বছর শেষে খেলাপি ঋণ এক লাখ তিন হাজার ২৭৪ কোটি টাকা

এ জেড ভূঁইয়া আনাস: ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকখাতে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ তিন হাজার ২৭৪ কোটি টাকায়, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। বছরজুড়ে নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরেও খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পেয়েছে। খেলাপি ঋণ কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরো তৎপর হতে বলছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) ডিসেম্বর মাস শেষে ব্যাংকখাতের মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ১ হাজার ৭৯৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে এক লাখ ৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা খেলাপিতে পরিণত হয়েছে, যা মোট ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। করোনা শুরুর বছর ২০২০-এর ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ছিল। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে দুই হাজার ১২৪ কোটি টাকা। বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ১৪ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকখাতে খেলাপি কমাতে ঋণ পরিশোধের জন্য নানা রকম সুবিধা দিয়েও এর লাগাম টানা যাচ্ছে না। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকখাতের খেলাপি ঋণ আবারও এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এখন আর নতুন করে কোনো সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না। ঋণ আদায়ে কঠোর হতে হবে ব্যাংকগুলোকে।
প্রতিবেদনে অনুযায়ী, মোট খেলাপির মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে রয়েছে ৪৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ৫১ হাজার ৫২১ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংকগুলোতে দুই হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার খেলাপি হয়ে পড়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রের বিশেষায়িত তিন ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের মধ্যে তিন হাজার ৯৯১ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে পড়েছে।
করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় ২০২০ সালে ঋণগ্রহীতারা কোনো টাকা পরিশোধ না করলেও তাকে খেলাপি দেখাতে পারেনি ব্যাংক। ২০২১ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক কিস্তির ১৫ শতাংশ ঋণ পরিশোধে নিয়মিত থাকার সুযোগ দেয়। এ ছাড়ের কারণে একজন গ্রাহকের যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করার কথা তা করেননি। ফলে ধারাবাহিকভাবে খেলাপি ঋণ বাড়ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেক হয়েছে। এখন ব্যাংকগুলোকে ঋণ আদায়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। পাশাপাশি খেলাপি কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককেও তৎপর হতে হবে। যাচাই-বাছাই না করে ঋণ দেওয়ায়সহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার ফলে খেলাপি বাড়ছে। আবার নানা অজুহাতে ঋণ পরিশোধ না করার প্রবণতা বেড়েছে গ্রহীতাদের মধ্যে।
অন্য খাতগুলোর তুলনায় অনেক বেশি ভালো আছে। এতেই আমরা সন্তুষ্ট।
অন্য খাতগুলোর সাথে তুলনা করলে দেখা যাবে ব্যাংক খাতের ডিভিডেন্ড অনেক ভালো। যেমন একটি ব্যাংকের লেনদেন দশ টাকার আশেপাশে চলছে অথচ ঐ ব্যাংক দশ পার্সেন্টের উপরে ডিভিডেন্ড দেয়।
পুরো পৃথিবীটা খেলাপি ঋণে জর্জরিত। সেখানে এই সামান্য ঋণে এত মাথা ব্যাথা কেন। হিসাব মিলিয়ে দেখুন ব্যাংকে টাকা রেখে বছর শেষে যে রিটার্ন পাওয়া যায়,তার চেয়ে অনেক বেশি রিটার্ন পাওয়া যায় পুরো বছর ব্যাংকের শেয়ার ধরে রেখে। অবশ্যই ডিভিডেন্ডের রেকর্ড ডেট পর্যন্ত রাখতে হবে। ব্যাংকের শেয়ারের দর হিসাবে ব্যাংকের শেয়ারের ডিভিডেন্ড খাইলে আপনি ঠকবেন না। সুযোগে সৎ ব্যাবহার করতে হয়।
Anonymous যারা ডিভিডেন্ড পায় তারাতো ব্যাংকের মালিক। কিন্তু ব্যাংকের আমানতকারীদের আমানতের হিসাব তো মালিকদেরকেই রাখতে হবে।