আজ: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৭ অগাস্ট ২০২১, মঙ্গলবার |

kidarkar

একযুগ পরে বাতিল হচ্ছে ওটিসি

শেয়ারবাজার ডেস্ক: ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই-সিএসই) ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ওভার দ্যা কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট একযুগ পরে বাতিল হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তবে মার্কেট সেনসিভিটি থাকার কারণে কোম্পানিগুলোর নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।

বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র বলছে, কোম্পানিগুলোকে স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্ম (এসএমই) ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) স্থানান্তর করা হবে। এ জন্য একটি খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।

মূলত কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা ও সম্ভাবনা যাচাই করে এ স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এছাড়া যেসব কোম্পানি শেয়ারবাজারে আর থাকতে চায় না, সেগুলোকে ওটিসি মার্কেট থেকে তালিকাচ্যুত করা হবে। ডিএসই ও সিএসইর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শিগগিরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

২০০৯ সালের উভয় শেয়ারবাজারে ওটিসি মার্কেট চালু করা হয়। বিশেষ করে উৎপাদনে না থাকা, নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করা, কাগুজে শেয়ার ডিমেট না করা, নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দেওয়া, লভ্যাংশ প্রদান না করা এবং সিকিউরিটিজ আইন যথাযথভাবে পরিপালন না করা কোম্পানিগুলোকে মূল মার্কেট থেকে ওটিসিতে শাস্তি স্বরূপ স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে কোম্পানিটি বা উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ওটিসি মার্কেটে পাঠানো হলেও কার্যত শাস্তি পাচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

বর্তমানে ডিএসই’র ওটিসি মার্কেটে ৬১টি ও সিএসই’র ওটিসি মার্কেটে ৪৭টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। ওইসব কোম্পানির মধ্যে প্রাথমিক ভাবে স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্মে (এসএমই) ১০টি, অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে ৩২টিকে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এছাড়া এক্সিট প্ল্যান বা তালিকাচ্যুত আওতায় রয়েছে ১৯টি কোম্পানি। এ বিষয়ে শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করবে বিএসইসি।

তবে স্মলক্যাপ প্ল্যাটফর্ম ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে স্থানান্তরযোগ্য কোম্পানিগুলোর যে খসড়া তালিকা করা হয়েছে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ওই তালিকায় আরো কোম্পানির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ওটিসির যেসব কোম্পানি বর্তমানে উৎপাদনে রয়েছে তারা এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে। এছাড়া ওটিসিতে কিছু সম্ভাবনাময়ী কোম্পানি রয়েছে, যাদের শেয়ার কিনতে আগ্রহী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। তাই ওইসকল কোম্পানিকে সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সে হিসেবে স্মলক্যাপ প্ল্যাটফর্মে ১৫টি বা তার অধিক কোম্পানি এবং অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে ৩৫টির অধিক কোম্পানি স্থানান্তর করার চিন্ত-ভাবনা করছে বিএসইসি। আর কিছু কোম্পানি ওটিসি থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছে। তাদেরকে বের হয়ে যাওয়ার পথ করে দেওয়া হবে।

এছাড়া এসএমই ও এটিবি বোর্ডে যেসব কোম্পানি থাকবে, সেগুলো প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে না। কোম্পানিগুলো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের থেকে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। পরবর্তীতে কোম্পানিগুলো যদি আর্থিক অবস্থা ভালো হয়, তখন আইপিওর মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করার সুযোগ দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এ বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেক দিন ধরে চিন্তা-ভাবনা ও কাজ করছি। ওটিসিতে অবস্থারত কোম্পানিগুলোকে বছরের পর বছর বসিয়ে রাখা যাবে না। তাই কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা অনুযায়ী স্মলক্যাপ প্ল্যাটফর্ম ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে স্থানান্তর করা হবে। পাশাপাশি যেসব কোম্পানি শেয়ারবাজার থাকতে অনিচ্ছুক তাদেরকে বের হয়ে যাওয়ার পথ করে দেওয়া হবে। তাই এ বিষয়টি নিয়ে আমরা আরো বেশি চিন্তা-ভাবনা করছি।’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই ধারাবাহিক অর্থিক অবস্থার অবনতির কারণে শেয়ারবাজারের মূল মার্কেট থেকে ওটিসিতে সর্বশেষ স্থানান্তর হয়েছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বিডি। আর আর্থিক সক্ষমতা ফেরায় ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে সর্বশেষ ফিরেছে- তমিজুদ্দিন টেক্সটাইল, বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার, পেপার প্রসেসিং ও মুন্নু ফেব্রিক্স।

২২ উত্তর “একযুগ পরে বাতিল হচ্ছে ওটিসি”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.