আজ: বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

অবণ্টিত লভ্যাংশ স্থানান্তরের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক বুঝতে পারেনি: বিএসইসি চেয়ারম্যান

শেয়ারবাজার ডেস্ক: পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবণ্টিত লভ্যাংশ স্থানান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংক যে আপত্তি দিয়েছে, তাকে ‘না বুঝে গুলিয়ে ফেলা’ বলে মন্তব্য করেছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।

দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে আমানতের কথা, কিন্তু তহবিলের সঙ্গে ব্যাংকের আমানতের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং ব্যাংকের কাছে লভ্যাংশ হিসেবে যে অবণ্টিত লভ্যাংশ আছে সেটি চাওয়া হয়েছে তহবিলে। এটি নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

১০ মাসের প্রস্তুতি শেষে স্থিতিশীলতা ফান্ড যখন পুঁজিবাজারে কাজে লাগানোর প্রস্তুতি শেষ করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থানের কারণে এই তহবিলের আকার নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

এই তহবিলের মধ্যে একটি বড় অংশ আসার কথা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি এই অর্থ না আসে, তাহলে আরও ছোট হতে পারে।

সোমবার বিএসইসি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ কয়েকটি সংস্থার মধ্যে যে ভার্চুয়াল আলোচনা হয়, তাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অবণ্টিত লভ্যাংশ পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবণ্টিত লভ্যাংশ পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলে স্থানান্তর নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, ব্যাংকের টাকা পুঁজিবাজার তহবিলে দেয়ার ক্ষেত্রে আইনি বাধা আছে। ব্যাংক কোম্পানি আইনে বলা আছে, কেউ ১০ বছর লভ্যাংশ না নিলে সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিতে হবে। পরে সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

এই তহবিল নিয়ে দুই সংস্থার টানাটানিতে মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে বড় ধরনের দরপতন ঘটে। তবে সেদিনই অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের একটি বক্তব্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চিড় ধরা আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করেছে।

সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএসইসির সিদ্ধান্তই সরকারের সিদ্ধান্ত।’

বুধবার সূচকের আবার উত্থানে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘ব্যাংক কোম্পানির আইনের সঙ্গে পুঁজিবাজার তহবিলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা দুটি ভিন্ন বিষয়কে এক করে এলোমেলো করে ফেলেছে। একটা হলো আমানত, একটি হলো লভ্যাংশ।’

দুই সংস্থার মধ্যে টানাটানিতে পুঁজিবাজারে সূচকের যে পতন হয়েছে, তাতে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলেও মনে করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ‘উত্থানের পর পতন হলেই পুঁজিবাজারের জন্য ভালো। আর যে পরিমাণ সূচক কমছে বা লেনদেন কমেছে সেটি স্বাভাবিক। এখানে আতঙ্কিত হওয়ার মতো, লসে শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার মতো কোনো বিষয় নেই।’

লেনদেন খানিকটা কমলেও সেটি নিয়েও দুর্ভাবনার কারণ নেই বলে মনে করেন শিবলী রুবাইয়াত।

গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি ছিল। তবে গত দুই দিন দুই হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি লেনদেন হয়েছে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘লেনদেন যে পরিমাণ কমেছে, সেটাকে বেশি বলেন কীভাবে। এটুকু তো কমতেই পারে। বাজার আবার ঊর্ধ্বগতিতে ফিরলেই লেনদেন বেড়ে যাবে।’

গত বছরের শেষে এই তহবিল গঠনের আলোচনা ওঠে। আর ২৭ জুন প্রজ্ঞাপন জারির মধ্য দিয়ে এই তহবিল গঠন নিশ্চিত হয়। কিন্তু এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তির খবর আসেনি।

পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করে, এমন কোনো সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এককভাবে নেয়া উচিত নয় বলেও মনে করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক তার ব্যাংকগুলোকে সুপারভাইজ করবে। এগুলো প্রেস-পাবলিক না করে ভেতরে ভেতরে নিজেরা মনিটরিং, সুপারভিশন করা ভালো হয়। না হলে পুঁজিবাজারের জন্য খুব ক্ষতি হয়। নেগেটিভ নিউজগুলো আসলে পাবলিকের মধ্যে একটি পেনিক (আতঙ্ক) তৈরি করে। আমরা আশা করব, ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে।’

সূত্র: নিউজবাংলা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.