক প্রতিবেদন এখনো প্রকাশ করা হয়নি।নিয়মানুযায়ী এ কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় অতিক্রম হয়ে গেছে। অথচ আইন লঙ্ঘন করে কোম্পানিটি এখনো তা প্রকাশ করেনি।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে এ কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধিতে যে ইস্যুটি কাজ করছে সেটি হলো ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ লন্ডনের একটি কোম্পানির সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চার ইক্যুইটি গঠন করতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বিএসইসিতে কোম্পানির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। যদি বিএসইসি অনুমোদন দেয় তাহলে কোম্পানির ব্যবসার পরিধি অনেক বৃদ্ধি পাবে। এ কারণে এ কোম্পানির শেয়ার দরে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিদেশি ফান্ড আনয়নের জন্য কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের নতুন গন্তব্য থেকে বাংলাদেশে, এমনকি সিলেটেও সরাসরি ফ্লাইট চালানোর পরিকল্পনা গ্রহণের বিষয়টি জানানো হয়। এ লক্ষ্যে বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যবসার পরিধি বাড়াতে প্রবাসীদের বিনিয়োগ করার জন্য আহ্ববান জানিয়েছে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসবিরুল চৌধুরী।
এসময় তাসবিরুল আরও বলেন, বোয়িং ও এয়ারবাসের মতো বিলাসবহুল এবং অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ যুক্ত করার মাধ্যমে কোম্পানির বহরের আকার দ্বিগুণ করতে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি অর্থের প্রয়োজন হবে। নতুন উড়োজাহাজ দিয়ে লন্ডনের গ্যাটউইক, বার্মিংহাম ও ম্যানচেস্টার থেকে সিলেট ও ঢাকায় সরাসরি ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা কোম্পানির রয়েছে।
এদিকে কোম্পানির ব্যবসায়িক অবস্থান বোঝাতে গিয়ে অভ্যন্তরীণ প্রায় সব রুট ছাড়াও বর্তমানে ঢাকা থেকে কলকাতা, দুবাই, কাঠমান্ডু, জেদ্দা, কুয়ালালামপুর, মাস্কট, সিঙ্গাপুর ও ব্যাংককে ইউনাইটেডের উড়োজাহাজ চলছে বলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন। ‘ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডে’ বিনিয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য কিংবা অন্যান্য দেশে বসবাসরত প্রবাসীরা কোম্পানির অংশীদার হতে পারবেন বলে জানান তাসবিরুল চৌধুরী।
সেই ধারাবাহিকতায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চার ইক্যুইটি গঠন করার উদ্যোগ নেয়া হয়। যদিও এখনো এটি গঠন করা হয়নি। কিন্তু এর প্রভাব বর্তমানে এ কোম্পানির শেয়ার দরে পড়ছে।
অথচ নিয়ম ভঙ্গ করে কোম্পানিটি তৃতীয় প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে না। ২০০৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বিএসইসির জারি করা নোটিফিকেশনের ২ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে,লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ছাড়া অন্যান্য ইস্যুয়ার কোম্পানিকে তাদের প্রথম প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন ৪৫ দিন এবং তৃতীয় প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন ৩০ দিনের মধ্যে কমিশন এবং স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হবে।
নিয়মানুযায়ী এ কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন জমা দিতে হবে ৩০ এপ্রিল’১৫ তারিখের মধ্যে। কিন্তু প্রায় দু’মাস হতে চললেও কোম্পানিটি তৃতীয় প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেয়নি।
এ ব্যাপারে কোম্পানির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শেয়ারবাজার নিউজ ডটকমকে জানান, বিএসইসি থেকে আমরা আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় বাড়িয়ে এনেছি। আগামী ৫ জুনের মধ্যে কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/সা