আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৮ অগাস্ট ২০২১, শনিবার |

kidarkar

প্রণোদনার ঋণ বণ্টনে নয়ছয় হয়েছে: সানেম

শেয়ারবাজার ডেস্ক: ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) জন্য বরাদ্দ করা প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ বণ্টনে নয়ছয় হয়েছে বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেম।

সংস্থাটি বলছে, ২৯ ভাগ এসএমই প্রতিষ্ঠান মনে করে, ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ দাবি করা হয়েছে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ৬৫ ভাগ উদ্যোক্তাই নিজস্ব মূলধন ব্যবহার করেছেন, যা পরবর্তী সময়ে সংকট তৈরি করবে।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং এশিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পরিচালিত ‘ব্যবসায় আস্থা জরিপ’-এ এ তথ্য উঠে এসেছে।

শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জরিপের এ ফল প্রকাশ করা হয়। ৫০১টি শিল্প ও সেবাপ্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা কিংবা তাদের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে গত জুলাই মাসে জরিপটি পরিচালনা করে সানেম।

জরিপ পরিচালনা করে সানেম বলছে, গত এপ্রিলে থেকে জুন প্রান্তিকে ব্যবসায় আস্থায় সংকট বেড়েছে। তবে জুলাই-সেপ্টেম্বরে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত আছে। বলা হয়, বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে করোনার টিকা প্রাপ্তি তুলনামূলক বেশি। তবে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পে হার খুবই কম।

সংবাদ সম্মেলনে জরিপের প্রক্রিয়া ও ফলাফল তুলে ধরেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান।

তিনি বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের সঠিক বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে ক্ষতি কতটুকু হলো, সেই তথ্যও বের করতে হবে। তিন ভাগের এক ভাগ এসএমই প্রতিষ্ঠান প্রণোদনার ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ দাবির কথা বলেছে। এটি ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অন্তরায়। এসএমই ঋণ কারা পাচ্ছে, কেন বেশিসংখ্যক উদ্যোক্তা ঋণ পেলেন না, তারও জরিপ হওয়া প্রয়োজন।’

সেলিম রায়হান বলেন, জরিপে অংশ নেয়া ২৯ শতাংশ উদ্যোক্তা কিংবা তাদের প্রতিনিধিরা ঘুষ দাবির অভিযোগ করেছেন। ৪৭ শতাংশ হ্যাঁ কিংবা না কোনোটাই বলেননি। মৌনতা সম্মতির লক্ষণ হিসেবে নিলে এরাও ঘুষের শিকার বলে ধরে নেয়া যায়। তারা হয়তো নানান দিক থেকে ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই সরাসরি হ্যাঁ বলতে চাননি। আর মাত্র ২৪ শতাংশ জানিয়েছেন, তাদের কাছে ঘুষ চাওয়া হয়নি।

ঘুষের দাবিসহ এ রকম বিভিন্ন কারণে জরিপে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জুলাই পর্যন্ত ৭৯ শতাংশ প্রণোদনা প্যাকেজের বাইরে রয়ে গেছে। অর্থাৎ মাত্র ২১ শতাংশ প্যাকেজ থেকে ঋণসুবিধা পেয়েছে।

করোনা সংক্রমণের ফলে লকডাউন দেয়ার বিষয়ে সেলিম রায়হান বলেন, ‘লাগাতার লকডাউনে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। তাই কৌশল পরিবর্তন করা প্রয়োজন। নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট আসছে, দেয়া হচ্ছে লাগাতার লকডাউন। কিন্তু এতে স্থবির হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। যেহেতু খুব কম সময়ে করোনা চলে যাবে না, তাই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে লকডাউনেও উৎপাদন চালু রাখার কৌশল বের করতে হবে।’

তিনি বলেন, করোনার মধ্যে কীভাবে শিল্পোৎপাদন চালু রাখা যায়, সেই কৌশল খুঁজে বের করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারণে খাতসংশ্লিষ্টদের যুক্ত করার বিকল্প নেই। প্রশাসননির্ভর লকডাউন না দিয়ে সামগ্রিক চিন্তা করে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

তিনি বলেন, লকডাউনের মধ্যে গার্মেন্টস শিল্প চালু রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে অন্যরা নয় কেন? শ্রমিক এবং মালিকদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা খুঁজে এর সমাধানের পথ বের করতে হবে। শ্রমিকদের চলাচল এবং তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কীভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, সে বিষয়ে পথ খুঁজে বের করতে হবে।

সেলিম রায়হান আরও বলেন, রিকভারি অর্থাৎ উত্তরণ-প্রক্রিয়া থমকে আছে। এ ক্ষেত্রে টিকার বিকল্প নেই। ৭৫ ভাগ শ্রমিকই এক ডোজ টিকা পায়নি।

১ টি মতামত “প্রণোদনার ঋণ বণ্টনে নয়ছয় হয়েছে: সানেম”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.