সরকারের মালিকানা বাড়াতে এটলাসকে সম্মতি

শেয়ারবাজার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এটলাস বাংলাদেশ চলমান লোকসান কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণ ও পণ্যের বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে ‘বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী টেকসই সিলিং ফ্যান প্ল্যান্ট স্থাপন ও ফ্যান উৎপাদন’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নিয়েছে । এ নতুন প্রকল্পের জন্য সরকারের কাছ থেকে ইকুইটি হিসেবে বরাদ্দ পাবে ১১ কোটি ৪৭ লাখ ৬৭ হাজার টাকা (১১৪৭.৬৭ লাখ টাকা)। তাই ওই ইকুইটির অর্থ শেয়ার মূলধনে রূপান্তর করে (পরিশোধিত মূলধন) সরকারের শেয়ার মালিকানা বৃদ্ধি করতে চায় এটলাস বাংলাদেশ।
এরই ধরাবাহিকতায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে মতামত চেয়েছে কোম্পানিটি। সার্বিক দিক বিবেচনা করে ইকুইটি ফান্ডের বিপরীতে শেয়ার ইস্যু করে সরকারের মালিকানা বাড়ানোর বিষয়ে কোম্পানিটিকে সম্মতি জানিয়েছে বিএসইসি।
সম্প্রতি এটলাস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত একটি পাঠানো হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
বিএসইসি চিঠিতে উল্লেখ করেছে, এটলাস বাংলাদেশকে প্রদত্ত ১১৪৭.৬৭ লাখ টাকার ইকুইটি ফান্ডের বিপরীতে কমিশনের অনুমোদনক্রমে সরকারের অনুকূলে শেয়ার ইস্যু করতে পারবে। ফলে কোম্পানিটিতে সরকারের বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডিং ৫১ শতাংশ হতে বৃদ্ধি পেয়ে ৬৩.৬১ শতাংশে উন্নীত হবে। তবে সরকার ও স্পন্সরের বিদ্যমান অংশ অর্থাৎ ৫১ শতাংশ- এ শেয়ারধারন স্থিতি রাখার জন্য বিনিয়োগকারীদের নিকট বাজার মূল্যে বিধি মোতাবেক স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেডিং প্লাটফর্মের মাধ্যমে শেয়ার হস্তান্তর করতে হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে, এটলাস বাংলাদেশ কর্তৃক পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের নিমিত্তে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ইস্যু অব ক্যাপিটাল) রুলস, ২০০১ এবং শেয়ার হস্তান্তর সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিধি-বিধান অনুযায়ী কমিশনের অনুমোদনের নিমিত্তে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হল।
এদিকে ইকুইটি ফান্ডের বিপরীতে শেয়ার ইস্যুর বিষয়ে এটলাস বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌঃ আব্দুল মালেক মোড়ল চিঠিতে উল্লেখ করেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রনাধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের অধীন এটলাস বাংলাদেশ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জেরর তালিকাভূক্ত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক সরকার ও ৪৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক জনসাধারণ। কোম্পানিটির চলমান লোকসান কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণ ও পণ্যের বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে ‘বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী টেকসই সিলিং ফ্যান প্ল্যান্ট স্থাপন ও ফ্যান উৎপাদন’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ওই প্রকল্পটি কিছু মত সাপেক্ষে বিগত ২০১৯ সালের ১ আগস্ট পরিকল্পনা কমিশনের নীতিগত অনুমোদন পাওয়া গেছে। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত মোট ব্যয় ৩৬১৯.১৮ লাখ (৩৬ কোটি ১৯ লাখ ১৮ হাজার) টাকার মধ্যে এটলাস বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থ ৭৫০ লাখ (৭ কোটি ৫০ লাখ) টাকা। আর উন্নয়ন প্রকল্পে সরকারি তহবিল বা জিওবি ফান্ড হতে ২৮৬৯.১৮ লাখ (২৮ কোটি ৬৯ লাখ ১৮ হাজার) টাকা ব্যয় করা হবে বলে ধরা হয়েছে।
চিঠিতে আরো উল্রেখ করা হয়, ওই জিওবি ফান্ডের ২৮৬৯.১৮ লাখ টাকার মধ্যে ঋণের পরিমাণ হবে ১৭২১.৫১ লাখ (১৭ কোটি ২১ লাখ ৫১ হাজার) টাকা এবং ইকুইটির পরিমাণ হবে ১১৪৭.৬৭ লাখ (১১ কোটি ৪৭ লাখ ৬৭ হাজার) টাকা। ঋণ হিসেবে প্রাপ্য ১৭২১.৫১ লাখ টাকা ৫ শতাংশ হার সুদে ২০ বছরে বার্ষিক কিস্তিতে পরিশোধ করা হবে। আর ইকুইটি হিসেবে প্রাপ্য ১১৪৭.৬৭ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে না। এমতাবস্থায়, পরিকল্পনা কমিশনের শর্তাবলী পূরণ করে প্রকল্পের ডিপিপি শিল্প মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে, কিন্তু শিল্প মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়ার পূর্বে ইকুইটি হিসেবে প্রাপ্য ১১৪৭.৬৭ লাখ টাকা শেয়ার মূলধনে রূপান্তর করে সরকারি মালিকানা ৫১ শতাংশ হতে উন্নীত করা যাবে কিনা সে বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে। তাই ইকুইটি হিসেবে প্রাপ্য ১১৪৭.৬৭ লাখ টাকা শেয়ার মূলধনে রূপান্তর করে সরকারি শেয়ারের মালিকানা ৫১ শতাংশ হতে উন্নীত করা যাবে কিনা সে বিষয়ে আপনাদের মতামত প্রদান করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এটলাস বাংলাদেশের কোম্পানি সচিব সঞ্জয় কুমার দত্ত বলেন, আমরা একটি প্রোজেক্ট দাঁড় করাতে চেয়েছিলাম। সে প্রোজেক্টে সরকারি ইক্যুইটি বৃদ্ধি করা যায় কি-না সে বিষয়ে কমিশনের কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, ইক্যুইটি বৃদ্ধি করা যাবে।
অবশ্যই ভালো হবে।কেননা কোম্পানী সমৃদ্ধশালী হলেও বিনিয়োগকারী যেমন লাভবান হবে তেমনিভাবে কোম্পনী অনেক সমৃদ্ধ পাবে এবং সুনামের সাথে ব্যবসা বৃদ্ধি হবে।