খেলাপি ঋণ পরিশোধের সময় বাড়ল ডিসেম্বর পর্যন্ত
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল বা এককালীন পরিশোধ (ওয়ান টাইম এক্সিট) সুবিধার সময় আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সোমবার (৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ ‘ঋণ শ্রেণিকরণ’ শিরোনামে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে। এতে স্বাক্ষর করেন মহাব্যবস্থাপক মাকসুদা বেগম।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বৃদ্ধি পাওয়ায় এককালীন এক্সিট সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ গ্রহীতার ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এককালীন এক্সিট সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ ও বিনিয়োগের বিপরীতে প্রদেয় অর্থ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা যাবে। এ ক্ষেত্রে এককালীন এক্সিট সুবিধা বহাল থাকবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, ঋণ পরিশোধের সুবিধা ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর ফলে এককালনী এক্সিট সুবিধা নেওয়া গ্রাহকরা গত বছরে যে অংশটুকু পরিশোধ করতে পারেননি তা চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করলে এককালীন এক্সিট সুবিধা বহাল থাকবে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) দাবির প্রেক্ষিতে এই সুবিধা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ননের কাছে এ বিষয়ে চিঠি দেয় বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
চিঠিতে তিনি জানান, বিশেষ সুবিধায় সুদ মওকুফ ও মওকুফোত্তর অবশিষ্ট ঋণ এককালীন পরিশোধের জন্য (এক বছর মেয়াদে) অনেক গ্রাহকের আবেদন ব্যাংকের বোর্ডে অনুমোদন হয়েছিল। কিন্তু করোনা মহামারীর কারনে অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে মধ্যে ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে পারেনি।
জানা গেছে, খেলাপি ঋণ কমাতে ২০১৯ সালের ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা জারি করা হয়।
ওই নীতিমালায় বলা হয়, খেলাপি ঋণের ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে দিয়ে ৯ শতাংশ সরল সুদে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ টানা ১০ বছরে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। যা নিয়ে বিভিন্ন মহলের নিন্দা ও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেয়। এরপর ওই সার্কুলারের স্থগিতাদেশ চেয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আদালতে একটি রিট করা হয়। পরে অবশ্য আদালত এ সুবিধা দেওয়ার পক্ষে রায় দেন।
এ সুবিধার আওতায় স্বাধীনতার পর থেকে যারা ঋণ খেলাপি তাদের এককালীন এক্সিট সুবিধা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে তাদের খেলাপি ঋণের হিসাব হয় ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের এক কালীন হিসাবায়ন ভিত্তিতে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এককালীন পরিশোধ বা এক্সিট সুবিধা নিয়েছেন ৪ হাজার ২২৫ জন গ্রাহক। এসব গ্রাহককে ১ হাজার ৩২২ কোটি টাকার এক্সিট সুবিধা দিয়েছে ব্যাংকগুলো। এর বিপরীতে ডাউনপেমেন্ট বাবদ ১১৫ কোটি টাকা নগদ আদায় করেছে ব্যাংকগুলো। অবশ্য সুদ মওকুফ করা হয়েছে এক হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক্সিট সুবিধা দিয়ে যে টাকা আদায় হবে চেয়ে ২৯৫ কোটি টাকার বেশি সুদ মওকুফ করা হয়েছে।