ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ, মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার
জাতীয় ডেস্ক: সাভারের আশুলিয়ায় একটি মাদ্রাসা ছাত্রীকে (৪) ধর্ষণ চেষ্টা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির মালিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষক জালাল উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার দুপুরে এ ঘটনায় গ্রেফতার আসামিকে ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং ভুক্তিভোগী শিশুকে মেডিকেল পরিক্ষার জন্য ওয়ান স্টপ ক্রাইস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, গত ২৬ মার্চ রাত ৯টার দিকে আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকায় অবস্থিত ইসলাহুল উম্মা মাদ্রাসায় এ ধষর্ণ চেষ্টার ঘটনা ঘটে। পরে রাত ২টার দিকে পুলিশ এসে আসামিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে ভুক্তোভোগী শিশুর বাবা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতার জালাল উদ্দিন বরিশাল জেলার বলে জানা গেছে। সে দুই থেকে তিন মাস আগে এই মাদ্রসায় চাকরি নেন।
স্থানীয়রা ও শিশুর পরিবার জানায়, ১৫ দিন হলো শিশুটিকে সেই মাদরাসায় ভর্তি করিয়েছে তার পরিবার। মা-বাবা দুজনই চাকরি করায় মাদারাসাতেই রাখা হয় শিশুটিকে। গতকাল রাত ৯টার দিকে শিশুটিকে চকলেটের কথা বলে ডেকে নেয় জালাল উদ্দিন নামের সেই শিক্ষক। তারপর শিশুটির শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে আঙ্গুল দেওয়াসহ জোরপূর্বক ধষর্ণ চেষ্টা করে। পরে শিশুটি তার মায়ের কাছে সব জানায়। রাতেই স্থানীয়রা পুলিশকে জানালে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ রয়েছে। সেই ঘটনা মাদ্রাসার মালিক সৈয়ব মুন্সি সমাধান করার কথা থাকলেও তিনি তা করেনি। জালালকে চাকরিতে বহাল রেখেছেন।
ভুক্তোভোগী শিশুর মা বলেন, আমার বাচ্চা গতকাল রাতে বাসায় আসে। তার চলাফেরায় আমি একটু সন্দেহ করে বসি। পরে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সব বলে দেয়। আমার বাচ্চার সাথে এই কাজ করাতে সে ভয়ে আর প্রসাব করতে যায় না। কারণ প্রসাব করতে গেলে তার জ্বালাপোড়া করে বলে জানায় শিশুটি। আমি এই শিক্ষকের বিচার চাই।
শিশুটির পরিবার যে বাড়িতে বসবাস করে সেই বাড়ির ম্যানেজার সুজনকে বিভিন্নভাবে মেনেজ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শেষমেষ আর্থিক দিকে দিয়েও ইঙ্গিত করে মাদরাসার মালিক সৈয়ব মুন্সি।
এ বিষয়ে সুজন বলেন, আমি ঘটনা শোনার পর পর মাদরাসায় যাই। পরে ভেতর থেকে কে যেনো তালা মেরে দেয়, আমাকে ঢুকতে দেয় না। পরে সৈয়ব মুন্সি আমাকে একটা রুমে নিয়ে যায় এবং বলে ভাই কোনাভাবে বিষয়টি মেনেজ করেন। আমাকে শুধু হাতের ভেতর টিপ দেয় আর টাকার অঙ্কের ইঙ্গিত করে দেখায়। পরে তার কথা না শুনে স্থানীয়রা সবাই মিলে অভিযুক্তকে ধরে জিজ্ঞাসা করলে ধর্ষণ চেষ্টার কথা স্বীকার করে জালাল। এসময় পুলিশকে খবর দিলে জালালকে আটক করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ইসলাহুল উম্মা মাদরাসার পিন্সিপাল ও মালিক সৈয়ব মুন্সির সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। আসলে যে পাপ করবে তার বিচার হবে। আসলে অনেকেই তো অনেক কিছু করে কেউ ধরা খায় কেউ বা খায় না।
এ সময় তাকে সেই শিক্ষকের আগের ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে তাকে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিলন ফকির বলেন, এ ঘটনায় এলাকাবাসী মাদ্রাসার শিক্ষককে আটক করে আমাদের কাছে সোর্পদ করে। পরে তাকে থানায় নিয়ে আসা হলে মেয়েটির বাবার দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখি আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া শিশুটিকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।