আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৩ মার্চ ২০২১, মঙ্গলবার |

kidarkar

বিডি ওয়েল্ডিংয়ের পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে বিএসইসি

আতাউর রহমান: শেয়ারবাজারে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে তালিকাভুক্ত প্রায় ৫ বছর ধরে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করা কোম্পানি বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোডসের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সকল পরিচালকদের কাছে পাঠিয়েছে বিএসইসি।

সূত্র মতে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে ‘জেড’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটিকে আরো শক্তিশালী করতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই স্বতন্ত্র পরিচালক কোম্পানিটিকে সচল করার পাশাপাশি আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে কাজ করবে।

সম্প্রতি কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বাদ দিয়ে ২ জনকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কোম্পানিটিতে আরো ৪ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। ওই ৪ জনের মধ্যে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) পক্ষ থেকে মনোনীত একজনকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে রাখা হয়েছে। ফলে কোম্পানিটির পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ জনে।

বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোডসের জন্য বিএসইসির মনোনীত নতুন ৩ জন স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন- কাজী শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহমেদ ও নুসরাত খান। আর কোম্পানিটিতে ইতোপূর্বে নিয়োগ দেওয়া ২ জন স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন- এ এফ এম আবদুল মঈন ও মো. সাইফুদ্দিন খান। এছাড়া আইসিবির পক্ষ থেকে মনোনীত স্বতন্ত্র পরিচালক হলেন মো. রফিকুল ইসলাম। এর মধ্যে কাজী শফিকুল ইসলাম কোম্পানিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, শেয়ারহোল্ডারদের নিয়মিত লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোডস ২০১৬ সালের ৪ মে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হয়েছে। এরপর থেকে প্রায় ৫ বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। এ জন্য কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ব্যর্থতা রয়েছে বলে মনে করে বিএসইসি। তাই এ জাতীয় কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের জন্য গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর নির্দেশনা জারি করে বিএসইসি।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে বিডিওয়েল্ডিং কোনো মুনাফা ছাড়াই ১ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে। এতে সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন করেছে কোম্পানিটি। এছাড়া স্থায়ী সম্পদ বিক্রির মাধ্যমে নগদে ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা লেনদেন করে অনিয়ম করেছে। এছাড়া ব্যালেন্স শীটে ‘ল্যান্ড অ্যান্ড বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন হেল্ড ফর সেল’ দেখানো সত্ত্বেও ক্যাপিটাল গেইন হিসেবে ৩৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা দেখিয়ে বিভ্রান্তকর তথ্য প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি।

এছাড়া বিডিওয়েল্ডিংয়ের স্থায়ী সম্পদ, মজুদ পণ্য, দেনাদার, ডেফার্ড ট্যাক্স নিয়ে নিরীক্ষকের আপত্তিকর মন্তব্যের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। একইসঙ্গে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ওই সকল সম্পদের বিষয়ে কোন প্রমাণাদি সরবরাহ না করার বিষয়টিও জানানো হয়েছে। এতে করে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে সম্পদের অসত্য তথ্য সরবরাহ করে থাকতে পারে বলে মনে করছে কমিশন। এছাড়া কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-৩২ লঙ্ঘন করে প্রিলিমিনারি ব্যয়, আইপিও ব্যয়, আয়ের অবরাদ্দকৃত ব্যয়, সুদ ইত্যাদিকে বিলম্বিত ব্যয় (ডেফার্ড এক্সপেন্স) হিসেবে দেখিয়েছে। আর কোম্পানিটিতে অদাবিকৃত ৩৩ লাখ টাকার লভ্যাংশ থাকলেও প্রদানের সক্ষমতা নেই বলে জানিয়েছে বিএসইসি।

এদিকে কোম্পানিটিতে ৬৮.৯৯ শতাংশ শেয়ারের মালিকানায় রয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা। এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে পড়াকে বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতিকারক ও অপ্রত্যাশিত বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছে বিএসইসি।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘পুঁজিবাজারে উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে বিভিন্ন দুর্বল কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। নানা কারণে বর্তমানে উৎপাদন কার্যক্রম নেই এমন কোম্পানিগুলোকে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এদিকে বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বিডি ওয়েল্ডিং। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তর পর থেকে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কোনো নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেনি।

১ টি মতামত “বিডি ওয়েল্ডিংয়ের পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে বিএসইসি”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.