জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি- প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

শেয়ারবাজার ডেস্ক:মহান স্বাধীনতা দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ শনিবার ভোর ৫টা ৫৬ মিনিটে দিনের প্রথম প্রহরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। প্রথমে রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রপতির পরপরই জাতির সূর্যসন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর পর সেখানে এক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায় এবং বিউগলে করুণ সুর বেজে উঠে। পরে দলীয় প্রধান হিসেবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা।
এদিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইতে সই করেন রাষ্ট্রপতি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরাও স্মৃতিসৌধে ছিলেন।
ভোরে বীর শহীদদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
শুক্রবার এক বার্তায় জাতীয় স্মৃতিসৌধ আমন্ত্রিত অতিথিদের ভোর ৫টা ২০ মিনিটের পরিবর্তে ৭টা ১৫ মিনিটে আসার অনুরোধ জানায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে জাতির শ্রেষ্ঠসন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে ভোর থেকে স্মৃতিসৌধে ভিড় করেন হাজারো মানুষ।
এদিকে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করেছে সশস্ত্র বাহিনী।
সাভার থেকে ফিরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গণভবনে সকাল ৮টায় ‘বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ২৬ মার্চ ১৯৭১ তারিখে প্রদত্ত স্বাধীনতার ঘোষণা গ্রহণ ও প্রচারকারী- সলিমপুর ওয়্যারলেস স্টেশন’-এর ওপর প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও সীল মোহরও অবমুক্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী।
গত দুই বছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সীমিত আয়োজনেই বাংলাদেশ উদযাপন করেছে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। সংক্রমণ কমে আসায় এবার জাতি স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছে অনেকটা মুক্ত পরিবেশে।
২৬ মার্চ, ১৯৭১। আশ্চর্য এক রক্তলাল সূর্যোদয় দেখেছিল এইদিন এ দেশের জনগণ। এমন রক্তাভ ভোর বোধকরি আর কখনোই আসেনি এ দেশের মানুষের জীবনে। বোধকরি আসবেও না। কেননা সেদিনের সেই সূর্যোদয় ছিল নতুন একটি রাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের।
পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ২৫ মার্চের কালরাতে জেনোসাইড শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। পরে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার এ ঘোষণা ২৬ ও ২৭ মার্চে চট্টগ্রামের স্থানীয় বেতার কেন্দ্র থেকেও পাঠ করা হয়। চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান ২৬ মার্চ ২টা ১০ মিনিটে এবং ২টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। হ্যান্ডবিল আকারে এ ঘোষণা বাংলা ও ইংরেজিতে ছাপিয়ে চট্টগ্রামে বিলিও করা হয়।
মানুষ শহর ছাড়তে শুরু করে। অনেকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে। অনেকে সংঘবদ্ধ হতে, যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে। এভাবেই শুরু হয়ে যায় সর্বাত্মক মুক্তির যুদ্ধ।