ডিএনসিসি দখল ও মৃতপ্রায় খালের ৪২টি স্থান পুনঃখনন করবে

জাতীয় ডেস্ক: খাল ও মসজিদের নগরী ঢাকা। মসজিদগুলো থাকলেও দখলের কারণে খালগুলোর অধিকাংশই নাই হয়ে গেছে। যে ক`টি আছে, তাও মৃতপ্রায়। সম্প্রতি সেসব খাল দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এতে করে মৃতপ্রায় খালগুলোতে ফিরছে পানিপ্রবাহ।
দখলকৃত এবং মৃতপ্রায় খাল উদ্ধারের ধারাবাহিকতায় ডিএনসিসি ৪২টি স্থান চিহ্নিত করেছে। এসব খালের সীমানা নির্ধারণ করে সীমানা পিলার বসানোর কাজ করবে সেনাবাহিনী। আর পিলার বসানোর পরে সেই পিলার অনুযায়ী খাল উদ্ধার অভিযানে নামবে সিটি করপোরেশন। মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের সরাসরি নেতৃত্বে এই কাজটি করবে ডিএনসিসির প্রকৌশল বিভাগ।
খাল উদ্ধার ও খনন প্রসঙ্গে ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহবুব আলম বলেন, `ঢাকা উত্তর সিটি এলাকার দখল হওয়া ও মৃতপ্রায় সবগুলো খালের সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে পরিকল্পনা করা হবে। তারপর তা বাস্তবায়ন করা হবে। ম্যাপ অনুযায়ী যেখানে খালের অস্তিত্ব ছিল, বর্তমানে নেই; সেটাই উদ্ধার করার জন্য আমরা কাজ করব। আমাদের এই কাজের সুবিধার জন্য সেনাবাহিনী জরিপ করে খালের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ নির্ধারণ করে সীমানা পিলার বসিয়ে দেবে। তারপরই আমরা ক্রমে সবগুলো দখলকৃত খাল উদ্ধার করা শুরু করবো।`
তিনি আরো বলেন, `উত্তর সিটির আওতায় থাকা খালগুলোর মধ্যে রামচন্দ্র খাল, রামপুরা খাল, কল্যাণপুর খাল, সাগুফতা খাল, ইস্টার্ন হাউজিং খাল, বাইশটেকি খাল, সবুজবাংলা খাল, ভাসানটেক খাল, প্যারিস রোড খাল, মদিনা নগর খাল উল্লেখযোগ্য। এসব খালে নিয়মিত পানি প্রবাহ হয় না। খালগুলোর বিভিন্ন জায়গায় দখলের কারণে পানি আটকে যাচ্ছে। আমরা খুব শিগগিরই খাল উদ্ধারে যাবো। আগামী বর্ষায় খালগুলোতে যাতে পানি প্রবাহ ঠিক থাকে, তার জন্য এই ৪২টি স্পটে জরুরিভাবে খননকাজ করতে হবে। বলা যায়, এটি আগামী বর্ষায় ডিএনসিসি এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য আগাম প্রস্তুতি।`
ডিএনসিসির তথ্য মতে, খালের ডেড স্পট হিসেবে শনাক্ত এবং খননের উদ্যোগ নেওয়া জায়গাগুলোর মধ্যে রয়েছে- মোহাম্মদিয়া হাউজিংয়ের রোড ৩ থেকে ৪, রোড ৬, রহিম ব্যাপারী ঘাটের উত্তর ও দক্ষিণ পাশ, মোহাম্মদিয়া হোমস লিমিটেডের সামনের অংশ, আদাবর সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর অফিসের সামনে ও অফিসের উল্টোদিকে, কল্যাণপুর পাম্প স্টেশনের জলাধারের পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিম পাশ।
এছাড়া ইস্টার্ন হাউজিংয়ে জি ব্লক রোড নম্বর ২ থেকে বায়তুল ইবাদাহ জামে মসজিদ পর্যন্ত, প্লট নম্বর কে ৭ ইস্টার্ন হাউজিং-এর সামনে, এল ব্লক বকুল তলা হোটেল সংলগ্ন, কালসি স্টিল ব্রিজের উত্তর পাশ, এসটিএস থেকে পলাশনগর সবুজবাংলা নতুন ব্রিজ, প্যারিস রোড খালের ডি ব্লক, মিরপুর ১০ ঝুটপট্টি, মিরপুর ১১, মদিনা নগর, অ্যাভিনিউ ৫ সি ব্লক, রামপুরা ব্লক এ রোড ৯, বাড়ি নম্বর- ৬/বি/১, দক্ষিণ বিশিল, ৩য় কলোনি, বাড়ি-৬৫/৪/এ, পঙ্গু হাসপাতাল সংলগ্ন পূর্বপাশ, কল্যাণপুর পাম্প স্টেশনের জলাধার, আবদুল্লাহপুর স্লুইস গেট থেকে উত্তর থানা ব্রিজ, উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর থেকে চন্ডালভোগ ব্রিজ, ফুলবাড়িয়া টেক পাড়া থেকে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টর, আনন্দবাজার থেকে ভাঙ্গা ব্রিজ, বাঁশেরপুল হাবিবুল্লাহ রোডের সামনে, দিগন্ত পেট্রোল পাম্প থেকে কালশি স্ট্রিল ব্রিজ, কালশি রোড ব্রিজ থেকে দক্ষিণ দিকে, মসজিদুল জুমা কমপ্লেক্স থেকে কালশি মেইন রোড, কালশি ব্রিজের উত্তর পাশে কাঁচা রাস্তার কর্নার, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ভবনের পশ্চিম পাশ, ঢাকা রিয়েল এস্টেটের পুরাতন দুটি কালভার্টের নিচে এবং কাদিরাবাদ হাউজিং রোড ২, ৫ ও ৬।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, `ডিএনসিসির খাল উদ্ধারে ৪২টি ডেড স্পট নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখানে খালের নিয়মিত পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নির্ধারিত এই ৪২টি জায়গায় জনগণের সহায়তায় উদ্ধার এবং পরিষ্কার অভিযান চালানো হবে। এ ব্যাপারে ডিএনসিসির প্রকৌশল বিভাগ এবং সেনাবাহিনীও একসঙ্গে কাজ করবে।`