পিইসি পরীক্ষা বাতিলের দাবি
শেয়ারবাজার ডেস্ক: সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সমাবেশে সরকারের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, হুট করেই দুই দিন আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে পিইসি পরীক্ষা হবে। এটা সরকারের কেমন সিদ্ধান্ত। যখন ১৭ মাস বাচ্চারা পড়াশোনার বাইরে, তখন একবার ঘোষণা দিল পরীক্ষা হবে না। আবার ঘোষণা দিয়েছে হবে। এত ছোট বাচ্চারা এই মানসিক চাপ কীভাবে সহ্য করবে।
করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর পিইসি বা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা না নেয়ার কথা বলা হলেও এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সভায় এবার পিইসি পরীক্ষা না নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান বক্তারা।
গত সোমবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানান, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে নভেম্বর-ডিসেম্বরে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাসহ সব ক্লাসের বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে।
জুনে তিনিই বলেছিলেন, এবার পিইসি পরীক্ষাও হবে না। এর পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের ‘বাড়ির কাজ’ দিয়ে মূল্যায়নের মাধ্যমে নতুন শ্রেণিতে তুলে দেয়া হবে। কাউকে অটোপাস দেয়া হবে না।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, হুট করেই দুই দিন আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে পিইসি পরীক্ষা হবে। এটা সরকারের কেমন সিদ্ধান্ত। যখন ১৭ মাস বাচ্চারা পড়াশোনার বাইরে, তখন একবার ঘোষণা দিল পরীক্ষা হবে না। আবার ঘোষণা দিয়েছে হবে। এত ছোট বাচ্চারা এই মানসিক চাপ কীভাবে সহ্য করবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, পিইসি পরীক্ষা সব মহলে শৈশব ধ্বংসকারী পরীক্ষা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়ন করা কিংবা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাপারে আগ্রহী করে গড়ে তোলার কোনো উদ্দেশ্যই সরকার বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
পিইসি পরীক্ষা চালুর মধ্য দিয়ে প্রাথমিক স্তরেই শিক্ষাব্যবসা আরও ত্বরান্বিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, ভালো ফলের প্রতিযোগিতায় পড়ে অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে সন্তানকে কোচিং-প্রাইভেট টিউটরের কাছে পড়াচ্ছেন। নোট-গাইড বইয়ের ওপর ব্যাপক নির্ভরশীলতা বেড়েছে।
মাসুদ রানা বলেন, যে বয়সে শিক্ষার্থীদের কৌতূহলী হয়ে জগৎ-জীবনের রহস্য, তার কার্যকারণ সম্পর্ক, আনন্দদায়ক পাঠের মধ্য দিয়ে কৌতূহল মেটানোর কথা, সেই বয়সে কোমলমতি শিশুরা পরীক্ষার চাপে পিষ্ট। যখন পিইসি চালু করা হলো তখন থেকে শিশু শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সময় পায় না।
পিইসি পরীক্ষা শিক্ষা ব্যবসার প্রসার ঘটাচ্ছে উল্লেখ করে বক্তারা জানান, এতে শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির কারণে অভিভাবকদেরও নাভিশ্বাস উঠেছে। তাই শিক্ষক-শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকরা অনেক আগে থেকেই এই পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন। সরকার শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করছে না।
প্রায় ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর আগামী রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছে।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি জয়দীপ ভট্টাচার্য, দপ্তর সম্পাদক রাকিবুজ্জামান ফরিদসহ আরও অনেকে।