আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

৩০ নভেম্বর ২০২০, সোমবার |

kidarkar

খেলাপি ঋণ সাড়ে ৯৪ হাজার কোটি টাকা, মোট ঋণের ৯%

শেয়ারবাজার রিপোর্ট: সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ সুবিধা ও বিভিন্ন ছাড়ের মাধ্যমে কমে এসেছে ব্যাংক খাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণের পরিমাণ। গত তিন মাসের ব্যবধানে (সেপ্টেম্বর শেষে) খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৭২৬ কোটি টাকা কমে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি ৪৭ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, গত তিন মাসে মোট খেলাপি ঋণ কিছুটা কমে এসেছে। সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। যা বিতরণকৃত মোট ঋণের ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকেরে তথ্য অনুযায়ী, মোট খেলাপির মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের অংশ ৪২ হাজার ৮৩৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। যা বিতরণকৃত মোট ঋণের ২২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ খেলপিতে পরিণত হয়েছে। যার পরিমাণ ৪৫ হাজার ৩৬ কোটি ৮৫ লাখ টাক। এছাড়া বিদেশি এবং বিশেষায়ীত ব্যাংকগুলোর খেলাপি হওয়া ঋণের পরিমাণ দুই হাজার ৪৮ কোটি ৬৬ লাখ ও চার হাজার ৫২০ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

চলতি বছরের মার্চ থেকে দেশে মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যায়। এই সময়ে ঋণ খেলাপিদের বেশ কিছু সুবিধা দিয়েছে সরকার। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত কিস্তি না দিলেও খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হতে হচ্ছে না তারা।

গত বছরের ১৬ মে ঋণ খেলাপিদের মোট ঋণের ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১০ বছরে পরিশোধের সুযোগ দেয় সরকার। ‘বিশেষ’ ওই সুবিধার আওতায় জুন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলো নবায়ন করেছে। এর অর্ধেকই করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো।

এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিয়েও গত বছর বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ৭৫ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা পুনঃতফসিল করা হয়েছে। এর বাইরে জুন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ অবলোপন (রাইট অফ) করেছে ব্যাংকগুলো। অর্থাৎ খেলাপি ঋণের হিসাব থেকে এই অর্থ বাদ যাবে, যদিও তা আর ফেরত আসছে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকই আরেক তথ্যে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০ জন ঋণগ্রহীতা আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে রেখেছেন। ফলে ঋণ খেলাপি হিসেবে তাদের নাম বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ তথ্য ব্যুরোতে (সিআইবি) উল্লেখ করা হয় না। এ রকম ঋণের পরিমাণ এখন ৮০ হাজার কোটি টাকার মতো।

এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এতো খেলাপির মধ্যে তিন মাসে দুই হাজার কোটি কমাটা খুব বেশি গুরুত্ব বহন করেনা। তবে আরও কিছু সময় দেখে বোঝা যাবে অবস্থাটা কেমন দাঁড়াবে। কমে আসাটা ইতিবাচক। খেলাপিদের অনেকেই ঋণ পুনঃতফসিলের মাধ্যমে নতুন করে প্রনোদনার ঋণ নিতে চাচ্ছে। ফলে ডাউন পেমেন্ট হিসেবে কিছু টাকা আদায় হয়েছে। তাছাড়া চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের ঋণ আদায়ে শিথীলতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই সময় শেষে মোট খেলাপি বৃদ্ধির জোর আশঙ্কা রয়েছে।

উল্লেখ্য জুন মাস শেষে মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ খেলাপি ঋণ ছিল।

 

 

শেয়ারবাজার নিউজ/এন

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.