আজ: মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৯ ডিসেম্বর ২০২০, শনিবার |

kidarkar

আইপিও আনতে ব্যর্থ ৩ মার্চেন্ট ব্যাংককে বিএসইসির সতর্কবার্তা

আতাউর রহমান: শেয়ারবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে নতুন কোম্পানি আনতে ব্যর্থ হওয়ায় ৩টি মার্চেন্ট ব্যাংককে সতর্কবার্তা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সূত্র মতে, মার্চেন্ট ব্যাংক ৩টি সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে।মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো গত ২ বছরে একটি আইপিও আনার প্রস্তাব বিএসইসির কাছে জমা দেয়নি। ফলে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো হলো- বেঙ্গল ইনভেসমেন্ট, এক্সিম ইসলামী ইনভেস্টমেন্ট এবং পিএলএফএফ ইনভেস্টমেন্ট।

সূত্রে মতে, বেঙ্গল ইনভেস্টমেন্ট ২০১২ সালে এবং এক্সিম ইসলামী ইনভেস্টমেন্ট ২০১০ সালে সর্বশেষ ইস্যু এনেছে। এছাড়া পিএলএফএস ইনভেস্টমেন্ট গত ৩ বছরেও একটি ইস্যু আনতে পারেনি।

এ কারণে সম্প্রতি ওই ৩টি মার্চেন্ট ব্যাংকের কাছে ইস্যু না আনার কারণ জানতে চেয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে বিএসইসি। প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের যুক্তিযুক্ত ব্যাখাও দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিএসইসি সার্বিক দিক বিবেচনা করে ৩টি মার্চেন্ট ব্যাংকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তথ্য মতে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যান্ড পোর্টফোলিও ম্যানেজার) রুলস, ১৯৯৬ অনুযায়ী, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ২ বছরে নূন্যতম ১টি আইপিও ইস্যু জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। তবে গত ২ বছরে নিবন্ধিত ওই ৩টি মার্চেন্ট ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য কোনো কোম্পানির প্রস্তাব বিএসইসিতে জমা দেয়নি। ফলে মার্চেন্ট ব্যাংক ৩টি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যান্ড পোর্টফোলিও ম্যানেজার) রুলস, ১৯৯৬ এর রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট ইস্যুর সেকশন ১১ লঙ্ঘন করেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির লক্ষ্যে কোম্পানিগুলো ইস্যু ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠিত বড় মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে বেছে নিয়ে থাকে। এতে ছোট মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো শেয়ারবাজারে নতুন কোম্পানি আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। এছাড়া পুঁজিবাজারে যেকোনো কোম্পানিকে আনতে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বেশ লিয়াজোঁর প্রয়োজন। যে কাজটা অনেক মার্চেন্ট ব্যাংক সঠিকভাবে করতে পারে না। এ কারণে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো ইস্যু আনতে পারছে না। এ কারণেই ইস্যু ব্যবস্থাপনার চেয়ে পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা ও অবলেখনে (আন্ডার রাইটিং) আগ্রহ বেশি রয়েছে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর।

এ বিষয়ে এক্সিম ইসলামী ইনভেস্টেমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবু হেনা মো. মহসিন বলেন, ‘শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির লক্ষ্যে কোম্পানিগুলোর কিছু চাওয়া-পাওয়া থাকে। ওই চাওয়া-পাওয়া পূরণ করতে না পারলে কোম্পানিগুলো অন্য ইস্যু ম্যানেজার পরিবর্তন করে ফেলে। এরকম বিভিন্ন কারণে শেয়ার বাজারে আইপিও ইস্যু আনা সম্ভব হয়নি। তবে ভালো আইপিও ইস্যু আনতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

এদিকে, পিএলএফএফ ইনভেস্টমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ‘মার্কেটে কোম্পানির সংখ্যা কম, আর ইস্যু ম্যানেজ্যারের সংখ্যা বেশি রয়েছে। তাই নতুন ইস্যু আনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমাদের নতুন ইস্যু আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলে, ‘ইস্যু ব্যবস্থাপনার অনুমোদন থাকার পরও কিছু মার্চেন্ট ব্যাংক পাবলিক ইস্যু ব্যবস্থাপনায় অনাগ্রহী। তারা শুধু পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা ও অবলেখনে আগ্রহী। তাই এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বিএসইসি। যেসব মার্চেন্ট ব্যাংক দুই বছরের মধ্যে একটি ইস্যু আনতে পারেনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.