আজ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৭ মার্চ ২০২২, সোমবার |

kidarkar

ভোজ্যতেল আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি এফবিসিসিআই সভাপতির

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী তিন মাসের জন্য ভোজ্যতেল আমদানিতে ভাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন অব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। সোমবার (৭ মার্চ) এফবিসিসিআই আইকন, ৬০, মতিঝিলে ‘ভোজ্যতেলের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। সভায় এফবিসিসিআই’র পরিচালনা বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ভোজ্যতেল আমাদের নির্ধারিত মূল্যটি আমাদের প্রতিপালন করতে হবে। কেউ দাম বাড়িয়ে দিবেন না, ষ্টক করবেন না। কেউ অসাধু উপায় নিলে আমরা তাদের পক্ষে নেই। আজ প্যাকেটজাত তেলের চেয়ে বাজারে খোলাতেলে দাম বাড়বে এটা মানা যায় না। বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ছে এই অজুহাতে আজ সবাই ষ্টক করছে খোলা তেল। অনেকে বোতলের তেল খোলা হিসেবে বিক্রি করছে। কিন্তু বিশ্ববাজারের আজ যে দাম বাড়ছে সে তেলতো দু’তিন মাস পরে দেশে আসবে তাহলে কেনো আজ বাড়বে। আজকের দাম যেটা হবে সেই দামেই আপনারা বিক্রি করবেন।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মিল মালিকদের বাজারে তেল সরবরাহ ঠিক রাখতে হবে। বাজারে তেল সরবরাহ ঠিক থাকতে হবে। আমরা জানি দেশে যে পরিমাণ তেল আছে সেটা দিয়ে রমজান কাভার করবে। তবে বিশ্ববাজারে তেলের দাম যেহেতু বেড়েছে আগামীতে সরবরাহ রাখতে অন্তত তিন মাস তেল আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানাই। প্রতিবেশি দেশ ভারতে যেটা তিনবার ভ্যাট-ট্যাক্স সমন্বয় করা হয়েছে।

সভায় মেঘনা গ্রুপের প্রতিনিধি তসলিম শাহরিয়ার বলেন, গত বছর আমাদের ১১৮০ ডলারে তেল আমদানি করা হয়েছে এক বছর পর আজ ১৯০০ ডলার হয়েছে বিশ্ববাজারে। একমাস আগে তেল এসেছে ১৪৫০ ডলারে আজ বিশ্ববাজারে দাম চড়া। দেশের পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে আমরা চার মিল এক দিকে আর পুরো দেশ একদিকে হয়েছে। অথচ ভারতে বাংলাদেশি ১৭৭ টাকায় তেল বিক্রি হচ্ছে, সেখানে আমদানিতে ডিউটি ফি কম আমাদের বেশি।

সিটি গ্রুপের বিশ্বজিৎ সেন বলেন, কোন কৃতিম সংকট নেই। আপনারা দেখে আসুন দিনে ২৫০০ টন ডেলিভারি করছি মিল থেকে। বাজারে কোন ক্রাইসিস থাকার কথা না, তবুও বাজারে ক্রাইসিস করছে। এখানে বাজার মনিটরিং জোরদার করা দরকার। পাশাপাশি আগামী কোরবানি পর্যন্ত ভ্যাট কমানোর দাবি জানান তিনি।

এস আলম গ্রুপের কাজী সালাউদ্দিন বলেন, সরকারে কাছে আমরা দামের প্রস্তাব দিয়েছি এ কারনে হয়তো সংকট তৈরি করা হচ্ছে। এখানে এনবিআর কিছু সমন্বয় করলে আর বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না। এনবিআর সমন্বয় করলে বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না।

টিকে গ্রুপের শফিউল আলম বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় থাকা দরকার। মূল্য নির্ধারণে বিষয়ে ফরমেট আছে যেটা নভেম্বরের ফরমেট, অথচ আজ দাম অনেক বেড়েছে। আমরা আমদানি করেছি, গতকাল আমরা ১৮৭০ ডলারে এলসি করেছি, মন্ত্রনালয় বলেছে এলসি করতে আমরা করছি বসে নেই। আগামীতেও চ্যালেঞ্জ আছে নূন্যতম দামে দুই/তিন মাসের জন্য সরকর রিলিফ দিলে এমন সংকট কোথাও হবে না।

পাইকারি তেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মওলা বলেন, তেল নিয়ে মনে হচ্ছে কেয়ামত হয়ে যাচ্ছে। ১৪৯ টাকা পাইকারি বিক্রি হয়েছে। অনেক মিল সরবরাহ করছে না বা দেরি করছে। সরবরাহ ঠিক রাখলে বাজার নিয়ন্ত্রণ থাকবে। মিল ঠিকমতো সরবরাহ করলে বাজার রিলাক্স থাকে। আমরা অসৎ থাকবো না, মাল ছাড়লে বিক্রি করবো।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রতি ১৫দিন পর পর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবি জানাই। এতে প্রয়োজনে বাড়বে বা কমবে। আপনারা সাপলাই ঠিক রাখলে সমস্যার কথা না। দাম বাড়ার সম্ভাবনা থাকে মিল থেকে সরবরাহ হবে না তাহলেতো আটকিয়ে রাখার প্রবনতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

ব্যবসায়ীদের কথা শুনে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিমউদ্দিন বলেন, মনে হচ্ছে সংকট ভয়াবহ না কিন্তু কেনো ভয়াবহ হবে। আজকের কথা কিন্তু রেকর্ড হচ্ছে, সবাই যে দামে এগ্রি করেছেন সে দামে বিক্রি করবেন। আমরা প্রয়োজনে বাজার মনিটরিং সেল করবো,খোঁজ রাখবো সরকারকে জানাবো সব। আবার খোলা তেলে কেন বোতলের চেয়ে বেশি হবে। আমি খোলার পক্ষে না সব প্যাকেটজাত হোক। ছোট পাঁচ টাকার শ্যাম্পু বিক্রি হলে ১০০/২০০ গ্রামের তেল প্যাকও হতে পারে। তেলের ষ্টক আছে তাতে রোজা কাভার করবে। আজকের দামে আজ, আগামীর দামে আগামীতে বিক্রি করুন।

তিনি বলেন, খোলা তেল বিশ্বে কোথাও নেই, এটা বন্ধ করার দাবি জানাই। তেলের কোথাও সংকট নেই, তাহলে কেন দাম বাড়বে। এই মুহুর্তে ক্যাপাসিটি অনুযায়ী মাল আছে তাহলো কেন দাম বাড়বে। বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে আজই আমাদের এখানে কেনো বাড়বে। বিশ্ববাজারে আজ দাম বাড়লো আমাদের এখানে বেড়ে যায় সে কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এসলি মাল আসতে তিন মাস সময় লাগবে। প্যাকেট তেল কেনো খুচরা বিক্রি করতে হবে, আমরা চোর-বাটপারের পক্ষে না। আমি কোন অসাধু ব্যবসায়ীর পক্ষ নিবো না।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.