বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর
শেয়ারবাজার ডেস্ক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের পর কুষ্টিয়ায় এবার ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী নেতা বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে কুমারখালী উপজেলার কয়া মহাবিদ্যালয়ে স্থাপিত ভাস্কর্যটির নাক ও ডান গালের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়। শুক্রবার সকালে বিষয়টি চোখে পড়লে এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার পর জেলা প্রশাসন জরুরি সভা ডেকে যেসব প্রতিষ্ঠানে ভাস্কর্য আছে, সেসব প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি লাগানোসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেয়। তবে কয়া মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেনি।
এ ব্যাপারে মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ বলেন, পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন না থাকায় তিনি বাঘা যতীনের ভাস্কর্যের আশপাশে সিসিটিভি লাগাতে পারেননি।
পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কেন্দ্রীয় তাঁতী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট নিজামুল হক চন্নু বলেন, সিসিটিভি কেনার ব্যাপারে পর্ষদের আগামী সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। একটা স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সময়ক্ষেপণ করা হলো কেন, এ প্রশ্নের জবাবে চুপ থাকেন তিনি।
কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে কয়া মহাবিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট নিজামুল হক চন্নু, অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ, নৈশপ্রহরী খলিলুর রহমানসহ চারজনকে আটক করা হয়।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য কারসেদ আলম বলেন, কুষ্টিয়া শহরে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার পর কলেজ কর্তৃপক্ষের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভির আরাফাত বলেন, ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত খুঁজে বের করা হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতির বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সবার কাছে বাঘা যতীন নামেই পরিচিত। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ১৯১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ইংরেজ পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে নিহত হন তিনি। কয়া গ্রামে তার বাস্তুভিটায় কয়া মহাবিদ্যালয়ে কয়েক বছর আগে স্থাপন করা হয় আবক্ষ ভাস্কর্যটি।
শেয়ারবাজার নিউজ/মি