বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো ব্যাংক এখনো ফেল করেনি: অর্থ সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ব্যাংক ফেল (দেউলিয়া) করছে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো ব্যাংক এখনো ফেল করেনি। আগামী দিনেও এমনটা হবে না বলে মনে করি।’
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সোনালী ব্যাংকের সুবর্ণজয়ন্তী ও বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ৫০ বছরপূর্তি ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এসব কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেটা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে নেই। সেটা হলো- দেশের কোনো ব্যাংক এখনো ফেল করেনি। যখনই কোনো ব্যাংকে সমস্যা দেখা দিয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে সরকার সেখানে উদ্যোগী ভূমিকা রেখেছে। তাতে সমস্যার সমাধান হয়েছে। এটা আমরা বিশ্বকে গর্বের সঙ্গে বলতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘সোনালী ব্যাংক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিনা কমিশনে প্রায় এক লাখ কোটি টাকায় এলসি খোলে। ফলে সরকারের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়। এভাবে সোনালী ব্যাংক রাষ্ট্রের গুরুত্ববহ সহযোগী হিসেবে কাজ করছে।’
এসময় সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কয়েকটি পরামর্শ দেন সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেন, ‘নন-পারফরমিং লোন আরও কমাতে হবে। সামনের দিনগুলোতে ভালো অবস্থান ধরে রাখতে হলে অটোমেশনে যেতে হবে। অনলাইন ব্যাংকিং হলেও অটোমেশনে তেমনটা নেই, এটা করতে হবে। যাতে গ্রাহক বাড়ি বসে সেবা নিতে পারেন। নতুন নতুন সার্ভিস নিয়ে আসতে হবে। এজন্য রিসার্চ ইনস্টিটিউট করতে হবে। পাশাপাশি সব কর্মচারী-কর্মকর্তাদের আরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে, তাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে।
সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। তবে তাদের যে পরিমাণে প্রচারণা দেখা যায় সরকারি ব্যাংকগুলোতে তা দেখা যায় না। যদিও সরকারি ব্যাংকগুলোর অবদান অনেক বেশি। তাদের কাজগুলোর প্রচারণা বাড়লে কাজের গতি আরও বাড়বে।
তিনি বলেন, প্রান্তিকে ব্যাংকিং পৌঁছাতে সরকারি ব্যাংকগুলোর সবচেয়ে বেশি কাজ করছে। বর্তমানে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো কাজ করলেও মনে রাখতে হবে দেশে বেসরকারি ব্যাংক এসেছে ১৯৮২ সালে।
সোনালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও আতাউর রহমান প্রধান বলেন, কোভিড কালীন প্যাকেজ গুলো আমরা সবার আগে পরিশোধ করেছি। আমরা সরকারের নির্দেশে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে বিনিয়োগ করছি। এছাড়া সোনালী ব্যাংক আইটির দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। গ্রাহক এখন সোনালী ব্যাংক থেকে অনেক ধরনের অনলাইন সুবিধা পাচ্ছেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, অর্থ মন্ত্রনালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর।